রমেন দাস: তিলোত্তমার ন্যায়বিচার চেয়ে আবারও পথে নামলেন টলিউডের শিল্পী, কলাকুশলীরা। টালিগঞ্জ থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিলে কড়া স্লোগানেই হুঁশিয়ারি তাঁদের- 'বিচার যত পিছোবে, মিছিল তত এগোবে'। প্রতিবাদী মিছিলের পুরোভাগে দেখা গেল মানসী সিনহা, সোহাগ সেন, অপরাজিতা আঢ্য, বাদশা মৈত্র, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেককেই।
রবিবার সকালেই সোশাল মিডিয়া ফেটে পড়েছিল, জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভার্চুয়াল যৌন হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে। টালিগঞ্জের উঠতি এক অভিনেত্রী তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক পোস্ট করে দাবি করেন, অভিনেতা নাকি 'সাইজ' জানতে চেয়েছেন মেসেজ করে। এদিন সকালেই সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর কাছে মুখ খুলে পালটা আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জয়জিৎ। তবে এহেন বিস্ফোরক অভিযোগে পালটা দমে যায়নি অভিনেতা। বরং রবিবার তিলোত্তমার ন্যায়বিচার চাওয়া টলিপাড়ার মিছিলেও শামিল তিনি। সেখানেই আরও একবার সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর মুখোমুখি হয়ে যৌন হেনস্তার 'ভুয়ো অভিযোগ' নিয়ে আইনি পথে হাঁটার হুঁশিয়ার দিলেন জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, "আমাকে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ চেনেন। যে কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন। কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আমি তো যখন জানতে পেরেছি, ওই অভিযোগকারিণীর পোস্টের নিচেই সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনশট দিয়ে উত্তর দিয়েছি। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।"
মিছিলে অপরাজিতা আঢ্য, মানসী সিনহা, ছবি- শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়
[আরও পড়ুন: গণপতি উৎসবেই রণবীর-দীপিকার ঘরে এল লক্ষ্মী, ‘সেরা’ প্রতিক্রিয়া আলিয়া-প্রিয়াঙ্কাদের]
এদিকে মিছিল বাঙুর হাসপাতালের সামনে যেতেই চুপ করে যায় রোগীদের কথা মাথায় রেখে। সেখান থেকেই অপরাজিতা আঢ্যর মন্তব্য, "২৮ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছি, তাই প্রতিবাদে নামছি বলে কাজ হারানোর ভয় পাই না। কারণ কেউ আমাকে হাতে করে এসে কাজ দেয়নি যখন বসে থেকেছি। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবেই।" বাদশা মৈত্র বলছেন, "বিচারের নামে প্রহসন নয়, বিচার চাই। এটা পরিষ্কার যে ষড়যন্ত্রকারীর তালিকা বড়। স্বাস্থ্য দপ্তরের দুর্নীতিটা যে স্তরে পৌঁছেছে, সেটা কারও একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। জঘন্য অপরাধের নেপথ্যের সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
হাজরা পর্যন্ত মিছিলে হাঁটার মাঝেই এক অটোতে উঠে পড়েন মানসী সিনহা। মাইক হাতেই সেখান থেকে স্লোগান দিচ্ছিলেন অভিনেত্রী পরিচালক। তিনি বলছেন, "যতদিন না সুবিচার পাচ্ছি, বছর বছর রাস্তায় নামব। এতদিন চুপ থেকেছি আর নয়!" শহরের বিষাদগ্রস্থ মনে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো করা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। পুজোর বাকি কাঁটায় কাঁটায় একমাস। কিন্তু সেরকম কোনও আনন্দ আয়োজন নেই আর জি কর আবহের জেরে। এদিন প্রতিবাদী মিছিল থেকেই রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, প্রয়োজনে পুজোয় মিছিল করে ঠাকুর দেখতে বেরব। কোনও পুজো, কোনও অনুষ্ঠান, আমাদের এই আন্দোলনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। বাচিকশিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "৯ তারিখ শুনানিটা যদি ধর্ষকদের বিরুদ্ধে একটা প্রকৃত শাস্তির উদাহরণ হয়, তাহলে একটা গোটা শহর বেঁচে যাবে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্যই বিচারে দেরি হচ্ছে।"