সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিশপ্ত চপার একযোগে কেড়ে নিল দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত (Bipin Rawat) এবং তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতকে। দেশ যেমন হারাল বিপিনের মতো বীর সন্তানকে, তেমনই শহিদ জওয়ানের স্ত্রীরা যেন হারালেন তাঁদের আপনজন মধুলিকাকে (Madhulika Rawat)।
যুদ্ধ যাঁদের স্বামীকে কেড়ে নিয়েছে, সেইসব নারীর পাশে আজীবন হাসিমুখে থেকেছেন মধুলিকা । তাঁদের উন্নতি, স্বনির্ভরতার দিকে ছিল তাঁর নজর। বুধবারের দুর্ঘটনায় সমাজসেবী মধুলিকার চলে যাওয়াও বহু নারীর কাছেই প্রিয়জন বিয়োগের সমতুল্য। চার প্রজন্ম ধরে ভারতীয় সেনার হয়ে কাজ করে চলেছে রাওয়াত পরিবার। সেই ঘরানা যেন বজায় ছিল মধুলিকার কাজেও। স্বামী যখন দেশের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন একদা মনস্তত্ত্বে স্নাতক মধুলিকাও সমাজের কল্যাণেই নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। যদিও তাঁর কাজের ঘরানা ছিল আলাদা। তবু দেশ ও সেনার স্বার্থেই আজীবন কাজ করে গিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: CDS Bipin Rawat: বিপিন রাওয়াতের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশ, শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির]
সেনারা যেমন দেশকে রক্ষা করেন, তেমনই তাঁদের আকস্মিক চলে যাওয়ায় সেনাদের পরিবার পড়ে গভীর শূন্যতার মুখে। সে শূন্যতা যেমন মানসিক, তেমন কিছুটা আর্থিকও বটে। এই দুই দিক চিন্তা করেই নিজের কাজের পরিধি নির্দিষ্ট করেছিলেন মধুলিকা। শহিদ জওয়ানদের স্ত্রীদের পাশে দাঁড়িয়ে শুধু মানসিক ভাবে তাঁদের চাঙ্গা করা বা সান্ত্বনা দেওয়া নয়, এই সমাজে তাঁদের নিজেদের পায়ে দাঁড় করানো অর্থাৎ স্বাবলম্বী করে তোলার জন্যও তিনি সচেষ্ট ছিলেন সর্বদা। তাঁর তত্ত্ববধানে নানারকম কোর্স করে আর্থিক স্বনির্ভরতার পথ খুঁজে পেতেন স্বামীহারা মহিলারা। শহিদ জওয়ানদের স্ত্রীদের প্রতি মধুলিকার এই সমবেদনা এবং তাঁদের জন্য তাঁর এই অক্লান্ত পরিশ্রমই তাঁকে করে তুলেছিল ‘আর্মি ওয়াইভস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর (Army Wives Welfare Association) সভাপতি।
[আরও পড়ুন: হাজারো যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, বহু সম্মানে সম্মানিত যোদ্ধা পরিবারের সন্তান বিপিন রাওয়াত]
এছাড়া ক্যানসার রোগীদের জন্য কাজ করতেন মধুলিকা। সমাজসেবামূলক বিভিন্ন প্রকল্পে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। বুধবারের দুর্ঘটনা আচমকা সেই যাত্রাপথে ইতি টেনে দিল। জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও মধুলিকা রাওয়াতের দুই কন্যা, কৃতিকা ও তারিণী যেমন হারালেন তাঁদের মা-বাবাকে, তেমনই মধুলিকার প্রয়াণে বহু নারীও হারালেন তাঁদের স্বজন।