shono
Advertisement

‘আমার স্বামীকে ভোট দেবেন না,’পুরভোটে বিজেপি প্রার্থীর হার চান খোদ স্ত্রী!

কেন এমন চান তিনি?
Posted: 11:41 AM Dec 11, 2021Updated: 07:36 PM Dec 11, 2021

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গৃহযুদ্ধ বুঝি একেই বলে! একই পরিবারে একদিকে পদ্ম, অন্যদিকে জোড়াফুল! স্বামী বিজেপি (BJP) প্রার্থী। আর সেই ওয়ার্ডেই তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নেমে স্বামীকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন স্ত্রী। কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে ভোটপ্রচারের অভিনব এই ছবি ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে। যা কিনা মহানগরের পুর রাজনীতিতে কার্যত নজিরবিহীন। রাসবিহারী বিধানসভা এলাকার ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী গৌরাঙ্গ সরকার। পেশায় চার্টার্ড অ্যকাউন্ট্যান্ট, এই প্রথম ভোটে লড়া। দলের রাসবিহারী ১ নম্বর মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গবাবু সকাল থেকে রাত এক করে ভোটের ময়দানে পড়ে রয়েছেন।

Advertisement

কালীঘাটের নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিটের সরকার পরিবারের কর্তার অন্তরাত্মা গেরুয়ায় মোড়া হলেও গৃহিণী কিন্তু রাজনৈতিকভাবে একেবারে উলটো মেরুতে। গৌরাঙ্গবাবুর স্ত্রী লোপিতা সরকার কট্টর তৃণমূল সমর্থক। স্বামী বিজেপি প্রার্থী হতেই পারেন, তবে নিজের মতাদর্শে অনড় লোপিতাদেবী এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনেই প্রচার করছেন। নাগরিকদের কাছে তাঁর আবেদন, বিজেপিকে একটি ভোটও নয়।

[আরও পড়ুন: শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নতি, একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইস্তেহার প্রকাশ করবে তৃণমূল]

ঘটনা হল, সরকার পরিবারে পাল্লা ভারী তৃণমূলেরই। গোখেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক লোপিতাদেবীর পাশে রয়েছেন তাঁর ছোট ছেলে ও পুত্রবধূ– দু’জনেই তৃণমূলের সমর্থক। বড় ছেলে ও ছেলের স্ত্রী বিদেশে থাকেন। আপনার বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে আপনার স্ত্রী, এতে কোনও অস্বস্তির মধ্যে পড়ছেন না?

“একেবারেই না।”– সাফ জবাব দিয়ে গৌরাঙ্গবাবুর পালটা প্রশ্ন, “ভোটের ময়দানে লড়াইয়ের ছায়া সংসারে পড়বে কেন?” বিজেপি প্রার্থী জানাচ্ছেন, “আমাদের দু’জনের মতাদর্শ আলাদা হলেও তার কোনও প্রভাব পরিবারে পড়ে না। আমরা যে যার মতো চলি, কেউ কারও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও তাই পূর্ণ স্বাধীনতা। আমাদের পরিবারে পূর্ণ গণতন্ত্র বিরাজ করে, এবং পাড়ার লোকও তা জানে।”

[আরও পড়ুন: রোমের পর নেপাল, ফের বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরে ‘না’ কেন্দ্রের]

তাহলে মিল কোথায় দু’জনের? গৌরাঙ্গবাবুর সরস মন্তব্য, “বাড়িতে দু’জনেই একই হেঁশেলে রান্না হওয়া একই খাবার খাই। আর দু’জনেই মোহনবাগানি।”

অন্য দিকে ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে বৃহস্পতিবারই একটি সভা থেকে বিজেপি প্রার্থী তথা নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে প্রচারে নেমে পড়েছেন লোপিতাদেবী। শুক্রবারও কালীঘাটের নকুলেশ্বর মন্দিরের সামনে তৃণমূলের হয়ে তিনি প্রচার করেছেন। স্বামী বিজেপি করছেন, আপনি তৃণমূল। সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থানে। কখনও স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করেননি?

হেসে লোপিতাদেবীর জবাব, “প্রথম প্রথম ওঁকে বোঝাতাম। তর্কাতর্কি হয়েছে। এখন আর কোনও কথা বলি না।” লোপিতাদেবীর কথায়, “আমি ভীষণভাবে বিজেপি বিরোধী। বিজেপি বিপজ্জনক রাজনৈতিক দল, দেশের অর্থনীতিকে পালটে দিচ্ছে, ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি চালাচ্ছে। আমি বরাবর তৃণমূল সমর্থক। ফেসবুকেও তৃণমূলের হয়ে প্রচার করেছি। কাজেই বাড়িতে আমার অবস্থানটা স্পষ্ট করা দরকার। সেটাই করেছি, তৃণমূলের হয়ে প্রচারে নেমেছি।” ‘গৃহযুদ্ধের’ নজির খাড়া করে ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটযুদ্ধে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এই মুহূর্তে সরকার পরিবারই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement