মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরে আপেল ব্যবসায়ী খুনে অভিযুক্ত জঙ্গিদের চিহ্নিত করে তাদের খোঁজ পেতে পোস্টার দিল পুলিশ। দু’জন আততায়ীর ছবির নিচে তাদের নাম দিয়ে উর্দুতে পোস্টার ছাপানো হয়েছে পুলিশের তরফে। সেটি সোপিয়ানের রাস্তায় রাস্তায় তা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের এনিয়ে সতর্কও করা হয়েছে পুলিশের তরফে। এদের মতো কাউকে দেখলে পুলিশকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোপিয়ানের ডিজিপি দিলবাগ সিং বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘গত কয়েকদিনে তিন স্থানীয় বাসিন্দাকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় যুক্তরা সকলেই পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গি। আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি। বোঝা যাচ্ছে, যাঁরা বাইরে থেকে ব্যবসার জন্য আমাদের এখানে আসছেন, তাঁরাই জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাচ্ছেন। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার। এসব ঘটনার পর পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিশেষ সশস্ত্র বাহিনী এখানে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে।’
[আরও পড়ুন: ‘ইন্দিরা গান্ধীও দাদুর অনুগামী ছিলেন’, দাবি বীর সাভারকরের নাতির]
গত মঙ্গলবার সোপিয়ানে এক আপেল বিক্রেতাকে এবং এক ট্রাকচালককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। আপেল ব্যবসায়ী পাঞ্জাবের বাসিন্দা। ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা ছিলেন ট্রাক ব্যবসায়ী। সোপিয়ান এবং পুলওয়ামায় এই সপ্তাহেই খুন হয়েছেন দু’জন। এর জেরে নিরাপত্তাবৃদ্ধি তো বটেই, বাইরে থেকে আগত ব্যবসায়ীদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের রাখা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনিক ভবনগুলির আশেপাশে, যেখানে
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা রয়েছে। প্রশাসনিক উপদেষ্টা ফারুক খানের কথায়, ‘উপত্যকায় শাটডাউন চলাকালীন পাকিস্তান রীতিমতো মরিয়া হয়ে উঠেছিল হামলা চালাতে। তাই জঙ্গিরা নতুন নতুন কৌশল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমরা ভালর জন্য যা যা করি, সেটাই বানচাল করতে উঠেপড়ে লাগে।’ রাজ্যের এডিজি, আইনশৃঙ্খলা মুনির খান বলছেন, ‘ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের টার্গেট করে তাঁদের মেরে ফেলাটা আসলে
উপত্যকার অশান্তিকেই বাড়ি তোলা। ওরা বোঝাতে চাইছে, জম্মু-কাশ্মীরের ভিন রাজ্যের কেউ নিরাপদ নন।’
[আরও পড়ুন: সমাধান না করে দোষারোপ বেশি, মন্দা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ মনমোহনের]
ভরা মরশুমে কাশ্মীর উপত্যকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তত ৫০০ টি ফলবোঝাই ট্রাক আসে। এখানেই ফল ব্যবসা সবচেয়ে ভাল হয় বলে কিছুটা বাড়তি লাভের আশায় এখানে আসা। কিন্তু এঁদের উপর এমন নৃশংস হামলা অতীতে হয়নি বলেই পুলিশ মহলের দাবি। ধারাবাহিক এসব ঘটনার পর ফলপট্টিগুলিতে নিরাপত্তা বেড়েছে। এমনকী ফলজাত বিভিন্ন কারখানাগুলিতেও বাড়তি নজর রাখছে পুলিশ। সেইসঙ্গে
পোস্টার প্রকাশ করে অভিযুক্ত আততায়ীদের খোঁজ পেতে মরিয়া জম্মু-কাশ্মীরের পুলিশ।