ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়ালেও কেন একবারও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) তলব করছে না ইডি- সিবিআই? বারবার এই প্রশ্ন শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়। কখনও দাবি করা রয়েছে, তদন্ত ও জেলযাত্রার হাত থেকে বাঁচতেই নাকি বিজেপিতে গিয়েছেন তিনি। এবার বিস্ফোরক প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা বর্তমান তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরলেন, ঠিক কোন শর্তে বিজেপিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। জয়প্রকাশের দাবি, গোটা ঘটনার সাক্ষী তিনি নিজে।
সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল ঘোষ ও জয়প্রকাশ মজুমদার। শুরু থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তারিখ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা করেন শুভেন্দুর দলত্যাগ। জয়প্রকাশের দাবি, বিজেপির উদ্দেশ্যই ছিল তৃণমূলকে ভেঙে ফেলা। এই কাজে তাঁরা ব্যবহার করেছিল মুকুল রায়কে। দীর্ঘ আলোচনার পর ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর কলকাতার একটি পাঁচতারা হোটেলে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার নিজে, অরবিন্দ মেনন-সহ অন্যান্যরা। তার আগে দলবদল নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হলেও ওইদিনই দলবদল চূড়ান্ত হয়। জয়প্রকাশের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী বারবার প্রশ্ন করেছিলেন, “আমার ব্যাপারটা ঠিক হয়ে গিয়েছে তো?” কৈলাস বিজয়বর্গীয় আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, “অমিতজি আছেন তো। কোনও চিন্তা নেই।” হেসে ফেলন মুকুল রায়।
[আরও পড়ুন: ‘বিচার নেই, ৩০০ দিনের বেশি আটকে আছি’, হতাশ পার্থ]
জয়প্রকাশের দাবি, শুভেন্দু জেল যাত্রা আটকানোর জন্য যে কোনও পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত ছিলেন। আর সেই শর্তেই বিজেপিতে যোগ। তৃণমূল নেতার দাবি, ৫ নভেম্বর কলকাতার হোটেলে চুক্তিপত্রে সই হয়। ওইদিন ঠিক হয়ে যায়, ইডি-সিবিআই কেউ শুভেন্দুর কিছু করবে না। এরপর ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিত্ব ছাড়েন শুভেন্দু। ১৬ ডিসেম্বর ইস্তফা দেন বিধায়ক পদ থেকে। ১৯ ডিসেম্বর যোগ দেন বিজেপিতে। জয়প্রকাশের কথায়, “ঘটনা চক্রে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল গোটা বিষয়টা সামনে থেকে দেখার। সেই কারণে আজ সবটা প্রকাশ্যে আনতে পারলাম।” এদিন নারদার ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে নিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। দাবি করলেন, নারদার ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি। যদিও নির্দেশ ও ভিডিও আসত দিল্লি থেকে। এমনকী শুভেন্দুর নারদার ভিডিও-ও জনসমক্ষে আনা হয়েছে বিজেপির অফিস থেকেই।
এদিন ফের শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করেন কুণাল ঘোষ। প্রশ্ন তুললেন, কুন্তলের চিঠির ভিত্তিতে অভিষেককে ডাকা হল, আর একই পদ্ধতিতে সুদীপ্ত সেনের চিঠির ভিত্তিতে কেন শুভেন্দু ও তার শাগরেদদের ডাকছে না এজেন্সি?