সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনভর টানাপোড়েন, নাটক। তারপরেও বৃহস্পতিবার আস্থা ভোট হল না কর্নাটকে। রাজ্যপালের চিঠিও গ্রাহ্য করলেন না স্পিকার কে আর রমেশ কুমার। উলটে বিধানসভা অধিবেশন শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মুলতবি করে দিলেন। যার জেরে রাতভর বিধানসভা ভবনেই থাকলেন ক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়করা। বিকেলে রাজ্যপাল বাজুভাই বালা একটি কড়া চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামীকে। চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, আর টালবাহানা নয়। শুক্রবার বেলা দেড়টার মধ্যে বিধানসভায় আস্থা ভোট শেষ করতে হবে। রাজ্যপালের নির্দেশ মেনে আজ আস্থা ভোট না হলে স্পিকারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বিজেপি। কারণ অবিলম্বে ফ্লোর টেস্ট চাইছে গেরুয়া শিবির। তাদের এও অভিযোগ, আজও যদি আস্থা ভোট না হয়, তবে মনে করা হবে রাজ্যপালের নির্দেশ মানছেন না স্পিকার।
[ আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোয় যুক্ত হতে হবে, বাংলায় দলের সাংসদদের পরামর্শ মোদির ]
কুমারস্বামীকে বালা জানিয়েছেন, যেভাবে আস্থা ভোট না করে এদিন স্পিকার বিধানসভা মুলতুবি করেছেন তা গণতান্ত্রিক কাঠামোয় চলতে পারে না। লিখেছেন, “আমার কাছে এসে ১৫ জন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। দু’জন বিধায়ক ঘোষণা করেছেন তাঁরা সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছেন। এই অবস্থার প্রেক্ষিতেই আমি আপনাকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখাতে বলেছি। শুক্রবার দেড়টার মধ্যে তা দেখাতে হবে।”
বৃহস্পতিবার আস্থা ভোট হলে জেডি (এস)-কংগ্রেস জোট সরকারের পতন কার্যত নিশ্চিত ছিল। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর হুইপ মেনে জোটের বিদ্রোহী বিধায়করা আস্থা ভোটে অংশ নেবেন না বলে জানান। বিধানসভায় বিতর্কের শুরুতেই বিরোধী দলনেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা এক দিনেই আস্থা ভোট প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। পালটা আস্থা প্রস্তাব পেশ করে ইয়েদুরাপ্পাকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, বিরোধী দলনেতার খুব তাড়া রয়েছে।”
দিনের বেশির ভাগ সময়ই সরকার পক্ষ ব্যস্ত ছিল কংগ্রেস বিধায়ক শ্রীমন্ত পাটিলকে অপহরণের অভিযোগ নিয়ে। দলের অন্য বিধায়কদের সঙ্গেই বেঙ্গালুরুতে ছিলেন শ্রীমন্ত। কিন্তু তাঁকে বুধবার মুম্বইয়ে দেখা যায়। কর্নাটকের মন্ত্রী ডিকে শিবকুমার অভিযোগ করেন, “বিজেপি শ্রীমন্তকে অপহরণ করেছে। বিধায়কদের পরিবার আমাকে ফোন করে এ কথা বলেছেন।” পরে জানা যায়, শ্রীমন্ত বুকে ব্যথা নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন।
[ আরও পড়ুন: চন্দ্রযান ২-এর পুনরুৎক্ষেপণ দেখতে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু শুক্রবার থেকে ]
পাশাপাশি, এদিন সকালেই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী ও কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সিদ্দারামাইয়া। তাঁদের দাবি, ‘হুইপ জারি করা সাংবিধানিক অধিকার’। শীর্ষ আদালতের রায় ও সাংবিধানিক অধিকার এই দুইয়ের ‘দ্বন্দ্ব’-এর কথা স্পিকারকেও জানান তাঁরা। বারবার বিধানসভাতেও সেই প্রসঙ্গ উঠে আসে। ১৫ বিধায়কের ইস্তফার ফলে টলমল করছে কর্নাটক জোট সরকার। ইস্তফা গৃহীত হলে বা আস্থা ভোটে অংশ না নিলে, সরকারের পক্ষে থাকবেন ১০১ জন বিধায়ক। বিজেপির পক্ষে বিধায়কের সংখ্যা হবে ১০৭। ম্যাজিক ফিগার ১০৫। সরকার গড়তে পাল্লা ভারী হবে বিজেপির। তবে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দলে টানার চেষ্টা চালাচ্ছে কংগ্রেস।
The post রাতভর কর্নাটক বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা, শুক্রবার হতে পারে আস্থা ভোট appeared first on Sangbad Pratidin.