দেব গোস্বামী, বোলপুর: অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) তিহাড়ে। এবার তাঁর কালীপুজোর তদারকিতে সভাধিপতি কাজল শেখ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভুলে বিরোধীগোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত হলেও পুজোর দেখাশোনার দায়িত্বভার নিলেন কাজল। কেষ্টর কালীপুজো এবার কাজলের হাতে। সরজমিনে ঘুরে দেখলেন পুজো মণ্ডপের এলাকা। পুজোয় স্বমহিমায় পরিচালনার ক্ষেত্রে মণ্ডল পরিবারের সঙ্গে থেকেই উদ্যোগী হলেন কাজল।
জেলে থাকার কারণে গত দু’বছর বীরভূমের তৃণমূল কার্যালয়ে কালী এবং ছোট্ট বয়সে নিজের হাতে গড়া বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িপুকুর সম্মিলনী ক্লাবের কালীপুজোয় যোগ দিতে পারেননি অনুব্রত। আর সেই পুজো কেমন হচ্ছে। মণ্ডল পরিবারের সদস্যরা কেমন আছেন। খোঁজ নিতে নিচুপট্টির পুজো মণ্ডপে যান ফায়েজুল হক ওরফে কাজল। কথা বললেন পুজো উদ্যোক্তা ও মণ্ডল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও।
অনুব্রত’র পাড়া, বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িপুকুরের কালীপুজো ইদানিং এলাকায় অবশ্য ওই পুজো ‘কেষ্ট-কালী’ নামেই খ্যাত। তবে, পুজোর ভার গিয়েছে অনুব্রতর ভাই এবং পাড়া প্রতিবেশীদের হাতে। ২০০০ সাল থেকে দলীয় কার্যালয়েও পুজোর আরাধনা শুরু করেন অনুব্রত। বিগত বছরগুলির মত নিচুপট্টি এলাকায় এই বছরও ৪৫ ফুটের কালীপুজো। এবারে কালীপুজোর বয়স ৫৬ বছর। অবশ্য এখন এই পুজোর নেপথ্যে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: ‘রবি ঠাকুরের নাম থাকলে ভালোই হতো’, বিশ্বভারতীর ফলকযুদ্ধে মন্তব্য দিলীপের]
মণ্ডল পরিবারের গৃহদেবতা দুর্গা। প্রাচীন রীতি অনুযায়ী কালীপুজো করতে নেই। একগুঁয়ে ৯ বছরের ছোট্ট ছেলে সেদিন কালীপুজো করার জন্য মারধর খেয়েছিল বাবার হাতে। তাও কালীপুজোর জেদ ছাড়েনি। সেই থেকেই শুরু হয়েছিল কেষ্টর কালীপুজোর। প্রতি বছর ঘটা করে বোলপুরে নিজের পাড়ার কালীপুজোর ফিতে কেটে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করতেন প্রতিষ্ঠাতা অনুব্রত। কালীপুজো নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্যান্য বছর যেমন কালীপুজো করা হয় সেই রকমই পুজোর আয়োজন হয়েছে এবারও। তবে কেষ্ট দা না থাকায় মন খারাপ সবারই। অনুব্রত ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডল বলেন, “পুজোর প্রস্তুতি দেখতে এসেছিল কাজল। পুজোর উদ্বোধন থেকে সমস্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণেও থাকবে।” অন্যদিকে কাজল শেখ বলেন, “পুজো যেভাবে হত এবারেও সেভাবেই হবে। অনুব্রতদা নেই ঠিকই, কিন্তু বাড়ির সকলের সঙ্গে পুজো উদ্যোক্তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে হবে পুজোর আয়োজন। আমরা এই পরিবারেরই সদস্য। পুজোয় পাড়া-প্রতিবেশী মণ্ডল পরিবারের সঙ্গেই থাকব। দাদার হাত ধরেই আমার রাজনৈতিক জীবনের পথচলা শুরু। তাঁকে মিথ্যা মামলায় জেলে আটকে রাখা হয়েছে।দাদার শূন্যতা, খুবই দুঃখের এবং বেদনার।”