শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: দিব্যি চলছিল সব। সন্ধ্যার দিকে কাজের চাপও কিছুটা কম। নিজের বাড়ির সামনেই ছিলেন। আচমকা ধোঁয়ার মতো কী যেন পাকিয়ে গেল! মিনিট তিনেক চোখ খুলতে পারেননি। তার পর চোখ খুলে দেখলেন বসত এলাকা যেন ধ্বংসস্তূপ। কানে ভেসে আসছে আর্ত চিৎকার। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বিপর্যয়ের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়লে শিউরে উঠছেন দক্ষিণ পুঁটিমারির বাসিন্দা কমল রায়।
তিনি বলেন, "বাড়ির সামনে কাজ করছিলাম। হঠাৎ মনে হল ধোঁয়ার মতো কিছু একটা পাকিয়ে এল। মনে হল যেন সব কিছু উড়িয়ে নিয়ে যাবে। চোখ খুলে রাখতে পারলাম না। বন্ধ করে দিয়েছি। তিন-সাড়ে তিন মিনিট পর চোখ খুললাম। দেখলাম কারও ঘরের চাল উড়ে গিয়েছে। জিনিসপত্র এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। কানে ভেসে আসছে চিৎকার, কান্নাকাটি। ভয়ে তখনও শরীরটা কাঁপছে।"
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভাঙল বাড়ি
ঝড়ের তাণ্ডবের পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। তবে এখনও সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা ভুলতে পারছেন না কমলবাবু। রাতে দুচোখের পাতা এক করতে পারেননি। খাবারও খাননি। যতবার মনে হচ্ছে, ততবারই যেন ভয়ে শরীর কেঁপে উঠছে তাঁর।
গ্যাস ওভেন-সহ অন্যান্য সামগ্রী ঝড়ে তছনছ
[আরও পড়ুন: ‘জমিদার’ কংগ্রেসকে সমর্থন নয়, আসন পেতে অশোক ঘোষের আবেগ হাতিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লকের!]
বিপর্যস্ত এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত। কারও বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। আবার কারও আলমারি। কারও সাজানো রান্নাঘর থেকে বাইরে উড়ে গিয়েছে গ্যাস ওভেন। কারও সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র হারিয়ে গিয়েছে। কেউ বা হারিয়ে ফেলেছেন গয়নাগাটি। প্রায় নিঃস্ব বিপর্যস্তরা। চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ সকলের। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরেজমিনে বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখে আশ্বাস দেন। প্রশাসন পাশে আছে বলেই জানান। তাও নিজের বসতবাড়ি, জিনিসপত্র হারানোর চিন্তা কী যায়? ঝড় শেষ হতেই কান্নার রোল এলাকায়। চোখের জল মুছতে মুছতে ধ্বংসস্তূপ থেকে শেষ সম্বলের খোঁজ শুরু করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।