সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিংবদন্তি কাপুর পরিবারের ঐতিহ্য তিনি বহন করে চলেছেন অভিনেত্রী হিসেবে। তিন দশক ধরে। নিজের সেই বর্ণময় অভিজ্ঞতার কথাই করিশ্মা কাপুর সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন কলকাতার তাজ বেঙ্গলে। লেডিজ স্টাডি গ্রুপের জমজমাট অনুষ্ঠানটি ছিল একেবারে 'হাউসফুল'। অভিনেত্রীর দীর্ঘদিনের বন্ধু, ইনফ্লুয়েন্সার, শিল্পোদ্যোগী কল্যাণী সাহা চাওলা এবং লেডিজ স্টাডি গ্রুপের (Ladies Study Group) সভাপতি মিনি জুনেজার সঙ্গে তাঁর কথোপকথন ছিল রীতিমতো উপভোগ্য। অনুষ্ঠানের শেষে দিলেন সাফল্যের মন্ত্র, ''যেটায় বিশ্বাস করো সেটাই করো। সাফল্য তোমার পিছু নেবে।''
'বলিউড অ্যান্ড বিয়ন্ড' নামের ওই অনুষ্ঠানে করিশ্মা (Karisma Kapoor) জানালেন, ছোটবেলা থেকেই কীভাবে ছবিতে অভিনয় করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি। 'প্রেমরোগ' ছবির সেটে যেতেন ছোট্ট করিশ্মা। আর তখন থেকেই সেই স্বপ্ন দানা বাঁধতে থাকে। তিনি ও করিনা, কাউকেই ছবিতে নামার জন্য কেউ জোর করেনি। স্রেফ প্যাশন থেকেই তাঁরা অভিনয়কে বেছে নিয়েছিলেন। জানালেন, 'দিল তো পাগল হ্যায়' ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার খবর তাঁকে দেন বান্ধবী টাব্বু। যা তিনি প্রথমে শোনার পর বিশ্বাস করতে পারেননি। হৃদয়ঙ্গম করতে সময় লেগেছিল।
'প্রেম কয়েদি' ছিল প্রথম ছবি। এর পর 'রাজা হিন্দুস্তানি', 'দিল তো পাগল হ্যায়', 'দুলহন হাম লে জায়েঙ্গে', 'বিবি নম্বর ওয়ান', 'কুলি নম্বর ওয়ান'-এর মতো অসংখ্য ছবি। আমির, সলমন, শাহরুখ- তিন খানের সঙ্গেই কাজ করা। করিশ্মার অসাধারণ কেরিয়ারে রয়েছে ৫০টিরও বেশি ছবি। সেকথা বলতে গিয়ে নায়িকা উল্লেখ করলেন ডেভিড ধাওয়ানের সঙ্গে করা ১২টি ছবির কথাও। গোবিন্দা ও সলমনের সঙ্গে সেই ছবিগুলির সব কটিই বক্স অফিসে চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে বেশ অনেকটা সময়ের জন্য রুপোলি পর্দা থেকে দূরেই ছিলেন করিশ্মা। যে অভিজ্ঞতার কথা তিনি লিখেছেন তাঁর 'মাই ইয়াম্মি মাম্মি গাইড: গেটিং প্রেগন্যান্ট টু লুজিং অল দ্য ওয়েট অ্যান্ড বিয়ন্ড' বইয়ে। সেই সময়টা তিনি কতটা উপভোগ করেছেন, সেকথা এদিনের অনুষ্ঠানেও সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন অভিনেত্রী।
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালি নিয়ে ভুয়ো ভিডিও প্রচারের অভিযোগ, হাই কোর্টের দ্বারস্থ গঙ্গাধর কয়াল-সহ ২ বিজেপি নেতা]
এই মুহূর্তে তিনি কলকাতায় একটি ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত। তবে সেবিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি করিশ্মা। বরং এই কয়েক দশকে কতটা বদলেছে বিনোদন দুনিয়া, সেবিষয়ে বিশদে কথা বলতে দেখা গেল তাঁকে। জানালেন, তিনি যখন প্রথম ইন্ড্রাস্ট্রিতে আসেন, সেই সময় অভিনেত্রীদের অনেক সময়ই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঝোপের আড়ালে যেতে হত। অথচ আজ রীতিমতো গাড়ির সারি থাকে নায়িকাদের সঙ্গে। আগে যেখানে সেটে এসে জানতে হত কাজের বিষয়ে, সেখানে এখন আগেভাগেই পুরো স্ক্রিপ্ট দিয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, অনুষ্ঠানের আয়োজন লেডিজ স্টাডি গ্রুপ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালে। উদ্বোধন করেছিলেন বাংলার তৎকালীন রাজ্যপাল পদ্মজা নাইডু। সদ্য সংস্থার দায়িত্ব নিয়েছেন মিনি জুনেজা। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ''এই সংস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমি যুক্ত। সেখানে এমন পদ পেয়ে গভীরভাবে সম্মানিত বোধ করছি।'' সেই সঙ্গেই তিনি জানান, জার্মান লেখক ও অধ্যাত্মবাদী একহার্ট টোলের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি কাজ করবেন। আর তাঁর সভাপতিত্বে সংস্থার থিম হল 'দ্য পাওয়ার অফ নাউ'। অর্থাৎ এই মুহূর্তের শক্তি। সেটাকেই পাথেয় করে লেডিজ স্টাডি গ্রুপকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান মিনি।