নব্যেন্দু হাজরা: ভোররাতে বউবাজারের (Bow Bazar) ১০ টি বাড়িতে ফাটল, মাটি থেকে জল বেরনোর আতঙ্ক। পরিস্থিতি দেখেশুনে নিরাপত্তার স্বার্থে আপাতত মেট্রোর কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল KMRCL। কবে থেকে ফের তা শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে মেট্রোর কাজ বেশিদিন ফেলে রাখতে চান না বলে জানিয়েছেন মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (CPRO)। ফলে চলতি বছরের মধ্যেই ফের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাবাদী কর্মীরা। এদিন ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ( Firhad Hakim) ও সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। মেট্রো কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।
বউবাজারের মদন দত্ত লেনে মাটির নিচে চলছিল কেমিক্যাল গ্রাউটিংয়ের (Chemical Grouting) কাজ। অর্থাৎ ক্রস প্যাসেজ তৈরির সময় মাটি শক্ত করার কাজ চলছিল। তার জন্য মাটিতে রাসায়নিক (Chemical) প্রয়োগ করা হয়েছিল। শুক্রবার থেকে শুরু হয় এই কাজ। ভবিষ্যতের বিপর্যয় এড়ানোর জন্যই কেমিক্যাল গ্রাউটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সেই পদ্ধতিই যে বিপদের কারণ হয় দাঁড়াবে, তা ভাবতেও পারেননি তাঁরা। সূত্রের খবর, এই কাজের দায়িত্বে ছিলেন সুইডেনের ইঞ্জিনিয়াররা।
[আরও পড়ুন: ঠিক যেন সিনেমা, ক্যানিংয়ের রহিমাকে ক্যানসারমুক্ত করল রেডিওই!]
বৃহস্পতিবার মাঝরাতেই মদন দত্ত লেনের অন্তত ১০ টি বাড়িতে ফাটল দেখা যায়, মাটি ফুঁড়ে জল ঢুকতে থাকে। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে ভোর হওয়া মাত্র প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। পরবর্তী সময়ে আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়াররা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেশুনে কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এই অবস্থায় কাজ চালিয়ে গেলে বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
এদিন ঘটনার খবর পেয়ে বউবাজারে পৌঁছন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি মেট্রো কর্তৃপক্ষের উপর অত্যন্ত বিরক্ত। তাঁর কথায়, ”আমি ইঞ্জিনিয়ার নই, কিন্তু দীর্ঘদিন পুরসভার আমার মনে হচ্ছে, যে জায়গায় মেশিন আটকে গেছিল ওখানে ওয়াটার পকেট তৈরি হয়েছে। ওয়াটার পকেট থেকে জল রিভার্স যাওয়ার জন্যই মাটি ধুয়ে কাদায় পরিণত হচ্ছে। এইরকম ভাবে চলতে থাকলে দুদিন অন্তর ফাটল দেখা দেবে।”
[আরও পড়ুন: ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ, এবার শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিস তমলুক থানার]
তিনি আরও জানান, ”আমি বসে আছি বৈঠক করার জন্য। কিন্তু শীর্ষস্তর থেকে একটা বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজন হলে ওই এলাকার কতগুলি বাড়ি ভেঙে ফেলে একেবারে নিচ থেকে পাইলিং করে সেখানে বিল্ডিং তুলে যার যত স্কোয়ার ফিট, সেটা দিতে হবে। দরকার হলে মেন রাস্তা থেকে এফএআর করতে হবে।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ এবং মাটি বিশেষজ্ঞদের ডেকে শুক্র-শনিবারের মধ্যে কথা বলা হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।