সুপার কাপের মহারণ। মর্যাদার মেগা ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচের উপর নির্ভর করছিল যে কোন দল শেষ চারে যাবে। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনাল হারের বদলা নেওয়ার সঙ্গে, সবুজ-মেরুনকে এই প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিল কার্লেস কুয়াদ্রাতের লাল-হলুদ। ডার্বিতে প্রথমবার গোল করলেন ক্লেটন সিলভা ও একটি গোল করেন ডুরান্ড কাপের ডার্বির হিরো নন্দকুমার।
খেলা শেষ, ডার্বির রং লাল-হলুদ। ৩-১ গোলে মোহনবাগানকে উড়িয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল।
৮৫’: আর্শ যেন ভুলের প্রায়শ্চিত করলেন। কিন্তু মাঠে নেমেই স্কিল দেখালেন বিষ্ণু। গতিতে উঠে কাট-ইন করে মোহনবাগানের বক্সে ঢুকে যান। তার পর গোলের উদ্দেশে শট। প্রথম পোস্টে দুর্দান্ত সেভ। কর্নার ইস্টবেঙ্গলের। সেখান থেকেও প্রায় গোল করে ফেলছিল ইস্টবেঙ্গল। তবে বেঁচে গেল ইস্টবেঙ্গল।
৮০’: ক্লেটনের জোড়া গোল। দুরন্ত নন্দকুমার। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আরও ব্যকফুটে মোহনবাগান। হিজাজির হেড মোহনবাগান গোলকিপার আর্শ আনোয়ার সেভ করতে ব্যর্থ। তাঁর হাত ফসকে যায়। বল পেয়েই গোলে পরিণত করেন ক্লেটন। ম্যাচে তাঁর দ্বিতীয় গোল। ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লাল-হলুদ। ডার্বিতে প্রথমবার গোল করে চমকে দিলেন ব্রাজিলিয়ান।
৭৪’: আপাতত ম্যাচের যা অবস্থা, তাতে এমনভাবেই ম্যাচ শেষ হলে গ্রুপ ‘এ’-র চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার কাপের সেমিফাইনালে চলে যাবে ইস্টবেঙ্গল। এমনকী মোহনবাগান একটি গোল করলেও লাল-হলুদের অসুবিধা হবে না। ২-২ ফল হলেও সেমিফাইনালে চলে যাবে। অর্থাৎ শেষ ১৬ মিনিটে কমপক্ষে দু’গোল করতে হবে মোহনবাগানকে।
৬৩’: বোরহার শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে ফিরতি বলে গোল করে যান ডুরান্ড ডার্বির গোলদাতা নন্দকুমার। গোলকিপার প্রভসুখন গিলের লম্বা বল। সিভেরিও হেড করেও পাননি। মোহনবাগানের রবি রানার সঙ্গে বল দখলে জেতেন বোরহা। তাঁর শট পোস্টে লাগে। ফিরতি বলে গোল নন্দকুমারের। টানা আটটি ডার্বি হারের পর ডুরান্ডের গ্রুপ পর্বে নন্দর গোলেই জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। আরও এক বার ডার্বিতে গোল করে নায়ক নন্দ।
৫৭’: দিমিত্রি পেত্রাতোস উঠে এলেন। ইস্টবেঙ্গল বক্সের সামনে গিয়ে বাঁ-দিকে বল বাড়ালেন রবি রানাকে। কিন্তু তাঁর প্রথম টাচে তেমন জোর ছিল না। আরও বাজে ক্রস। গোলকিক ইস্টবেঙ্গল। সাইড নেটে বল লাগল।
৫৫’: একটি হলুদ কার্ড হজম করা রাজ বাসফোরকে মাঠ থেকে তুলে নেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। তাঁর জায়গায় নামলেন রবি রানা। এই ঘটনার কয়েক মিনিট আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন বাসফোর। সিভেরিওর সঙ্গে বল দখলের চেষ্টায় অ্যাক্রোব্যাটিক চেষ্টায় হাইবুট তুলেছিলেন। তাই তাঁকে রেড কার্ড থেকে বাঁচালেন সবুজ-মেরুনের সহকারী কোচ। এরপরই তাঁকে তুলে নেন ক্লিফোর্ড।
‘৫৩: হুগো বৌমসের ব্যাক হিল থেকে বল চলে আসে রাজ বাসফোরের পায়ে। বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে ডান পায়ে শট নেন। কিন্তু তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন প্রভসুখন গিল।
শুরু হয়ে গেল দ্বিতীয়ার্ধের খেলা। ডার্বির স্কোরলাইন এমন থাকলে সুপার কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে ইস্টবেঙ্গল। ছিটকে যাবে মোহনবাগান। বাকি ৪৫ মিনিটের উপর নির্ভর করছে যে দুই প্রধানের মধ্যে কোন দল শেষ চারের টিকিট পাবে।
৫০’: প্রথমার্ধের খেলা শেষ। ম্যাচের ফলাফল ১-১।
৪৯’: দিমিত্রি পেত্রাতোস শট নিলেও রেফারি গোলের আবেদন নাকচ করে দেন। প্রাথমিকভাবে তিনি যখন পেনাল্টি নেন, তখন প্রভসুখন গিলের ডানদিক দিয়ে বলটা জড়িয়ে দেন। শটটা এতটাই জোরে ছিল যে প্রভসুখন গিলের হাত লাগলেও জালে জড়িয়ে যায়। কিন্তু গোল হয়নি। কারণ তিনি শট নেওয়ার আগেই পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়েন কয়েকজন। লাইফলাইন পায় ইস্টবেঙ্গল। এর পর চাপের মুখে দ্বিতীয়বার জোরে শট মারেন অস্ট্রেলিয়ান। ডানদিকের টপ-কর্নার লক্ষ্য করেন। তিনি বারপোস্টে প্রতিহত হয়ে যায় শট। ফিরতি বলে আর্মান্দো সাদিকু শট নেওয়ার চেষ্টা করেন। লাভ হয়নি। বলটা বেরিয়ে যায়। এর পরেই প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।
৪৭’: প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগে ফের নাটক! কিয়ান নাসিরির জন্য পেনাল্টি পেল মোহনবাগান।
৪১’: নিজেদের অর্ধ থেকে উঠে এসে আক্রমণে যান হিজাজি। মোহনবাগান বক্সের মাথায় সিভেরিওকে পাস দেন। যিনি নিজের ডানদিকে ক্লেটন সিলভাকে বল বাড়ান। শট নেন ক্লেটনও। তবে গোল হল না।
৩৮’: হুগো বৌমসকে ফাউল করলেন ক্রেসপো। হলুদ কার্ড দেখলেন তিনি। এর আগে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল কর্নার পায়। সেটা থেকে ফের মোহনবাগানের উপর চাপ তৈরির সুযোগ পায়। তবে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন সিভেরিও। তার জেরে চাপমুক্ত হয়ে যায় মোহনবাগান ডিফেন্স।
৩৩’: মাঝমাঠে বল দখলের লড়াই চলছে দুই দলের। সৌভিক চক্রবর্তী ও গ্ল্যান মার্টিন্সের সংঘর্ষ। মোহনবাগানের গ্ল্যান মার্টিন্সকে হলুদ কার্ড দেখালেন রেফারি। ইস্টবেঙ্গলের ফ্রি-কিক। মাঝ মাঠ থেকে দুর্দান্ত সেট পিস মুভমেন্ট। নন্দকুমার সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। সিভেরিও হেডে বল নামানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে নন্দকুমারের সামনে মাথা দিয়ে গোল করার সুযোগ ছিল। বল অনেকটাই উঁচু থাকায় পা দিয়ে কানেক্ট করতে পারেননি নন্দ।
২৯’: নন্দকুমারকে ফাউল। পেনাল্টির আবেদন ইস্টবেঙ্গলের। যদিও রেফারি মোহনবাগানের পক্ষেই সিদ্ধান্ত দেয়। রেফারিংয়ের অসন্তুষ্ট ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।
২৪’: দারুণ কামব্যাক, ক্লেটনের গোলে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সমতা ফেরালেন লাল-হলুদের ক্লেটন। গোল হজম করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই গোল শোধ করে দিল ইস্টবেঙ্গল। বক্সের বাইরে ডানপায়ে দুর্দান্ত শট নিলেন লাল-হলুদের অধিনায়ক। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের শট আছড়ে পড়ল মোহনবাগানের জালে।
১৯’: হেক্টর ইউস্তের গোলে এগিয়ে গেল সবুজ-মেরুন। চাপে লাল-হলুদ। দিমিত্রি পেত্রাতোসের কর্নার থেকে গোল করলেন হেক্টর। লাগাতার আক্রমণের ফসল তুলে নিল সবুজ-মেরুন।
১৩’: কর্নার আদায় করে নিল মোহনবাগান। ডানপ্রান্ত থেকে ইস্টবেঙ্গল বক্সের দিকে বল উড়ে আসে। লক্ষ্য মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলেন আর্মান্দো সাদিকু। তাঁর প্রথম টাচটা ভালো হল না। ফলে চকিতে টার্ন নিয়ে গোলের উদ্দেশে শট মারতে পারলেন না। তবে দ্বিতীয় পোস্টে বলটা পেলেন দিমিত্রি পেত্রোতোস। কিছুটা সময় নিয়ে তাঁর শট। ব্লক ইস্টবেঙ্গলের। কর্নার মোহনবাগানের। তবে এবারও গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ সবুজ-মেরুন।
৮’: মোহনবাগানের আর্শ আনোয়ারের ভুলে সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না ক্লেটন সিলভা।
৫’: ইস্টবেঙ্গলের বক্সের মধ্যে ক্রস বাড়ালেন হুগো বৌমস। পেনাল্টি এলাকার কাছে ছিল সেই ক্রস। জোরদার হেডারের সৌজন্যে সহজে ক্লিয়ার করে দিলেন হিজাজি মাহের।
২’: দু’মিনিটেই ইস্টবেঙ্গলের জালে বল ঢুকিয়ে দিলেন আর্মান্দো সাদিকু। কিন্তু অফসাইডের জন্য সেই গোল বাতিল করা হল। রিপ্লেতে দেখা যায় সামান্য অফসাইড ছিল।
১’: ডানদিক থেকে আক্রমণে মোহনবাগান। তবে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সে আটকে গেল। ইতিবাচক শুরু সবুজ-মেরুনের। তবে শেষ পর্যন্ত বল ক্লিয়ার করে দিল লাল-হলুদের রক্ষণ।
সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিট: মাঠে নেমে পড়ল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। সুপার কাপের মেগা ডার্বির কিক অফ।
ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশ:
প্রভসুখন গিল (গোলকিপার),মহম্মদ রাকিপ, জোস আন্তোনিয়ো পারদো, হিজাজি মাহের, নিশু কুমার, সাউল ক্রেসপো, সৌভিক চক্রবর্তী, বোরহা হেরেরা, নন্দকুমার, ক্লেটন সিলভা (অধিনায়ক) এবং জাভিয়ের সিভেরিও।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশ:
রাজ বাসফোর, ব্র্যান্ডন হ্যামিল (অধিনায়ক), দিমিত্রি পেত্রাতোস, হুগো বৌমস, অভিষেক, কিয়ান নাসিরি, হেক্টর ইউস্তে, আর্শ ((গোলকিপার), গ্লেন মার্টিন্স, আশিস রাই এবং আর্মান্দো সাদিকু।
চলতি মরশুমে ডার্বির স্কোর লাইন এখনও অবধি ১-১। দু-দলই একটি করে জিতেছে। শেষ সাক্ষাৎ ডুরান্ড কাপের ফাইনালে। সেখানে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মোহনবাগান। আজ কি বদলা হবে?
এএফসি এশিয়ান কাপ চলছে। ভারতীয় দলে আছেন মোহনবাগানের সাতজন ফুটবলার। এছাড়া চোটের জন্য মাঠের বাইরে আছেন আনোয়ার আলি এবং আশিক কুরিয়ান। তাঁরা অবশ্য দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে আছেন। তবে সেটার থেকেও মোহনবাগানের কাছে বেশি উদ্বেগের বিষয় ছিল, যে ফুটবলাররা দলে রয়েছেন, তাঁরা ঠিক ছন্দ পাচ্ছেন না।
নিয়মের জটিলতায় ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে বেঞ্চে বসতে পারবেন না হেড কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। তাঁকে ছাড়পত্র দেয়নি সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)। তাঁর পরিবর্তে ডাগ-আউটে বসবেন সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। তবে ডার্বির যুদ্ধ জেতার মন্ত্র দলকে দিয়েছেন হাবাসই।