সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানোয়ার যাত্রাপথে প্রতিটি দোকানে মালিকের নাম লেখার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এহেন নির্দেশনামার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। চূড়ান্ত ডামাডোলের মাঝেই এবার যোগী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের শীর্ষ আদালতে দায়ের হল মামলা। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি হতে চলেছে আদালতে।
জানা গিয়েছে, কানোয়ার যাত্রা উপলক্ষে যোগী সরকার নির্দেশ দিয়েছে, কানোয়ার যাত্রার প্রতিটি রুটে যত খাবারের দোকান রয়েছে সেই দোকানগুলিতে বড় বড় ব্যানার দিয়ে লিখতে হবে দোকান মালিকের নাম। যার উদ্দেশ্য, পুণ্যার্থীরা যাতে আলাদা ভাবেন চিনতে পারেন হিন্দু ও মুসলিম দোকানগুলি। এই ঘটনায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী শিবির। জাভেদ আখতার, সোনু সুদদের মতো সেলেবরা এই নির্দেশিকার বিরোধিতা করেন। প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন বিজেপির (BJP) জোটসঙ্গী চিরাগ পাসওয়ানও। তাঁদের বক্তব্য, এই নির্দেশিকা বৈষম্যমূলক। সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় সারির নাগরিক হিসাবে দেগে দেওয়ার চেষ্টা। এমনকী যোগীরাজ্যকে নাৎসি জার্মানির সঙ্গে তুলনা করেন জাভেদ আখতার। তুমুল বিতর্কের মাঝেই রবিবার মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, "এই ধরনের নির্দেশ সংবিধানের ১৭ নম্বর ধারাকে লঙ্ঘন করে। এটা শুধুমাত্র সংবিধান বিরোধী নয়, অস্পৃশ্যতাকে ইন্ধন ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভেদাভেদ।”
[আরও পড়ুন: অতীত থেকে শিক্ষা, ধর্মীয় উৎসবে অশান্তি এড়াতে নুহতে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা]
বিতর্ক চরম আকার নিতেই এবার যোগীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। জানা গিয়েছে, 'অ্যাসোসিয়েসান অফ প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটস' নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই মামলা দায়ের করেছে। মামলাটি উঠেছে বিচারপতি হৃষীকেশ রয় এবং বিচারপতি এসবিএন ভট্টির ডিভিশন বেঞ্চে। এই ধরনের সংবিধান বিরোধী নির্দেশিকা যাতে প্রত্যাহার করা হয় সেই আবেদন জানানো হয়েছে আদালতের কাছে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রকাশ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ’, কানোয়ার যাত্রায় নেমপ্লেট বিতর্কে যোগীকে তোপ ওয়েইসির]
এদিকে রবিবার নতুন করে যোগী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তাঁরই শরিক জয়ন্ত চৌধুরি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, “মনে হয় কোনও কিছু না ভেবেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, তাই এখনও জেদ ধরে বসে রয়েছে। তবে এখনও সময় আছে, সরকারের উচিত এই বিষয়টিকে এত বেশি গুরুত্ব না দেওয়া। কানোয়ার যাত্রীদের জাতি-ধর্ম নিয়ে কেউ ভাবিত নয়। যাঁরা কানোয়ার যাত্রীদের সেবা করেন, তাঁদের পরিচয় নিয়েও এত ভাবার দরকার নেই।”