সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত যদি ধর্মনিরেপক্ষ না থাকে তাহলে নিজের সারবত্তা হারাবে। কথাগুলি বলে গিয়েছিলেন সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের ভারতে এই বার্তা খানিকটা ‘কেতাবি বুলি’র মতো শোনায়। ‘এক বৃন্তের দুটি কুসুম’ এখন ধর্মের নামে হানাহানি, আর গণপিটুনিতে মেতে উঠেছে। তবে, এসবের মধ্যেও আশার খবর শোনা যায়। এসবের মধ্যেও দেখা যায় সম্প্রীতির নজির।
[‘বাড়ি কখনও নোংরা রাখতে আছে?’, ত্রাণশিবির পরিষ্কার করে কৃতজ্ঞতার বার্তা]
বলা হয়, বিপদের সময়ই চেনা যায় আসল বন্ধুকে। হ্যাঁ, বিপদের সময়ই আসল বন্ধুদের চিনেছেন কেরলের বন্যা দুর্গত ১৭ টি পরিবার। জলের তোড়ে ঘরবাড়ি, ভিটেমাটি সব শেষ গিয়েছে। হাতে টাকাকড়ি যা ছিল, তাও শেষ। এই অবস্থায় প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে গিয়েছিল ৭৭ জন কেরলবাসীর। তাদের অধিকাংশই আবার হিন্দু। সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেন মুসলিম ভাইয়েরা। অন্য কোথাও নয়, তাদের আশ্রয় দেওয়া হল এলাকার সবচেয়ে বড় মসজিদে। কেরলের আকামপড়মের জামা মসজিদেই বন্যার এই ভয়াবহ দিনগুলি কাটিয়েছেন ওই ১৭টি হিন্দু পরিবার। ৭৭ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন মসজিদে। সেই দলে ছিলেন বৃদ্ধ, মহিলা ও শিশুরাও। হিন্দু ভাই-বোনেদের জন্য চাঁদা তুলে নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থাও করতেন মুসলিমরাই।
[‘গোমাংস ভক্ষণকারীদের সাহায্য নয়’, কেরল বিপর্যয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ধর্মগুরুর]
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান পি টি উসমান জানাচ্ছেন, “আমাদের গ্রামে মোট ২৬ টি পরিবার আশ্রয় চেয়েছিল। তাঁর মধ্যে ১৭টি ছিল হিন্দু পরিবার। আমরা গত ৮ আগস্ট মসজিদে একটা ত্রাণ শিবির খুলি। যদিও শুরুর দিকে দুবেলা খাবার তুলে দিতে পারিনি সবার মুখে। ১৪ আগস্ট থেকে এই পরিবারগুলির দায়িত্ব পুরোপুরি ছিল আমাদের কাধেই।”
শুধু তাই নয়, সম্প্রীতির আরও একাধিক নজির দেখল বানভাসী কেরল। মালাপ্পুরমে জল নেমে যাওয়ার পর দুটি হিন্দু মন্দির পরিষ্কার করে দিয়ে নজির গড়লেন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা। সম্প্রীতির বার্তা দিতে পিছিয়ে নেই হিন্দুরাও। বুধবার কুরবানির ইদে মুসলিমদের নামাজ পড়ার জন্য খুলে দেওয়া হয় ত্রিশূর জেলার একটি মন্দির। কারণ এলাকার একমাত্র মসজিদ এখনও জলের তলায়।
The post বিপদের বন্ধু মুসলিমরাই, কেরলে মসজিদে আশ্রয় পেলেন ১৭ টি হিন্দু পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.