সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দূর গ্রাম থেকে শহরে এসেছিল রোজগারের জন্য। সে ব্যবস্থা হয়েওছিল। জম্মুতে কারা বিভাগের ডিজির (DGP) বাড়িতে পরিচারকের কাজ করছিল। কিন্তু তারপরও জীবন যে এতটা বিষণ্ণ হয়ে যাবে এবং সেই বিষণ্ণতাবোধ (Mourn) থেকে খুনি হয়ে উঠবে, সেটা ভাবতেও পারেনি কেউ। অথচ জম্মুর ডিজি হেমন্ত কুমার লোহিয়াকে খুনি হিসেবে বছর তেইশের পরিচারককে চিহ্নিত করার পর একাধিক বিস্ফোরক তথ্য মিলছে। খুনির নাম ইয়াসির আহমেদ। উদ্ধার হয়েছে তার একটি ডায়েরি। সেখানে একটি পাতায় লেখা – ‘প্রিয় মৃত্যু, কাছে এসো, আমি অপেক্ষা করছি।’
সোমবার রাতে নিজের বাড়িতে পরিচারকের হাতেই খুন হন জম্মুর (Jammu and Kashmir) কারা বিভাগের ডিজি হেমন্ত কুমার লোহিয়া। তাঁর গলা কেটে খুন করা হয়। পিপলস অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট ফোর্স নামে লস্করের (Lashkar-e-Taiba) শাখা সংগঠন হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এরপরই তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে আসছে নানা তথ্য। আর সেসব তথ্য আপাতভাবে বিশ্লেষণ করলেই খুনির মানসিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যাচ্ছে। ডায়েরির একটি পাতায় লেখা ছত্রে ছত্রে জীবনের প্রতি তার বীতরাগ প্রকাশ পেয়েছে। কখনও সে লিখেছে মৃত্যুকে আহ্বান জানিয়েছেন। কখনও আবার লেখা – ‘এ জীবন আমি ঘৃণা করি। জীবন মানেই দুঃখ-কষ্ট, মৃত্যুই কেবল শান্তি দিতে পারে।’
[আরও পড়ুন: ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের সঙ্গে ভ্যানিলা আইসক্রিম! বিচিত্র রেসিপি চেখে দেখলেন তরুণী! তারপর… ]
বছর তেইশের ইয়াসির আহমেদ রামবান এলাকার হালাল গ্রামের বাসিন্দা। সেখান থেকেই সম্ভবত তার সঙ্গে জঙ্গিবাহিনীর (Terrorist) যোগাযোগ। এরপর জম্মুর ডিজিপির বাড়িতে পরিচারকের কাজ নেয়। তারপর থেকে হয়ত মানসিক টানাপোড়েনে ভুগছিল। হয়ত সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে সে খুন করেছে। ততদিনে আসলে সে বুঝে গিয়েছিল, সন্ত্রাসবাদী দলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়াটাই তার জীবনের এক বড় ভুল। তাই জীবন সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছিল। বিশেষত মৃত্যুকে সে আরও কাছে ডাকছিল। ডায়েরিতে সে লিখেছে – জীবনে ১ শতাংশ সুখ, ১০ শতাংশ ভালবাসা, শূন্য শতাংশ টেনশন, ৯০ শতাংশ মিথ্যা আর দুঃখ ৯৯ শতাংশ।
[আরও পড়ুন: অবৈধভাবে সমুদ্র পেরিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বিপত্তি, ডুবল রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার]
জম্মুর এডিজি মুকেশ সিং জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, লোহিয়ার পরিচারক ইয়াসেরই খুনি। তার আচরণ অত্যন্ত উগ্র ছিল এবং ডিপ্রেশনে ভুগত। মানসিক অবসাদ যে ছিল, তা বোঝাই যাচ্ছে তার ডায়েরি উদ্ধার হওয়ার পর। অথচ ১০ শতাংশ ভালবাসা নিয়েও কেন জীবনের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করল না ইয়াসির, তা নিশ্চিতভাবেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের গবেষণার বিষয় হতে পারে। তবে আপাতত ইয়াসির পলাতক। তাকে খুঁজছে পুলিশ।