সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার হামলা চলেছে ঠিকই, কিন্তু দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের বিষয়ে জেলেনস্কির (Volodymyr Zelensky) আপসমূলক অবস্থানের মধ্যে ন্যাটোয় যোগদান থেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলার মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার গন্ধ পেয়েছেন অনেকে। কারণ ক্রেমলিন তো বরাবরই দাবি করে এসেছে যে, এই দু’টি ইস্যুতে ইউক্রেন রাজি থাকলে যুদ্ধ বন্ধ করা হবে। তাই ইউক্রেন-রাশিয়া (Ukraine-Russia) চতুর্থ রাউন্ডের বৈঠকের আগে পরিবেশ অনেকটাই সমঝোতাপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এরই মধ্যে পোল্যান্ড রওনা দিলেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান চেয়ে ইউক্রেনের আবেদন নিয়ে আলাপ আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, রুশ হামলা ঠেকাতে পোল্যান্ডের কাছে যুদ্ধ বিমান কিছুদিন ধরেই চেয়ে আসছিল ইউক্রেন। রোমানিয়াতেও যাবেন কমলা। তবে বুধবারও কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গিয়েছে। ইউক্রেনে অব্যাহত রাশিয়ার আক্রমণ। ইউক্রেনের পূর্ব প্রান্তের শহর সেভেরোডোনেস্টস্কে রাশিয়ার হানায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: স্থায়ী হল না সাফল্য, শূকরের হার্ট প্রতিস্থাপন হওয়ার দু’মাস পর মৃত্যু মার্কিন প্রৌঢ়ের]
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর সুমিতে রাশিয়ার বিমান হামলায় তিন শিশু-সহ ২২ জন নিহত হয়েছেন। সুমির আঞ্চলিক গভর্নর দিমিত্র ঝিভিৎস্কি বলেন, মঙ্গলবার রাতে শহরের উত্তর-পূর্ব দিকের একটি আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা করে রাশিয়া। এই হামলার ঘটনাকে ‘মাস কিলিং’ হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, গত রাতে মোট তিনবার বোমা হামলা করেছে রাশিয়া। এটা ছিল একটা ভয়াবহ রাত।’ শহর কর্তৃপক্ষের মতে, রুশ বিমানের হামলায় এক বাড়িতেই নয় জন নিহত হয়েছেন। ছয়টি ঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২০টি বাড়ি। সুমি শহর থেকে হাজার পাঁচেক সাধারণ নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ১২ হাজার সৈন্য নিহত হয়েছে। রাশিয়ার ৪৮টি যুদ্ধবিমান, ৮০টি হেলিকপ্টার ও ১ হাজারেরও বেশি সামরিক যান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এর আগে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো নিজেদের সৈন্যদের হতাহতের খবর প্রকাশ করে রাশিয়া। তারা জানিয়েছিল, ইউক্রেনে তাদের ৪৯৮ জন সৈন্য নিহত ও ১ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের বিকল্প আমরাই, প্রধানমন্ত্রী হবেন কেজরিওয়াল’, হুঙ্কার আম আদমি পার্টির]
এদিকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টিতে আর জোর না দেওয়ার কথা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, তিনি বেশ বুঝতে পেরেছেন, ইউক্রেনকে গ্রহণ করতে ন্যাটো প্রস্তুত নয়। তাই তিনি এখন আর ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টিতে জোর দিচ্ছেন না। তিনি বলেছেন, তিনি এমন দেশের প্রেসিডেন্ট হতে চান না, যে দেশ হাঁটু গেড়ে কিছু ভিক্ষা করে। আবার পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের বিষয়ে ‘আপস’ করার জন্য তিনি খোলামনে আছেন। জেলেনস্কির এই অবস্থান মস্কোকে শান্ত করার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখছেন অনেকে।
মঙ্গলবার ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে দেওয়া এক অভূতপূর্ব ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, তাঁরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে। জেলেনস্কির এই ভাষণের ভূয়সী প্রশংসা করেছে ব্রিটেনের রাজনীতিকরা।