shono
Advertisement

উরু এফোঁড়-ওফোঁড় করে ঢুকল রড, জটিল অস্ত্রোপচারে কিশোরকে বাঁচাল কাটোয়া হাসপাতাল

অসাধ্য সাধন করলেন চিকিৎসক, বলছেন রোগীর আত্মীয়রা।
Posted: 06:46 PM Jul 03, 2022Updated: 06:48 PM Jul 03, 2022

ধীমান রায়, কাটোয়া: উরু এফোঁড়-ওফোঁড় করে ঢুকে গিয়েছিল লোহার রড (Rod)। ওই অবস্থায় ১৬ বছরের কিশোরকে তড়িঘড়ি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে জটিল অস্ত্রোপচারে (Critical Operation) কার্যত অসাধ্য সাধন করলেন চিকিৎসক। প্রায় এক ঘন্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে রোগীর শরীর থেকে রড বের করলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের শল্যবিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপ কুমার বাড়ী। কিশোর এখন বিপন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেতুগ্রামের সীতাহাটি পঞ্চায়েতের উত্তরপাড়ায় বাড়ি অভিজিৎ মাজির। ১৬ বছরের অভিজিতের বাবা ছোটন কর্মসূত্রে কেরলে রয়েছেন। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মা দীপালিদেবীর সঙ্গে একা বাড়িতে থাকে অভিজিৎ। শনিবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ক্লাবঘরে ক্যারাম খেলে অভিজিৎ সাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিল। নৈহাটি গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ঢালাই করার আগে ওই নির্মীয়মাণ কালভার্টে রডের খাঁচা বেঁধে রেখেছিল ঠিকাদার সংস্থার কর্মীরা। কালভার্ট পারাপারের জন্য সাময়িকভাবে একটি বাঁশের মাচা তৈরি করে রাখা ছিল। অভিজিৎ সাইকেলে চড়ে ওই মাঁচা পারাপারের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। তখনই রডের খাঁচায় বেড়িয়ে থাকা একটি রড তার বাঁ পায়ের উরুতে বিঁধে, এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায়।

যন্ত্রণায় কাতরানো অভিজিতের গলা পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। রডবিদ্ধ অভিজিৎকে উদ্ধার করতে গিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর উরুতে বিঁধে যাওয়া রডটি ছিল যথেষ্ট লম্বা, খাঁচার সঙ্গে বাঁধা। তাই রডের কিছু অংশ কেটে ওই অবস্থায় অভিজিৎকে উদ্ধার করা হয়। বাইকে চাপিয়ে প্রতিবেশীরা শাঁখাই ফেরিঘাট পেরিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে তাকে নিয়ে যান। কাটোয়া (Katwa) মহকুমা হাসপাতালের সার্জেন সন্দীপ কুমার বাড়ী বলেন,” রোগীর হাঁটুর একটু উপরে থাইয়ের মধ্যে রডটি এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে গিয়েছিল। মাংসপেশির মধ্যেই রডটি ঢুকে ছিল। কিছু শিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেগুলি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যদি সময় নষ্ট করা হত, তাহলে রোগীর প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল।”

[আরও পড়ুন: মাংসের পর ডিমের দামেও ছেঁকা, পকেটে চাপ মধ্যবিত্তের]

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ মিলিমিটারের ৬২ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের ওই রড-সহ অভিজিতকে হাসপাতালে নিয়ে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে সন্দীপবাবু অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন। তাকে সহযোগিতা করেন কাটোয়া হাসপাতালের ওটি বিভাগের কর্মী কাজল দাস। প্রায় এক ঘন্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। এখন হাসপাতালে পুরুষ বিভাগে চিকিৎসাধীন অভিজিৎ। সীতাহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান বিকাশ বিশ্বাস বলেন, “ওই কিশোরের চিকিৎসার জন্য যা খরচ হবে তা পঞ্চায়েত থেকে বহন করা হবে। আমরা পরিবারটির পাশে আছি।”

[আরও পড়ুন: বাবা-মা জোর করে ছাদনাতলায় বসাচ্ছে, বিয়ে রুখতে সটান থানায় দশম শ্রেণির ছাত্রী]

অভিজিতের মা দীপালিদেবী বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, ছেলেকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। কাটোয়া হাসপাতালে যে চিকিৎসা হবে তা আশা করতে পারিনি।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ সৌভিক আলম বলেন, “কাটোয়া হাসপাতালে বর্তমানে পরিকাঠামো অনেক উন্নত হয়েছে। মানুষ ভাল পরিষেবা পান। ওই রোগীর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে। রোগীকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার