shono
Advertisement

Kali Puja in Kolkata: দেবীর ভোগে ইলিশ, বোয়াল! আজও তন্ত্রসাধনায় জড়িয়ে ৬ ইঞ্চির পুঁটে কালীর আরাধনা

প্রায় ৫০০ বছর আগে গঙ্গা তীরবর্তী পোস্তা অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মন্দির।
Posted: 11:51 AM Nov 09, 2023Updated: 01:20 PM Nov 09, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তর কলকাতার বড়বাজারর অঞ্চলের পোস্তা এলাকা। আর এই পোস্তায় গেলেই দেখা মিলবে এক মন্দিরের। শ্রীশ্রী পুঁটে কালীমাতার মন্দির। যে মন্দির এবং তার গর্ভগৃহে অধিষ্ঠাত্রী দেবীকে নিয়ে চর্চা চলে আজও। বহু কাহিনির ভিড়ে এই ‘পুঁটে কালী’ মন্দিরই হয়ে ওঠে উত্তর কলকাতার এক অন্যতম দর্শনীয় স্থানও। কেন? কোন কাহিনি জড়িয়ে এই মন্দির এবং মাতৃ প্রতিমার সঙ্গে?

Advertisement

শোনা যায়, প্রায় ৫০০ বছর আগে গঙ্গা তীরবর্তী পোস্তা অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মন্দির। হুগলির ভুরশুটের বাসিন্দা তন্ত্রসাধক ‘রাজামানিক’ অর্থাৎ মানিকচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই পুজো পেতে শুরু করেন ‘পুঁটে কালী’। মোগল সম্রাট আকবরের আমলে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে গড়ে ওঠে মন্দির। যে মন্দিরেই ‘পঞ্চমুণ্ডির আসন’ পেতে দেবীর পুজো শুরু করেন মানিক! কিন্তু কেউ কেউ বলেন, মানিকচন্দ্র নন তাঁর বংশধর খেলারাম বন্দ্যোপাধ্যায়ই আসলে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা।

[আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: নরবলি থেকে শ্রীরামকৃষ্ণের উপস্থিতি, জানুন বাগবাজারের সিদ্ধেশ্বরী কালীর ইতিহাস]

যদিও ‘পুঁটে কালী’র মন্দির তো বটেই এই দেবীমূর্তির নাম নিয়েও রয়েছে একাধিক কাহিনি। মাত্র ৬ ইঞ্চি উচ্চতার কালীর নাম কেন পুঁটে, তা নিয়েও রয়েছে কথকতার ভিড়। কথিত আছে, একদিন দেবীর পুজোর সময় হোমযজ্ঞ করছিলেন খেলারাম। ঠিক সেই সময়ই নদীর কাছের একটি খাল থেকে একটি পুঁটি মাছ হোমের আগুনে পড়ে। কিন্তু আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরেও সেই মাছকে যখন ফের জলে দেওয়া হয়, ওই মৃত মাছই প্রাণ পায় দেবীর কৃপায়। সেই থেকেই নাকি এই দেবীর নাম হয় ‘পুঁটি কালী’। পরে সেই ‘পুঁটি’ নামটিই হয়ে যায় ‘পুঁটে’।

[আরও পড়ুন: Kali Puja 2023: পুজোয় বাজে বাঁশি-ভোগে ইলিশ, ‘সবুজ কালী’র মাহাত্ম্য জানলে চমকে যাবেন]

সারাবছর দেবীর পুজো তন্ত্রমতে। কালীপুজোর রাতে দেবীকে ভৈরবীরূপে আরাধনা ও পঞ্চ ম-কারে পুজো করা হয়। কালীপুজোর পরের দিন মন্দিরে হয় কুমারী পুজো এবং অন্নকূট উৎসব। ‘পুঁটে কালী’র ভোগেও রয়েছে অভিনবত্ব।

জানা যায়, ‘পুঁটে কালী’কে নিরামিষ এবং আমিষ, দুই ধরনের ভোগই দেওয়া হয়। নিরামিষ ভোগে থাকে খিচুড়ি, পোলাও, লুচি, দু’রকমের সবজি, চাটনি, পায়েস। আমিষ ভোগে দেওয়া হয় পুঁটি, রুই, বোয়াল, ভেটকি, ইলিশ মাছ। এই কালীর আর একটি বিশেষত্ব হল, মাতৃ প্রতিমার পাশেই রয়েছেন শীতলা। কালীর সঙ্গে শীতলা পুজোরও রীতি রয়েছে এই মন্দিরে।

পোস্তার তারাসুন্দরী পার্কের বিপরীতে কালীকৃষ্ণ ঠাকুর রোডের এই মন্দিরটি ১৫৫৮ সালে পাকা হয়। ১৯৩০ সাল নাগাদ ‘পুঁটে কালী’র মন্দির নিয়ে সমস্যা তৈরি হলেও তা মেটে অবশেষে। মন্দিরের বর্তমান বিগ্রহটি কষ্টিপাথরের। শোনা যায়, এর আগের মূর্তিটি নববৃন্দাবন থেকে এনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেববংশীয় কোনও এক জমিদারের কর্মচারী। মন্দিরের তিনটি চূড়ায় থাকা চক্র, ত্রিশূল, পতাকা নিয়েও রয়েছে একাধিক জনশ্রুতি।

যদিও ‘পুঁটে কালী’কে ঘিরে ঠিক-বেঠিক বিতর্কেও রয়েছে একাধিক কাহিনি। বিশ্বাস, এই কালীর কাছে মানত করলে মেলে ফল। আর সেই আশাতেই আজও ভিড় জমে এই মন্দিরে। শনিবার, মঙ্গলবার এবং অমাবস্যার দিন বিশেষ পুজোর বন্দোবস্ত করা হয় ‘পুঁটে কালী’র মন্দিরে। আজও খেলারামের বংশধরেরাই রয়েছেন ‘পুঁটে কালী’র সেবাইত হিসাবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement