সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়ংকর লড়াই মধ্যপ্রাচ্যে। হেজবোল্লাকে(Hezbollah) পুরোপুরি ধ্বংস করতে লেবাননে ঢুকে অভিযান শুরু করেছে ইজরায়েল(Israel)। বাদ যাচ্ছে না ঘন বসতিপূর্ণ এলাকাগুলোও। গত ১৮ বছরে এই প্রথমবার মধ্য বেইরুটে বোমাবর্ষণ করল ইজরায়েলি ফৌজ। হামলায় সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬ জন। এমনটাই জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লাকে খতম করতে লেবাননে আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। কিন্তু গত কয়েকদিন সেই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়েছে তেল আভিভ। সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। হেজবোল্লার সদস্যদের পাশাপাশি প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। নিহত হয়েছেন হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লা। ধোঁয়ায় ঢেকেছে লেবাননের রাজধানী বেইরুটের আকাশও। এতদিন সেখানে হামলা চালালেও মধ্য অংশে বোমা ছোড়েনি ইজরায়েলি সেনা। ২০০৬ সালের পর এই প্রথমবার বুধবার সেখানে আঘাত হেনেছে তারা। বেইরুটের এই অঞ্চলে প্রচুর মানুষের বাস।
এছাড়া গোটা লেবানন জুড়ে এদিন ইজরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৪৬ জন। আহত বহু। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন আমেরিকার এক নাগরিকও। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মার্কিন বিদেশ দপ্তর বিবৃতি দিয়ে জানায়, 'ইজরায়েলি হামলায় লেবাননে প্রাণ গিয়েছে আমাদের এক নাগরিকের। তিনি আমেরিকার মিশিগান প্রদেশের দিয়ারবোর্নের বাসিন্দা ছিলেন।' এদিকে আইডিএফ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হেজবোল্লার সঙ্গে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন ৮ সৈনিক। ফলে ইহুদি দেশটিকে পালটা মার দিচ্ছে শিয়া জঙ্গিগোষ্ঠীটিও। এই সংঘর্ষে ইতিমধ্যে লেবাননে মৃতের সংখ্যা হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন ১০ লক্ষ মানুষ।
সমর বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য বরাবরই বারুদের স্তূপে দাঁড়িয়ে। যাতে বিস্ফোরণ ঘটায় গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের হামলা। যার বদলা নিতে গাজায় যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। প্রায় এক বছর হতে চলল গাজায় 'ধবংসযজ্ঞ' চালাচ্ছে তেল আভিভ। এবার সংঘাত শুরু হয়েছে লেবাননে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইহুদি দেশটিতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে হেজবোল্লা। তাদের যুক্তি ছিল গাজায় হামাসকে সমর্থন জানিয়েই এই আক্রমণ শানানো হচ্ছে। পাশাপাশি লোহিত সাগর উত্তপ্ত করে রেখেছে ইরানের মদতপুষ্ট ইয়েমেনের হাউথিরা। কয়েক মাস আগেই তারা তেল আভিভের মার্কিন দূতাবাসের সামনে ড্রোন হামলা চালায়। সেখানেও ঘটে প্রাণহানি। আর এদের মাথায় রয়েছে ইরান। ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এবার ইজরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়েছে তেহরান। ফলে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল গাজায়, তা এবার লেবানন হয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে।