সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৪০ জন পণবন্দিকে হামাস মুক্তি দিলে অন্তত ৮০০ জন প্যালেস্তিনীয়কে ছেড়ে দেবে ইজরায়েল। কাতারে হওয়া মধ্যস্থতা বৈঠকের পর এই কথা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ। ছয়মাস পেরিয়ে গিয়েছে হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধের। এখনও প্যালেস্তিনীয় জঙ্গিদের হাতে বন্দি রয়েছেন প্রায় শতাধিক ইজরায়েলি। প্রিয়জনদের দ্রুত মুক্তি নিয়ে নেতানিয়াহুর প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াচ্ছে পণবন্দিদের পরিবার। তাঁরা সকলেই চান রমজানে প্রিয়জনেরা বাড়ি ফিরে আসুন।
টাইমস অফ ইজরায়েল সূত্রে খবর, কাতারের বৈঠকে ৮০০ জন জেলবন্দি প্যালেস্তিনীয়দের বিনিময়ে ৪০ জন পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে ইজরায়েলের তরফে একটি প্রস্তাব রাখা হয়। এই কারাবন্দিদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত। তাঁরা খুনের দায়ে অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, এই চুক্তির বিষয়ে ইজরায়েলের তরফে হামাসকে লিখিত নথিও পাঠানো হয়েছে। তবে ইজরায়েলের সম্মতি সত্ত্বেও এখনও গাজায় হামাসের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ইয়াহিয়া সিনওয়ারের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
গত সপ্তাহের শেষে প্যালেস্তিনীয় কারাবন্দিদের বিনিময়ে পণবন্দিদের মুক্তি সংক্রান্ত চুক্তি নিয়ে বৈঠক হয় কাতারে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া, সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আল-থানি এবং মিশরের ইন্টেলিজেন্স তথা গোয়েন্দা-মন্ত্রী আব্বাস কামাল। অন্যদিকে, হামাসের তরফে সেখানে উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ নেতৃত্বের অন্যতম ইসমাইল হানিয়া। কাতারের দোহায় হওয়া এই বৈঠকের দিন দুয়েক আগেই মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এই বৈঠক তথা চুক্তি ফলপ্রসূ হওয়া নিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন। কায়রোয় এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের কথা চালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেয়। তবে স্বস্তির বিষয় এটাই যে, ধীরে ধীরে মতানৈক্য মিটছে এবং আমরা সমাধানসূত্র খুঁজতে দোহায় বৈঠক হওয়ার ব্যাপারে আশা রাখছি।’’
গত ছয় মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে প্যালেস্তিনীয়দের মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। গাজায় সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল নিন্দার মুখে ইজরায়েল। একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে গাজায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব পেশ হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকার ভেটো প্রয়োগে তা আটকে গিয়েছিল। তবে এই ছবিটা বদলে গেল সোমবার। পবিত্র রমজান মাসে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চাই, এই দাবিতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনে অস্থায়ী সদস্য আলজেরিয়া। প্রস্তাবের সমর্থনে ভোট দেয় মোট ১৪ সদস্য দেশ। ভোটদানে বিরত থাকে আমেরিকা। তবে শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবের একটি শব্দে আপত্তি জানায় রাশিয়া, তাদের দাবি, পাকাপাকিভাবে যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করতে হবে প্রস্তাবে। গাজায় সেনা অভিযান একেবারে থামাতে হবে ইজরায়েলকে। রাশিয়া বেঁকে বসায় আবার ভোটাভুটি শুরু হয়। এখনও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাশ হয়নি নিরাপত্তা পরিষদে।