shono
Advertisement

ভোট বৈতরণী পেরোতে ভগবানই ভরসা তেলেঙ্গানার চন্দ্রশেখর রাওয়ের

রীতিমতো পাঁজিপুঁথি দেখে ভোটপ্রচারে বেরোচ্ছেন কেসিআর৷ The post ভোট বৈতরণী পেরোতে ভগবানই ভরসা তেলেঙ্গানার চন্দ্রশেখর রাওয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:11 AM Apr 07, 2019Updated: 04:06 PM Apr 17, 2019

শংকর ভট্টাচার্য, হায়দরাবাদ: সেলুলয়েডের ‘হীরক রাজা’ এবার বাস্তবে। জ্যোতিষীর কাছে দিনক্ষণ দেখে নির্বাচনী প্রচার করছেন। প্রার্থীর ঠিকুজি-কুষ্ঠি মিলিয়ে ভোটের মনোনয়ন। ২০১৯-এ জ্যোতিষদের কথা মেনে চলছে রাজ্য!  নাহ, রাজ্যের নাম ‘শুণ্ডি’ নয়। তেলেঙ্গানা। মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। লোকসভায় জেতাই যাঁর টার্গেট। কেসিআর তাই সকাল-বিকেল ছুটছেন মন্দির, নাহলে কোনও দরগায়।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: নীতীশের ছোঁয়াতেই যেন ম্যাজিক, ভোটের আবহে স্পষ্ট বার্তা আমূল পালটে যাওয়া বিহারে]

এবার যেমন, ভোট প্রচারে বড় বড় জনসভার মাঠগুলোয় পুজো হচ্ছে। পার্টি অফিসেও সকাল-বিকেল চলছে যজ্ঞ। আর কেসিআরের এই দেবদ্বিজে ভক্তিকে হাতিয়ার করছেন বিরোধীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমালোচনা করে গিয়েছেন। বামপন্থীরা বলছেন, কুসংস্কারী সরকার। মানুষকে এগনোর বদলে পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এত কিছু শুনেটুনে শনিবার জুবিলি হিল্‌স পার্টি অফিসে বিশেষ পুজো দেখতে হাজির হয়েছিলাম। ছবি তোলার চেষ্টা করতেই কর্মীরা এক্কেবারে রে রে করে উঠলেন। পুজো চলাকালীন ছবি তোলা ঘোর অপবিত্র কাজ। আরে বাবা, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের আমলে তো আর ক্যামেরা ছিল না! বিরোধীদের একহাত নিতে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির রাজ্য সম্পাদক তথা বিধায়ক শ্রীনিবাস রেড্ডির পাল্টা প্রশ্ন, “পুজোয় আমজনতার ক্ষতি কোথায়? ওঁদের জন্যই তো করছেন চন্দ্রশেখর রাও গারু (তেলুগুতে মহাশয়কে ‘গারু’ বলা হয়)।” এহেন গারুর ঈশ্বরভক্তি এতটাই যে, ২০১৪-য় ভোটে জেতার পর স্কুল-কলেজ নয়, রাজ্যের মানুষের জন্য প্রথম উপহার ছিল পাঁচ কোটি টাকার মন্দির।


বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্যের কোটি কোটি টাকা খরচ করে এই কুসংস্কার অর্থহীন। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পেরকা রাজু বললেন, “লোকসভা ভোটের সময়টা মোটেও ভাল নয় রাওয়ের। তাই চার মাস আগে বিধানসভা ভোট করিয়েছেন জ্যোতিষীদের পরামর্শ মতো। বুঝতেই পারছেন, সময় খারাপ চলছে ওঁর। এবার উনিশটা আসনের মধ্যে এগারোটাই আমাদের।” তাহলে রাও নিজেও কি  জ্যোতিষীকে হাত দেখাচ্ছেন নাকি? প্রশ্ন করতেই হাসতে হাসতে কংগ্রেস নেতা রাজু বললেন, “অত জানা নেই। যা শুনছি তাই বলছি। আসলে এই বিশ্বাসের বোধটা তো ছোঁয়াচে রোগের মতো।” কথা হচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর অন্যতম ব্যক্তিগত জ্যোতিষী বান্দারুপ্রসাদ রাওয়ের সঙ্গে। হায়দরাবাদের একটি মন্দিরে যজ্ঞের ফাঁকে ধরা দিলেন এই প্রতিবেদককে। কথা বলবেন। তবে শর্ত একটাই। সব কথা তিনি বলতে পারবেন না। সব কথা বলে দিলে নাকি ফল ভাল হয় না!

[ আরও পড়ুন: পরিচয়ের খোঁজে পৃথক এনআরসি চাইছেন অসমের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা]

জানা গেল, রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী প্রবলভাবে শিষ্টাচার মানেন। বিশ্বাস করেন বাস্তুতেও। তাঁর হাতের রেখা নাকি রাজা বিক্রমাদিত্যর মতো। জ্যোতিষী রাও সাহেব বলছিলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর নাকি খুব ভাল সময় ছিল কেসিআরের। আর তাই ক্ষমতায় আসার পর তিন বছর রাজ্যের সচিবালয়মুখো হননি। ওই বাড়িটা বড্ড অশুভ। তার বদলে তিনি নতুন সচিবালয় তৈরি করবেন। যার ফসল হায়দরাবাদে ৯ একর এলাকাজুড়ে কয়েক কোটি টাকায় ‘প্রগতিভবন’। 

[ আরও পড়ুন: ‘সন্ত্রাসবাদ ইস্যু না হলে এসপিজি নিরাপত্তা ছাড়ুন’, সুষমার নিশানায় রাহুল]

সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক চান্দা ভেঙ্কট রেড্ডি বললেন, “আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই সব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই লিখে চলেছি। সরকারি কোষাগারের কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে শুধু কুসংস্কারের ঠেলায়। বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের ৬৫ দিন পর জ্যোতিষীদের কথামতো মন্ত্রিসভা তৈরি করলেন। কিন্তু সংস্কারের চোটে তাঁর মন্ত্রীসভায় ঠাঁই নেই কোনও মহিলার। মন্ত্রিসভায় মহিলা থাকলে তা অপবিত্র হয়ে যাবে। বুঝুন ঠেলা!” এখন লাখ টাকার প্রশ্ন, কেসিআর ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিটা দেখেছেন কি?

The post ভোট বৈতরণী পেরোতে ভগবানই ভরসা তেলেঙ্গানার চন্দ্রশেখর রাওয়ের appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement