রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়: পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি নিয়ে বিভক্ত বিজেপি। একাধিক বিধায়ক পৃথক উত্তরবঙ্গ চান। তবে বঙ্গসফরে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (J P Nadda) সাফ জানালেন, রাজ্য ভাগ হোক তা চায় না পদ্মশিবির। নিউটাউনের হোটেলে বঙ্গ বিজেপির রুদ্ধদ্বার বৈঠকে একই কথা বলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষও।
নাড্ডার সফরের মাঝে কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যাই বলুন না কেন আমরা আমাদের গোর্খা সম্প্রদায়ের জন্য এই দাবি আদায় করেই ছাড়ব। উনি নিজের চোখেই তা দেখে যাবেন। আমরা উত্তরের বিভিন্ন জনজাতির স্বার্থে তাদের নিয়েই আন্দোলন করব। উনি যাই বলুন না কেন পাহাড়-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ পিছিয়ে রয়েছে। তাই পৃথক রাজ্যের প্রয়োজন রয়েছে।”
হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা অজয় এডওয়ার্ডও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরব। তবে তিনি কোনও সশস্ত্র আন্দোলন চান না। তাঁর কথায়, “গোর্খাল্যান্ড আমাদের ন্যায্য দাবি। আমি স্বপ্ন দেখি একদিন আমাদের পৃথক রাজ্য হবেই। সে কারণে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমরা আমাদের দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরব। কিন্তু পাহাড়ে কোনওরকম অশান্তি বা সশস্ত্র আন্দোলন করা হবে না। জিটিএ’র মাধ্যমেই আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবি আরও জোরালো করব।”
[আরও পড়ুন: ‘জঙ্গি, টাকা তুলে বিরিয়ানি খাবে?’ উত্তরপ্রদেশে ৩ ফকিরকে বেধড়ক মার, ভাইরাল ভিডিও]
পৃথক রাজ্যের দাবিতে আগেও বারবার উত্তপ্ত হয়েছে পাহাড়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। এখন পর্যটকদের ঢল নামছে দার্জিলিং শহরে। পুরনির্বাচন হয়েছে পাহাড়ে। এবার আবার জিটিএ নির্বাচনও করা হচ্ছে। এরপর ধীরে ধীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথাও ভাবা হচ্ছে। এমনকি পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করাও তার লক্ষ্য বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেও আবার নতুন করে পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছে বিজেপি বিধায়করা। চলতি সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন কোনওভাবেই তিনি বাংলা ভাগ হতে দেবেন না। তা সত্ত্বেও পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিতে এককাট্টা পদ্মশিবিরের একাংশ।
তবে শুধু পৃথক উত্তরবঙ্গই নয়, রাঢ়বঙ্গের দাবিতেও সুর চড়িয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। দল না চাইলেও, পৃথক রাঢ়বঙ্গ চান বলেই জানান বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ। সৌমিত্রর এই মন্তব্য ঘিরে নয়া জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। বাবুল সুপ্রিয়, অর্জুন সিংয়ের পর সৌমিত্র খাঁ-ও কি ‘বেসুরো’? উঠছে প্রশ্ন।