অর্ণব আইচ: ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কলকাতা (Kolkata) থেকে ডাকাতি করে পালিয়েছিল। পরে অন্য এক মামলায় ধরা পড়ে বিহার পুলিশের হাতে। কিন্তু তারপরও গরাদের খাঁচা থেকে পাখি, থুড়ি, দুষ্কৃতী রাজকুমার রাই ফের পলাতক। মাত্র ৬,৭ মাসে বারবার এভাবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালানো আসামী যেন পাঁকাল মাছ! আর তাকে ধরতে নাজেহাল তদন্তকারীরা। এই মুহূর্তে কলকাতা পুলিশ সেই ডাকাতকে নাগালে পেতে জাল পেতেছে চারপাশে।
গত ডিসেম্বরে বেলেঘাটায় (Beleghata) এক মহিলা আইনজীবীর বাড়িতে লুটপাট চলে। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলার স্বামীই পরিকল্পনা করে ডাকাতি করিয়েছেন। আর নিজে হাতে লুটপাট চালিয়েছে কুখ্যাত ডাকাত রাজকুমার রাই। তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অসুস্থ হয়ে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভরতি হয় সে। কিন্তু মে মাসে সে হাসপাতাল থেকে পালায়। পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। জানতে পারে, নেপালে পালিয়েছিল। পরে বিহারের (Bihar)মোতিহারি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে রাজকুমার। কলকাতা পুলিশ তাকে হেফাজতে চায়।
[আরও পড়ুন: ‘ও দলিত মেয়েকে ছোঁবে না’, যৌন নির্যাতন মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিল কেরল আদালত]
মোতিহারি থানার পুলিশ জানায়, সেখানকার ইন্দ্রি গ্রামের গ্রামীণ ব্যাংকে ডাকাতি করার অভিযোগে সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাই তাকে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। বাধ্য হয়ে ফিরে আসে কলকাতা পুলিশের দলটি। মাঝে রাজকুমার অসুস্থতার অজুহাতে ভরতি হয় মোতিহারি হাসপাতালে। ৮ তারিখ জেলে ফেরে। মোতিহারি জেলে তার উপর নজরদারির দায়িত্ব ছিল হোমগার্ড বলিরাম প্রসাদ যাদব ও রামন বৈঠার উপর। ১৪ তারিখ তাঁদের ডিউটি বদলের সময়ই ঘটে যায় বিপত্তি।
[আরও পড়ুন: অনুব্রতর রাইস মিলে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’ লেখা বিলাসবহুল গাড়ি! মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন]
রাত প্রায় ২টো নাগাদ শিফট শেষ করেন রামন বৈঠক। কাজে যোগ দেন বলিরাম। এরই মধ্যে কোনও এক ফাঁকে দুই নিরাপত্তারক্ষীর চোখে ধুলো দিয়ে, হাতে বাঁধা দড়ি কেটে পালিয়ে যায় রাজকুমার রাই। নিজেদের কাজে এহেন গাফিলতির কারণে দুই নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। এরপর কলকাতা পুলিশ যে রাজকুমারের খোঁজ করতে বিহারে গিয়েছিল, সেই ঘটনা প্রসঙ্গে মোতিহারি পুলিশ রাজকুমারের পলায়নের খবর পাঠায় লালবাজারে। এবার লালবাজারে তৎপরতা শুরু হয়ে যায় রাজকুমারকে বাগে পেতে। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে তারা বিহারের নানা প্রান্তে অভিযান শুরু করেছে। লক্ষ্য, ‘পাঁকাল মাছ’ রাজকুমারকে জালে আনা।