shono
Advertisement

‘মণীশ পাণ্ডের ডিএনএ-তে আমি বলে কিছু নেই’

সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য বিশেষ আইপিএল কলাম লিখছেন কেকেআর অধিনায়ক৷ The post ‘মণীশ পাণ্ডের ডিএনএ-তে আমি বলে কিছু নেই’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:53 AM Apr 20, 2017Updated: 10:58 AM Jul 11, 2018

সংবাদ প্রতিদিন-এর জন্য বিশেষ আইপিএল কলাম লিখছেন কেকেআর অধিনায়ক৷ বাড়িতে দেড় দিন কাটানোর পর গম্ভীরের মনে হচ্ছে ফেসটাইম না থাকলে ছোট্ট আজিনের সঙ্গে ‘বিচ্ছেদ’-এর যন্ত্রণা সামলানো যেত না৷

Advertisement

আমার ছোট্ট, মিষ্টি মেয়েটার গর্বিত বাবা আমি৷ ও আমার কাছে গোটা পৃথিবী৷ দুনিয়ার বাদবাকি পিতাদের মতো আমিও ওর জন্য সব কিছু করতে পারি৷ আর সব দেখেটেখে মনে হয়, আজিনও ওর মা-র চেয়ে আমাকে বেশি পছন্দ করে৷ নাতাশা অন্য রকম মতামত দিতেই পারে৷ কিন্তু আমি সে ভাবেই ভাবতে চাই৷ আজিন যে দিন থেকে আমাদের জীবনে এসেছে, সেই ১ মে, ২০১৪ থেকে দেখেছি ওকে ছেড়ে থাকতে খুব কষ্ট হয়৷ এমনকী সেটা ক্রিকেটের জন্য হলেও৷ গাড়িতে আমাকে লাগেজ তুলতে দেখলে, বা বাই বললে, তুমুল কান্নাকাটি করতে থাকে৷ আমি চেষ্টা করি, ও স্কুলে থাকার সময় তাই বেরিয়ে যাওয়ার৷ ফেসটাইম, হোয়াটসঅ্যাপ ভিডিও কলকে ধন্যবাদ দিতে হবে৷ কারণ, ওগুলো আছে বলেই আজিনের সঙ্গে ‘বিচ্ছেদের’ যন্ত্রণা তবু কিছুটা সামলে দেওয়া যাচ্ছে৷

[রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে দিল্লিকে হারিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক নাইটদের]

সোমবার দিল্লি ম্যাচটার পর কোচ জাক কালিস যখন আমাদের দু’দিনের ছুটি দিল, এক কথায় দারুণ লাগছিল৷ ঠিক করে ফেললাম, টিম কলকাতা চলে যাক৷ আমি বাড়িতে থেকে যাব৷ ক্লান্তিকে পাত্তা না দিয়ে মঙ্গলবার সকাল আটটায় মেয়েকে স্কুলে ছাড়তেও চলে গিয়েছিলাম৷ স্কুলে আমার ছোট্ট ‘পাম্পকিন’ (আজিনকে আমি এই নামেই ডাকি) ওর বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল৷ বৃন্দা, শেহরাজ সিং, ভূমি, বর্ষা, প্রীষা– কত বন্ধু ওর! জোয়া-জারা নামের যমজও পেয়েছি৷ বিশ্বাস করুন, এর চেয়ে বেশি নিষ্পাপ গ্যাং আগে দেখিনি৷ সবচেয়ে ভাল লাগছিল দেখে যে, ওরা কেউ জানে না আমি কে৷ বা কেন ওদের টিচাররা আমার সঙ্গে সেলফি তুলছে৷ ওদের একমাত্র আগ্রহের বিষয় হল জোয়ার নতুন হেয়ারকাট আর সাইরাজের নিয়ন রঙা ব্যাগ৷ বাকি সব গোল্লায় যাক! তার পর দুপুর একটা নাগাদ আজিনকে স্কুল থেকে তুলে আমরা দু’জন বসন্ত বিহারের প্রোমেনেড মলে ঢুকে পড়লাম৷ দেদার সেলফি আর অটোগ্রাফের ফাঁকেও ওখানে আমি আজিনকে ডোনাট কিনে খাইয়েছি৷ তিনটে লেহেঙ্গা, একটা হলুদ স্যুট আর একজোড়া জুতো কিনে দিয়েছি৷ কেউ কেউ আমি আর আজিন– দু’জনের সঙ্গে সেলফি তুলছিল৷ তা দেখলাম, ও সেলফি তোলার ক্ষেত্রে বেশ এক্সপার্ট হয়ে গিয়েছে৷ নিশ্চয়ই নাতাশার ট্রেনিং আছে এর পিছনে৷ ফেরার সময় গোটা রাস্তাটা গাড়িতে ঘুমোতে-ঘুমোতে ফিরল আজিন৷ ওর খুব খুশি আর তৃপ্ত দেখাচ্ছিল৷

কলকাতায় ঢুকলাম সন্ধেয়৷ পুরো সকালটা বাড়ির সুইমিং পুলে আজিনের সঙ্গে কাটানোর পর৷ ভাবছি, রাতে কোনও একটা সময় ওর সঙ্গে ফেসটাইম করে নেব৷

[‘নারিনের কিটে তিনটি ব্যাট আবিষ্কার করেছি’]

যা-ই হোক, কাজের কথায় ফিরি৷ আমাদের টিম হোটেলের লবিতে অদ্ভুত একটা এনার্জি টের পাই৷ মণীশ পাণ্ডের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল৷ ও তখন জিম করে ফিরছে৷ ওকে দেখলে শিশুসুলভ মুখের এক দৈত্য বলে মনে হয়৷ যে কি না সব সময় তৈরি থাকে দায়িত্ব নিতে, শেষ পর্যন্ত থেকে যেতে৷ মণীশ দুর্দান্ত ব্যাটসম্যান৷ অসাধারণ ফিল্ডার৷ কিন্তু তার চেয়েও বড় হল ও দারুণ টিমম্যান৷ নেটে কখনও দেখিনি নিজের ব্যাটিং শেষ করে বেরিয়ে যেতে৷ বরং দেখবেন, নিজের ব্যাট করা হয়ে গেলে মণীশ কখনও বাকি ব্যাটসম্যানদের থ্রো ডাউন দিচ্ছে৷ কাউকে ফিল্ডিং ড্রিলে সাহায্য করছে৷ মণীশ পাণ্ডের ডিএনএ-তে ‘আমি’ বলে কোনও জিনিস নেই৷ আমি তো মাঝেমধ্যে ওকে বাহবা দেওয়ার জন্য দাবাংয়ের বিখ্যাত ডায়লগটা ব্যবহার করি–‘কামাল করতে হো পাণ্ডেজি!’

আর সোমবার কেকেআরকে জেতানোর জন্য সব কৃতিত্ব কি মণীশের প্রাপ্য নয়? বলতে খারাপ লাগছে, কিন্তু এটা সত্যি যে কেকেআর মাঝেমধ্যেই সহজ ম্যাচগুলোকে কঠিন করে তোলে৷ শেষ ম্যাচটা তারই উদাহরণ৷ আমার মতে, ম্যাচটা বড়জোর উনিশ ওভার পর্যন্ত যেতে পারত৷ উনিশ ওভারের মধ্যে আমাদের শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল৷ কিন্তু তা না করে, আমরা ছোট একটা ব্যাপারকে কত বড় করে তুললাম৷ আমার কাছে ম্যাচটার সবচেয়ে ভাল নির্যাসটা ধরেছে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত একজন৷ ইংল্যান্ডের বাঁ হাতি স্পিনার মন্টি পানেসর৷ ও টুইট করেছিল, ‘শেষ পর্যন্ত কেকেআরই কেকেআরকে হারাচ্ছে৷ আর দিল্লি ডেয়ারডেভিলস দাঁড়িয়ে দেখছে৷’ মন্টি ঠিক বলেছে৷ আমরা প্রায় হারাকিরি করেই ফেলেছিলাম৷ আপনাদের জন্য আরও বেশি লিখতে চাইছিলাম আমি৷ কিন্তু আজ এই পর্যন্তই থাক৷ আসলে আজিনের সঙ্গে ফেসটাইম করতে খুব ইচ্ছে করছে৷

(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া)

The post ‘মণীশ পাণ্ডের ডিএনএ-তে আমি বলে কিছু নেই’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement