সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা আর শিল্প যেন সমার্থক। এ রাজ্যের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বহু শিল্পকলা। কালের নিয়মে তার মধ্যে কিছু হারিয়ে গিয়েছে, আর কোনওটা আবার আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এই শিল্পই বাংলার পরিচয়, ঐতিহ্য। আধুনিকতার চাকচিক্যে যেন উপেক্ষিত না হয় সেই শিল্প, এবার সেই বার্তাই দেবে ভবানীপুর ৭৫ পল্লির পুজো।
প্রতিবারই নানা থিম ভাবনায় সেজে ওঠে দক্ষিণ কলকাতার (South Kolkata) জনপ্রিয় এই পুজো মণ্ডপ। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বরং করোনা কাল কাটিয়ে আরও রঙিন হতে চলেছে এবারের আয়োজন। শিল্পী প্রশান্ত পালের সৃজন মনে করাবে বাংলার ঐতিহ্যবাহী পটশিল্পকে। যে লোকশিল্পের সঙ্গে জড়িত বহু মানুষ। ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এতে যেমন মিটত আর্থিক চাহিদা, তেমনই সমৃদ্ধ হত বাংলার সংস্কৃতি। এই মণ্ডপেও এবার পুরুষ-মহিলারা একসঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। মণ্ডপে বসেই পটে শিব, পার্বতী, গণেশ-সহ পুরাণের নানা কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। বাংলা যে সর্বধর্মের পীঠস্থান, নিজের সৃজনের মধ্যে দিয়ে প্রচ্ছন্নভাবে এই বার্তাও দিচ্ছেন শিল্পী প্রশান্ত পাল।
[আরও পড়ুন: ‘আমাকে বাঁচতে দিন, দয়া করে জামিন দিন’, আদালতে কেঁদে ফেললেন পার্থ]
এবারের থিমের পোশাকি নাম 'ঐতিহ্য বেঁচে থাকুক।' পুজোর (Durga Puja 2022) আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। তাই জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। ভবানীপুর ৭৫ পল্লির আহ্বায়ক সায়ন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "বাংলার দুর্গাপুজোকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সম্মান দিয়েছে ইউনেস্কো। আমরা বিশ্বাস করি পটশিল্পের এই বিলুপ্তপ্রায় শিল্পটিই এ বছর আমাদের পুজোয় উপস্থাপিত হবে। ফিরে পাবে তার হারানো গৌরব ও খ্যাতি।" তবে শুধু মণ্ডপ সজ্জাই নয়, দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে এই পটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সাময়িক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করছেন পুজো উদ্যোক্তারা।
সায়ন চট্টোপাধ্যায় জানান, "মেদিনীপুর জেলার পিংলা ও নয়াগ্রামের পটশিল্পীরা পুজো মণ্ডপের পাশের স্টলে তাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন ও বিক্রি করবেন। যাতায়াত, খাওয়াদাওয়া, থাকার ব্যবস্থাও করবে পুজো কমিটি। ঠিক যেভাবে আমরা গত বছর ছৌ ও ঝুমুর শিল্পীদের জন্য করেছিলাম।" সব মিলিয়ে এবার বাংলার ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ ও জমজমাট ভবানীপুর ৭৫ পল্লির পুজো।