দুলাল দে: এই মুহূর্তে এটাই বোধহয় লাল-হলুদ সমর্থকদের জন্য সবচেয়ে বড় সুসংবাদ। পরের মরশুমেও শ্রী সিমেন্ট যদি ইনভেস্টর হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে অন্য কোনও ক্লাবে যাওয়ার কোনও উপায়ই নেই ইতিমধ্যেই ভারতীয় ফুটবলে সাড়া জাগানো স্ট্রাইকার ব্রাইটের (Bright Enobakhare)। ইতিমধ্যেই তাঁর সঙ্গে ‘তিন বছরের’ চুক্তি করে ফেলেছে শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন। তবে চুক্তির মধ্যে সামান্য একটা শর্ত আছে। ব্রাইটের বয়স মাত্র ২২। তাই বিদেশের বিভিন্ন ক্লাব থেকে তাঁর কাছে প্রস্তাব আসবে এটাই স্বাভাবিক। উন্নত কোনও ক্লাবে খেলার প্রস্তাব এলে তাঁকে ছাড়তে বাধ্য হবে এসসি ইস্টবেঙ্গল। আর ভারতে থাকলে, টানা তিন বছর লাল-হলুদ জার্সিতেই খেলতে হবে তাঁকে। ক্লাবের সঙ্গে যেহেতু চুক্তিপত্রে সই সংক্রান্ত সমস্যা এখনও মেটেনি, আপাতত তাই ব্রাইটের প্রথম বছরের চুক্তিপত্র ফেডারেশনে জমা দিয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। সমস্যা মিটলে বাকি দু’বছরের চুক্তিও জমা দিয়ে দেওয়া হবে।
রবি ফাউলার, মাঘোমার সঙ্গে যখন সই নিয়ে কথা শুরু করেছিলেন এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal) কর্তারা, তখন ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিপত্রে সই নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। ফলে ফাউলার, মাঘোমা দু’জনের সঙ্গেই দু’বছরের চুক্তির কপি ফেডারেশনে জমা দিয়ে দেয় শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এরপরেই শুরু হয় চুক্তিপত্রে সই বিতর্ক। কোম্পানির নতুন বোর্ড গঠনও এখনও সম্পন্ন হয়নি। ফলে ভবিষ্যতের সমস্যার কথা ভেবে দু’বছরের চুক্তি হলেও পিলকিংটন, ড্যানি ফক্সদের শুধুমাত্র এই মরশুমের চুক্তিপত্রই ফেডারেশনে জমা করেছে শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন। কারণ, ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিপত্রে সই নিয়ে কোনও সমস্যা তৈরি হলে ফুটবলারদের দীর্ঘ চুক্তির জন্য সমস্যায় পড়তে পারে কোম্পানি। সেক্ষেত্রে দীর্ঘ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও ফুটবলার ছেড়ে দিলে গুণতে হবে না আর্থিক জরিমানা। ব্রাইটের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। যে মুহূর্তে ক্লাব প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকারিভাবে বোর্ড গঠন সম্পন্ন হয়ে যাবে, তিন বছরের চুক্তিপত্র ফেডারেশনে জমা দিয়ে দেওয়া হবে।
[আরও পড়ুন: দু’ম্যাচে নজরকাড়া পারফরম্যান্স, মরশুমের মাঝেই ব্রাইটকে প্রস্তাব দিল এটিকে মোহনবাগান]
নাইজিরিয় স্ট্রাইকারকে নিয়ে যখন অনেকে আশা করছেন, মরশুম শেষে টানাটানি হতে পারে, তখন মুচকি হাসছেন লাল-হলুদ কর্তারা। ফাউলারের (Robbie Fowler) সহায়তায় ব্রাইটকে আনার সময় তিন বছরের জন্য চুক্তি করে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু ফেডারেশনের কাছে আপাতত এই মরশুমের চুক্তিপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাই অনেকে ভাবছেন, মরশুম শেষে ব্রাইট অন্য কোথাও বেশি টাকার প্রস্তাব পেলে যেতে পারেন। কিন্তু এসসি ইস্টবেঙ্গল কর্তারা এই ধারণায় মুচকি হেসে বলছেন, ব্রাইট নিজেও জানেন, তিন বছরের চুক্তিপত্রে সই করে বসে আছেন। তাই এসসি ইস্টবেঙ্গল মরশুম শেষে তাঁকে না ছাড়লে অন্য কোথাও যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। একমাত্র বিদেশের বড় কোনও ক্লাবে যাওয়া ছাড়া। তাহলে ব্রাইটের সঙ্গে লাল-হলুদের তিন বছরের এই চু্ক্তিপত্র প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না কেন? এর একটাই কারণ, ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিপত্রে সই করা নিয়ে বিতর্ক। কারণ, ফুটবলের লাইসেন্স এসে গেলেও চুক্তিপত্রে দু’তরফের সই হয়ে এখনও নতুন বোর্ড গঠন হয়নি। ফলে এই মুহূর্তে ব্রাইট, পিলংকিংটনদের দীর্ঘ চুক্তিপত্র প্রকাশ্যে এনে নিজেদের সমস্যা আর বাড়াতে চাইছেন না শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের কর্তারা। তাঁরা এই মুহূর্তে তাকিয়ে আছেন, মোটামুটি একটা ভাল ফল করে এবারের আইএসএল (ISL 2020) শেষ করতে। তারপর ক্লাবের সঙ্গে আলোচনায় বসে ঠিক করবেন, আগামী দিনে একসঙ্গে পথ চলার রূপরেখা। যতক্ষণ না দু’পক্ষ আলোচনায় বসে পুরো ব্যাপারটা ফয়সালা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনও ফুটবলারের সঙ্গেই দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তির কাগজ ফেডারেশনে জমা দেওয়া হবে না। তবে একই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে বসে আছেন, যতক্ষণ না এসসি ইস্টবেঙ্গল চাইবে, ব্রাইট পরের মরশুমে ভারতের অন্য কোনও ক্লাবে খেলতে পারবেন না।