সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটব্যাংকের রাজনীতি! আদিবাসী এবং পিছিয়ে পড়াদের মন পেতে রাজ্যের সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের পরিমাণ রেকর্ড হারে বাড়িয়ে দিল ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren) সরকার। বনাঞ্চল এবং খনি অধ্যুষিত রাজ্যটিতে সংরক্ষণের পরিমাণ ৬০ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়াল ৭৭ শতাংশ। অর্থাৎ অসংরক্ষিত আসনের সংখ্যা কমে দাঁড়াল মাত্র ২৩ শতাংশ।
শুক্রবার ঝাড়খণ্ড বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে দুটি বিল পাশ করিয়েছে সেরাজ্যের হেমন্ত সোরেন সরকার। একটি সংরক্ষণ সংশোধনী বিল এবং আরেকটি ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী এবং মূলবাসী নির্ণায়ক বিল। এই দুটি বিলই বিতর্কিত। প্রথম বিলটির মাধ্যমে সংরক্ষণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৭৭ শতাংশ করা হয়েছে। এর মধ্যে তফসিলি জাতির (SC) সংরক্ষণ ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২ শতাংশ। তফসিলি উপজাতি (ST) অর্থাৎ আদিবাসীদের সংরক্ষণ বেড়ে হচ্ছে ২৮ শতাংশ। ওবিসি-এ’র সংরক্ষণ হচ্ছে ১৫ শতাংশ এবং ওবিসি বি-র সংরক্ষণ হচ্ছে ১২ শতাংশ। আর আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের সংরক্ষণ হবে ১০ শতাংশ। তবে সংরক্ষণের এই নতুন হার শুধু সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে। সরকারি স্কুল কলেজে ভরতির ক্ষেত্রে আগের হারেই সংরক্ষণ থাকবে।
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ভারতীয় পড়ুয়ারা পড়াশোনা শেষ করুক রাশিয়ায়, ‘বন্ধু’ ভারতকে প্রস্তাব মস্কোর]
শুক্রবার ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) সরকারের পাশ করানো দ্বিতীয় বিলটিতে বলা হয়েছে, কারা ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী বা ভূমিপুত্র সেটা নির্ধারণ করা হবে ১৯৩২ সালের জমির রেকর্ড অনুযায়ী। অর্থাৎ ১৯৩২ সালের আগে কারও ঝাড়খণ্ডে জমি না থেকে থাকলে তাকে সেরাজ্যের ভূমিপুত্র হিসাবে গণ্য করা হবে না। বিধানসভায় এই দুটি বিলেরই বিরোধিতা করেছে বিজেপি (BJP)। বিধানসভা থেকে বিজেপি বিধায়করা ওয়াক-আউট করায় বিনা বাধাতেই বিলগুলি পাশ হয়ে যায়। তবে, এই দুটি বিল কার্যকর করার জন্যই ঝাড়খণ্ড সরকারকে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে। কারণ সংবিধানের নবম তফসিলে সংশোধন না হলে বিল দুটি কার্যকর হবে না। তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশ অনুযায়ী কোনও রাজ্যেই সংরক্ষণের পরিমাণ ৪৯ শতাংশের বেশি হওয়ার কথা নয়। সেটা নিয়েও চলছে আলোচনা।
[আরও পড়ুন: বিচারপতি নিয়োগে কেন্দ্রের বিলম্ব নিয়ে রুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট, নোটিস আইন মন্ত্রকের সচিবকে]
আসলে এই মুহূর্তে খনি কেলেঙ্কারিতে বেশ ব্যাকফুটে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। যে কোনও সময় তাঁকে পদত্যাগও করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনেও যেতে পারেন তিনি। সম্ভবত সেকারণেই আদিবাসীদের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা আরও খানিকটা বাড়িয়ে নিতে চাইছেন তিনি।