পারমিতা পাল: রাজনীতির ময়দান কাঁপিয়েছে ‘খেলা হবে’ (Khela Hobe)। বঙ্গজয়ের পর গোটা দেশেই জনপ্রিয় হয়েছে স্লোগানটি। ‘দেশজয়ে’র পর এবার পুজোর ময়দান মাতাতে চলেছে এই স্লোগান। থুড়ি স্লোগান নয়, থিম (Theme)। মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় ভবানীপুর দুর্গোৎসব সমিতির দুর্গোপুজোর মণ্ডপের থিম ‘খেলা হবে’। তবে পুজোকর্তারা আগেভাগেই বলে রাখছেন, এই থিমের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই। বরং স্রেফ সবুজমাঠে খেলে বেড়ানোই এই থিমের মূল কথা।
স্কুলে স্কুলে সরস্বতী পুজো হয়। অর্থাৎ পড়াশোনার আবহে আরাধনা হয় বাগদেবীর। তেমনই যদি খেলার আবহে দেবী দুর্গার পুজো হত, তাহলে কেমন হত? ঠিক এই ভাবনা থেকেই ভবানীপুর দুর্গোৎসব সমিতির থিম ‘খেলা হবে।’ সবুজ মাঠে খেলার আবহে পুজিত হবেন দেবী। একচালার দেবীপ্রতিমা আসবেন দুই চিরপ্রতিদ্ববন্দ্বী দলের খেলোয়াড়দের কাঁধে চেপে। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দলের খেলোয়াড়দের কাঁধে চেপে আসবেন মা। ঠিক যেন পুরনো দিনের জমিদারি কায়দা। সামনে থাকবেন পাহারাদারেরা। খেলার আমেজ দিতে পাহারাদারের মধ্যে বর্শা হাতে থাকবেন অলিম্পিকে সোনাজয়ী নীরজ চোপড়া। মণ্ডপ জুড়ে থাকবে বিভিন্ন খেলার সরঞ্জাম। হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন খেলা। শুধু তাই নয়, থাকতে পারে লাইভ গেম জোন। অর্থাৎ প্রতিমা দর্শন করতে এসে বাচ্চারা মজে যেতে পারে খেলায়। তবে এবিষয়টা সম্পূর্ণভাবে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি ও করোনাবিধির উপর নির্ভর করবে।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কাঁপল কাবুল বিমানবন্দর, মৃত অন্তত ৫০]
হঠাৎ এমন থিমের ভাবনা কেন এল মাথায়? ফোনে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে এই প্রশ্নে উত্তর দিলেন পুজো কমিটির কর্তা শুভঙ্কর রায়চৌধুরী। তিনি জানান, “করোনা পরিস্থিতিতে ঘরে বন্দী শিশুরা। তাঁরা সবুজ মাঠ, বলে পা ছোঁয়াতে পারছেন না। তাদের কাছে খেলা মানে শুধু অনলাইন গেম বা মোবাইল গেম। কিন্তু এটা তো খেলা নয়। খেলার অর্থ মাঠে নেমে খেলা। এই ভাবনা থেকেই এই থিমের উৎপত্তি।” তিনি আরও জানান, “এবার ১৬ আগস্ট ‘খেলা হবে দিবস’ পালন হয় সারা রাজ্যজুড়ে। তখনই আমরা ঠিক করলাম পুজোতেও ‘খেলা হবে’ দিনটিকে ব্যবহার করব। পুজোর সময় আরও অনেক চমক অপেক্ষা করছে।”
[আরও পড়ুন: Afghanistan Crisis: হামিদ কারজাই ও আবদুল্লা আবদুল্লাকে গৃহবন্দি করল তালিবান]
থিম বানাচ্ছেন শিল্পী সৌমেন ঘোষ। তিনি নিজেই গড়ছেন দেবীপ্রতিমা। তাঁর ডুমুরজলার ওয়ার্কশপে জোরকদমে চলছে কাজ। শিল্পী বলছেন, “খেলা হবে শুনলেই অনেকে নেতিবাচক কথা ভাবছেন। কিন্তু খেলা হবে মানে তো নেতিবাচক নয়। এটা বিশুদ্ধ ক্রীড়াপ্রেম। আর যিনি এটার স্রষ্টা তিনি মনেপ্রাণে খেলা ভালবাসেন। তার জন্যই আজ ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলতে পারছে। তাঁর এহেন খেলার প্রতি ভালবাসাকে আমজনতার কাছে তুলে ধরতে চাই।” সবমিলিয়ে এবার দুর্গাপুজোর ময়দানও কাঁপাবে ‘খেলা হবে’ থিম।