সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। সম্পন্ন হল জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া। শেষ হল দীর্ঘদিনের প্রশাসনিক টানাপোড়েন। এদিনই চূড়ান্ত খসড়া জমা পড়ে যাওয়ার ফলে এবার আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে নির্বাচন করতে সমস্যা রইল না বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে জম্মু ও কাশ্মীর যখন রাজ্য ছিল, তখন সব মিলিয়ে এখানকার বিধানসভায় আসনসংখ্যা আগে ছিল ১১১টি। যার মধ্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ছিল ২৪টি আসন। লাদাখে ছিল ৪টি। জম্মু ও কাশ্মীর মিলিয়ে ছিল ৮৩টি আসন। আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে তা দাঁড়াল ৯০টি। যার মধ্যে জম্মুতে আসন ৪৩টি। কাশ্মীরের আসন দাঁড়াল ৪৭টি। নয়া বিন্যাসে জম্মুতে আসন বাড়ল ৬টি। কাশ্মীরে বাড়ল ১টি। কাশ্মীরের ১টি আসন জম্মুতে চলে গিয়েছে। এই আসনগুলির মধ্যে তফসিলি উপজাতি ও জাতির জন্য আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে যথাক্রমে ৯ ও ৭। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (POK) আসনগুলি শূন্য়ই রাখা হয়েছে। এছাড়া জম্মু ও কাশ্মীরের লোকসভায় ৫টি আসন থাকবে।
২০১৯ সালের আগস্টে ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভেঙে দেওয়া হয় দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে- জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ (Ladakh)। এরপরই নিশ্চিত হয়ে যায়, সংবিধানের নিয়ম মেনে এবার এখানকার লোকসভা ও বিধানসভার আসনেরও পুনর্বিন্যাস করতে হবে। অবশেষে প্রায় আড়াই বছর পরে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল।
এই পুনর্বিন্যাসের পিছনে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কি কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর পিছনে ভোটের অঙ্কের হিসেবকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। যেহেতু জম্মুতে হিন্দুদের সংখ্যা বেশি, তাই সেখানে আসন বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি মুসলিম অধ্যুষিত উপত্যকায় আসনসংখ্যা বাড়েনি সেই অর্থে। আবার আসনগুলির এলাকা পুনর্বিন্যাস করেও অনেক ক্ষেত্রে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকাগুলিকে একদিকে আনা হয়েছে। আসলে ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর থেকেই এমন সম্ভাবনার কথা উঠে আসছিল। সম্প্রতি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলসে’র মতো ছবির প্রশংসাতেও প্রধানমন্ত্রী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে পঞ্চমুখ হতে দেখা গিয়েছিল। এর পিছনেও কাশ্মীর দখলের ভোট অঙ্ক ছিল বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। আসন পুনর্বিন্যাসের পরেও জম্মু ও কাশ্মীরে ক্ষমতা দখলের অঙ্ককে তাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলেই মনে করা হচ্ছে।