shono
Advertisement

ব্রাত্যজন

দেশের নীতি-নির্ধারকরা কী করছেন?
Posted: 06:38 PM Aug 25, 2023Updated: 06:38 PM Aug 25, 2023

উন্নত দেশে বিজ্ঞানীরা যা বেতন পান, তার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ পান ‘ইসরো’-র বিজ্ঞানীরা। দেশের নীতি-নির্ধারকরা কী করছেন?

Advertisement

 

বশেষে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে ‘বিক্রম ল্যান্ডার’। সফল হয়েছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার ‘চন্দ্রযান ৩’ অভিযান। গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম তোলপাড় এই অসাধারণ অ্যাচিভমেন্টে।

নানা দিক থেকে আলো ফেলে দেখার চেষ্টা চলছে মিশনের খুঁটিনাটি। যেমন, আলোচনায় বারবার উঠে আসছে, কত স্বল্প খরচে এই অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। এই অভিযানে ইসরো খরচ করেছে প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা। যা সাম্প্রতিকে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আদিপুরুষ’-এর বাজেটের চেয়ে কম! শুধু তা-ই নয়, চাঁদের দক্ষিণ মেরু অভিযানে সদ্য ব্যর্থ ‘লুনা ২৫’ প্রকল্পে রাশিয়া নাকি ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছিল। উল্লেখ্য, ভারতের ‘মঙ্গল অভিযান’-এও ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হয়, যা হলিউডের ‘গ্র্যাভিটি’ সিনেমার অর্ধেক বাজেট। মঙ্গল গ্রহে আমেরিকান ম্যাভেন অরবিটার পাঠাতে ‘নাসা’ ব্যয় করেছিল প্রায় ছ’হাজার কোটি টাকা!

তবুও কীভাবে এল এমন সাফল্য? ‘ইসরো’-র প্রাক্তন অধিকর্তা জি. মাধবন নায়ার প্রশংসার ছলে এক নিদারুণ সত্য সামনে এনেছেন। তাঁর মতে, ইসরোর বিজ্ঞানীরা যেহেতু কম বেতন পান, স্বল্প খরচে সংসার চালাতে হয়, তাই স্বল্প বাজেটে অভিযান সফল করার কৌশলও তাঁরা আয়ত্ত করে ফেলেছেন। তাঁদের কাছে অর্থ নয়, কাজের প্রতি আবেগ সবচেয়ে বড়।

বাস্তবে, উন্নত দেশ তো বটেই, অন্য বহু দেশেও বিজ্ঞানীরা যা বেতন পান, তার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কম পান ইসরো-র বিজ্ঞানীরা। কারও মতে, সেটা এক-তৃতীয়াংশ। অঙ্কটা যাই হোক, তা বিদেশের বেতন ও সুযোগ-সুবিধার থেকে অনেকটাই কম।

[আরও পড়ুন: মার্কিন মসনদে ফিরছেন ট্রাম্প! একনায়কতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন দেখবে আমেরিকা?]

তা সত্ত্বেও বহু মেধাবী বিজ্ঞানী ইসরোকেই বেছে নিচ্ছেন, সেজন্য কোনও সাধুবাদ-ই যথেষ্ট নয়। প্রশ্ন যাঁরা দেশের নীতি-নির্ধারক, তাঁরা কী করছেন? ‘ইসরো’-র সাফল্যের ‘ক্ষীর’ খেতে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমে পড়েছেন শাসক ও বিরোধী রাজনীতির কারবারিরা। যেন তাঁদের ‘প্রেরণা’ ছাড়া এই অভিযান সাফল্যের মুখই দেখতে পারত না! কিন্তু এ-কথা কি একবারও বলা হবে না এই সুবাদে যে, দেশের বিভিন্ন বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্র ক্রমশই সংকুচিত হয়ে পড়ছে? ইসরো যদি অভিযানের ক্ষেত্রে বাড়তি বরাদ্দ দাবি করত, তাহলে কি আমলাতান্ত্রিক লাল ফিতের ফঁাস এই প্রকল্পকেই বিশ বাঁও জলে ফেলে দিত? এমন ভাবনা খুব অমূলকও নয়।

‘মানুষের ভোটে’ জিতে এমনকী, ফৌজদারি অপরাধীরাও বিভিন্ন আইনসভা আলো করে রয়েছে। জনগণের করের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে তাঁদের বেতন-ভাতা-সহ অন্য সুবিধা দিতে। অন‌্যদিকে মেধাবী বিজ্ঞানীরা, যাঁরা একের পর এক কঠিন পরীক্ষায় সফল হয়ে, বহু ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে, এই জায়গায় পৌঁছেছেন, দেশকে গর্বিত করছেন, তাঁদের প্রাপ্তির ভাণ্ডারে লক্ষ্মীর কৃপা হবে না? বিজ্ঞানীদের সাফল্যের ছটায় ‘উজ্জ্বল’ রাজনীতিকদের বোধোদয় হোক।

[আরও পড়ুন: ভারতীয় বিচারব্যবস্থার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা কী?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement