সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার (Jayalalithaa) প্রয়াণের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৬ বছর। কিন্তু এখনও যেন রহস্যের কুয়াশায় আবৃত তাঁর মৃত্যু। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ৬০৮ পাতার একটি দীর্ঘ রিপোর্ট। এআইএডিএমকে-র প্রাক্তন প্রধানের মৃত্যু সম্পর্কিত কমিশনের সেই রিপোর্টে অভিযোগের তির কার্যত নেত্রীর ছায়াসঙ্গী ভিকে শশীকলার (VK Sasikala) দিকে। সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে তাঁকেই দায়ী করা হয়েছে জয়ললিতার মৃত্যুর জন্য।
মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এ অরুমুগাস্বামীর নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন তৈরি হয়েছিল ২০১৭ সালে। অবশেষে রিপোর্ট জমা দিল কমিশন। জয়ললিতার দল AIADMK বরাবরই অভিযোগ জানিয়েছে, জয়ললিতার অসুস্থতা ও অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা রয়েছে। সেই দাবি মেনেই তৈরি করা হয়েছিল এই কমিশন। ২০২১ সালে ডিএমকে ক্ষমতায় এসে দাবি করেছিল তারা ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মেনে জয়ললিতার মৃত্যু নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালিয়ে যাবে। অবশেষে কমিশন গত আগস্টে সরকারের কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দেয়। এবার সামনে এল সেই রিপোর্টের বিবরণ।
[আরও পড়ুন: কারও চাকরি বাতিল নয়! প্রাথমিকে ২৬৯ জনের নিয়োগ বাতিলে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের]
রাজ্যের বিধানসভায় সেই রিপোর্ট পেশ করেছে সরকার। ঠিক কী দাবি রিপোর্টে? সেখানে জয়ার মৃত্যুর বিষয়ে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্য সচিব ড. রামা মোহানা রাওকে দায়ী করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিজয় ভাস্কর, অ্যাপোলোর চেয়ারম্যান ড. প্রতাপ রেড্ডির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা ভুয়ো বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গেই এই ঘটনায় শশীকলার ভূমিকাও খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে রিপোর্টে। সব মিলিয়ে তদন্ত কমিশনের রিপোর্টে ইঙ্গিত, ‘আম্মার’ মৃত্যুর পিছনে যড়যন্ত্র থাকলেও থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, অ্যাপোলোতে ৭৫ দিন ভরতি থাকার পর মারা যান জয়ললিতা। সেই সময় তাঁর শারীরিক অবস্থায় নিয়ে কার্যত ধোঁয়াশা ছিল। খুব ঘনিষ্ঠরা ছাড়া কেউই জানতেন না ঠিক কেমন আছেন নেত্রী। হাসপাতালে কাউকে তাঁকে দেখার সুযোগও দেওয়া হত না। জয়ললিতার মৃত্যু হয়েছিল হৃদরোগে। পাশাপাশি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গও। তেমনই দাবি ছিল ডাক্তারি রিপোর্টে। কিন্তু সেই রিপোর্ট দু’মাস পরে কেন দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন জয়ললিতার দলের অনেকেই। আর সেই সময় থেকেই নেত্রীর মৃত্যুর পিছনে শশীকলার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল।
[আরও পড়ুন: তলিয়ে গিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার জেটি ঘাটে, পূর্ব মেদিনীপুরে মৎস্যজীবীদের জালে ২ বোনের দেহ!]
প্রসঙ্গত, গত বছরের গোড়ায় জেল থেকে ছাড়া পান শশীকলা। ৬৬ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে চার বছর বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। এবার জয়ললিতার মৃত্যুর তদন্ত রিপোর্টে নতুন করে তাঁর নাম উঠে আসায় বর্ষীয়ান নেত্রীর অস্বস্তি বাড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।