অর্ণব আইচ: থানায় ভুয়ো ডায়েরি করে অনলাইন বিপণি থেকে একের পর এক মোবাইল চুরি। আবার কখনও বা মোবাইল চুরির বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ওই অনলাইন বিপণিকে জানানো হত যে, ডেলিভারি করা হয়েছে মোবাইল। কিন্তু ক্রমাগত নতুন মোবাইল ফোন বিক্রির ছকই ধরিয়ে দিল ওই অনলাইন বিপণিরই সংযুক্ত সংস্থার দুই ডেলিভারি বয়কে। জয় মণ্ডল ও রাজেশ সিং নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মোট ১৮টি আনকোরা নতুন মোবাইল উদ্ধার করেছেন মানিকতলা থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
বৃহস্পতিবার মানিকতলা থানার পুলিশের কাছে খবর আসে খালপাড়ে একটি গোডাউনের কাছে প্যাকেটে করে একেবারে নতুন মোবাইল বিক্রি করছে এক তরুণ। সিল বন্ধ করা প্যাকেটে বিক্রি হওয়া ওই মোবাইল চুরির বলেই ধারণা হয় পুলিশ। সেইমতো সেখানে হানা দিয়ে পুলিশ প্রথমে ১১টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল আটক করে। ধরা পড়ে উত্তর শহরতলির দক্ষিণদাঁড়ির বাসিন্দা জয় মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: International Men’s Day: ‘এই গ্রহের সবচেয়ে বিস্ময়কর মানুষকে…’, শোভনকে বিশেষ বার্তা বৈশাখীর]
জেরার মুখে জয় জানায়, সে একটি অনলাইন বিপণির সঙ্গে সংযুক্ত একটি সংস্থার কর্মী। ওই সংস্থাটিই বিপণির জিনিস ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পেশায় ডেলিভারি বয় ও তার সঙ্গী রাজেশ সিং মিলে মোবাইল চুরির ছক কষে। জয়কে জেরা করে পুলিশ দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরে হানা দেয়। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় সঙ্গী রাজেশকে। পণ্ডিতিয়া রোডের বাসিন্দা রাজেশের কাছ থেকে আরও সাতটি মোবাইল উদ্ধার হয়।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, অনলাইন বিপণির গোডাইন থেকেই তারা সিল করা প্যাকেটে পোরা মোবাইল সংগ্রহ করে। কিন্তু ক্রেতাদের কাছে ডেলিভারি না করে চুরির দু’টি পদ্ধতি নেয় তারা। প্রথমত, তারা বিভিন্ন থানায় গিয়ে ভুয়ো ডায়েরি করে পুলিশকে জানায়, তাদের কাছ থেকে চুরি গিয়েছে মোবাইলের প্যাকেট। প্রমাণস্বরূপ সেই ডায়েরির নথি অনলাইন বিপণির কর্তাদের কাছে জমা দেয়।
একই সঙ্গে তারা ওই বিপণি সংস্থার সফটওয়্যারের মাধ্যমে সংস্থাকে জানিয়ে দেয় যে, মোবাইল ডেলিভারি করা হয়ে গিয়েছে। সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেতারা মোবাইল ডেলিভারি নেওয়ার পরই টাকা দেন। সেই কারণে বস্তুটি হাতে এসে না পৌঁছলেও কেউ অভিযোগ জানান না। বরং ফের নতুন মোবাইলের অর্ডার দেন। সেই মোবাইলগুলিই চুরি করে নেয় জয় ও রাজেশ। তারা সেগুলি খালপাড় ও কয়েকটি জায়গায় দোকান বা অনলাইন বিপণির থেকেও কম মূল্যে দরদাম করে বিক্রি করে। ধৃতরা এর আগেও এই কাজ করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।