সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এবার কেরল বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করল রাজ্যের সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বাম সরকার। এই মর্মে বৃহস্পতিবার কেরল বিধানসভার একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন যে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সারা দেশব্যাপী যে প্রতিবাদ চলছে, তার তীব্র প্রভাব আগামী দিনে কেরলের (Kerala) উপর পড়বে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে এই প্রতিবাদের জেরে আগামী দিনে অন্য রাজ্য থেকে কেরলে খাদ্য সামগ্রীর আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে রাজ্যে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেবে।
[আরও পড়ুন: ইউহানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসেবের ১০ গুণ বেশি! সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর দাবি]
কিন্তু এই বিশেষ অধিবেশন ডাকার ক্ষেত্রে প্রথমে অনুমতি দিতে রাজি হননি রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। উল্লেখ্য, গত ২৩ ডিসেম্বর এই বিশেষ অধিবেশনটি ডাকতে চেয়ে রাজ্যপালের কাছে দরবার করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তখন সরকারকে সেই অনুমতি দিতে রাজি হননি তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নকে লেখা তাঁর জবাবি চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন যে এমন একটি বিষয়ের উপরে সরকার বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চাইছে যার সমাধান সূত্র বার করার কোন এক্তিয়ারই রাজ্যের নেই। এদিকে, রাজ্যের একমাত্র বিজেপি বিধায়কও বিজয়নের প্রস্তাব সমর্থন করেছেন।
রাজ্যপালের এই চিঠি নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত চরমে পৌঁছোয়। রাজ্যপালের এহেন মন্তব্যকে দুঃখজনক আখ্যা দেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন (Pinarayi Vijayan)। ফের একবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চেয়ে সরকার চিঠি দেয় রাজ্যপালকে। এই চিঠি পাওয়ার বেশ কিছুদিন পর বিশেষ অধিবেশন ডাকার অনুমতি দেন তিনি। এক ঘণ্টার এই বিশেষ অধিবেশন শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকালে। বিজয়ন বলেন যে খাদ্যসামগ্রীর জন্য অধিকাংশ সময় কেরলকে বাইরের রাজ্যের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই দেশের অন্যান্য রাজ্যের কৃষকেরা যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তাঁর প্রভাব যে এই রাজ্যের উপর পড়বে তা বলাই বাহুল্য।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের আনা নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন সারা দেশের কৃষকরা। আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানী দিল্লীর বিভিন্ন সীমানায় চলছে অবস্থান বিক্ষোভ। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হলেও এখনও অবধি কোন রফাসূত্র বেরোয়নি। কৃষকদের বোঝাতে আসরে নামতে হয়েছে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কে। কিন্তু তাঁদের দাবি থেকে এক চুলও নড়ানো যায়নি কৃষকদের।