shono
Advertisement

Breaking News

আমিরের কাছে বিটকয়েনের ‘গুপ্তধন’, গার্ডেনরিচ মামলায় ফাঁপড়ে গোয়েন্দারা

প্রতারণার টাকা কীভাবে ক্রিপটোকারেন্সিতে পরিণত করল আমির, তথ্যের খোঁজে তদন্তকারীরা।
Posted: 10:09 AM Sep 26, 2022Updated: 10:09 AM Sep 26, 2022

অর্ণব আইচ: প্রায় একশো কোটি টাকা বিটকয়েনে জমা করেছে গার্ডেনরিচের আমির খান। গ্রেপ্তার করার পর তাকে জেরা করে প্রাথমিকভাবে এই তথ‌্য পেয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ওই টাকা উদ্ধারের পদ্ধতি ভাবতেই হিমশিম খাচ্ছেন গোয়েন্দারা। কলকাতা বা এই রাজ‌্য ছাড়াও মধ‌্য প্রাচ‌্য ও বাংলাদেশের বহু যুবক ও তরুণের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আমির খান ও তার সহযোগীরা প্রতারণা করেছে, অভিযোগ এমনই। তাকে জেরা করে সহযোগীদের নাম জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। ওই প্রতারণার টাকা কীভাবে ক্রিপটোকারেন্সিতে পরিণত করে কাদের নামে রাখা হয়েছে, গোয়েন্দারা এবার সেই তথ‌্য জানার চেষ্টা করছেন। ওই টাকা গার্ডেনরিচে আমিরের বাবা নাসির খানের পরিবহণের ব‌্যবসায় লগ্নি হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ব‌্যাপারে বিস্তারিত তথ‌্য জানতে আমিরের বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।

Advertisement

গেমিং অ‌্যাপের মাধ‌্যমে টাকা হাতানোর সঙ্গে সঙ্গে অনলাইনে পণ‌্য বিক্রির মাধ‌্যমেও লাভ করিয়ে দেওয়ার নাম করে আমির ও তার সহযোগীরা টাকা হাতিয়েছে বলে অভিযোগ। তার সহযোগীদেরও সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ। কলকাতায় আমিরের ক’টি বাড়ি ও সম্পত্তি রয়েছে, সেই সম্পর্কে খোঁজ চলছে। ওই বাড়ি বা ডেরাগুলিতেও সে টাকা লুকিয়ে রেখেছে কি না, পুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে। তার প্রত্যেকটি ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ধরনের প্রতারণা ছাড়াও তার বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস ও সেগুলির লেনদেন সম্পর্কে গোয়েন্দারা তথ‌্য জানার চেষ্টা করছেন।

[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে কামারহাটিতে অশান্তি, দুষ্কৃতী দলের লড়াইয়ে চলল গুলি]

সপ্তাহ দু’য়েক আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট গার্ডেনরিচের সিজিআর রোডে ব‌্যবসায়ী আমির খানের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ১৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে থাকা পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে গাজিয়াবাদ থেকে লালবাজারের গোয়েন্দারা তাকে গ্রেপ্তার করেন। আমিরকে প্রাথমিক জেরার পর গোয়েন্দারা জেনেছেন যে, উদ্ধার হওয়া ১৭ কোটি টাকাও সে রেখেছিল ক্রিপটোকারেন্সিতে। বিটকয়েন ভাঙিয়েই সে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা রেখেছিল বাড়িতে। ওই টাকা পরিবহণ ব‌্যবসায়ে লগ্নি করার ছক ছিল বলে অভিযোগ। তাকে জেরায় উঠে আসছে মধ‌্য প্রাচের দুবাই ও কুয়েত যোগের তথ‌্য। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, বিদেশে পড়াশোনা করেছিল সে। সেখান থেকেই গেমিং অ‌্যাপের মাধ‌্যমে প্রতারণার বিষয়টি সে জানতে পারে। মধ‌্য প্রাচ্যের ওই দুই দেশে তার কয়েকজন আত্মীয় আছেন। আমির নিজেও হাওলার কারবারের সঙ্গে জড়িত। সেই সূত্র ধরে প্রথম দিকে প্রতারণা ও জালিয়াতির বিপুল টাকা হাওলায় পাঠাত বিদেশে।

কিন্তু ওই ব‌্যাপারে ইডির হাতে যে তথ‌্য আসছে, তা জানতে পেরেই ক্রমে আমির বিটকয়েনে লগ্নি করতে শুরু করে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ১৪৭টি ব‌্যাংক অ‌্যাকাউন্টে ৫০ কোটি টাকার উপর লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে আমিরের বিরুদ্ধে। কিন্তু অন্তত একশো কোটি টাকা সে বিটকয়েনে পরিবর্তন করেছে। তার কয়েকজন নিকটাত্মীয়র মাধ‌্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে টাকা রাখে সে। সেই টাকাই প্রয়োজনমতো ভাঙিয়ে নিত। আবার বিদেশ থেকে টাকার লেনদেনের জন‌্য হাওলার কারবারও কাজে লাগাত। গেমিং অ‌্যাপের মাধ‌্যমে টাকা তুলে প্রথমে অ‌্যাপ ব‌্যবহারকারীদের টাকা ফেরতও দিয়েছিল। পরে তিনটি অ‌্যাপ বন্ধ করে দিয়েই ব‌্যবহারকারীদের লগ্নি করা টাকা হাতিয়ে নেয় সে। প্রথমে তার পারিবারিক পরিবহণ ব‌্যবসায় তিনটি মালবাহী গাড়ি ছিল। কয়েক বছরের মধ্যে সেই মালবাহী গাড়ির সংখ‌্যা গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯০টি, এমনই অভিযোগ পুলিশের। এই তথ‌্যগুলিও যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: ‘আমাদের গাল দিয়ে শান্তিতে ঘুমোন, আমরা উন্নয়ন করব’, বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ মমতার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement