কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৬৯/১০ (ভেঙ্কটেশ ৭০, মণীশ ৪২, থুসারা ৪২/৩)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৪৫/১০ (সূর্যকুমার ৫৬, টিম ডেভিড ২৪, স্টার্ক ৩৩/৪)
২৪ রানে জয়ী নাইট রাইডার্স।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বপ্ননগরী মুম্বই। এই শহরের মাটিতেই বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছে ভারত। অথচ কেকেআরের (Kolkata Knight Riders) কাছে দুঃস্বপ্নের অন্য নাম ওয়াংখেড়ে। আরব সাগরের তীর থেকে বারবার খালি হাতে ফিরতে হয়েছে শাহরুখ খানের টিমকে। মুম্বইয়ের (Mumbai Indians) বিরুদ্ধে এখানে শেষ জয় এসেছিল ২০১২ সালে। তার পর কেটে গিয়েছে এক যুগ। শুধুই ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে নাইটদের।
এদিনও তার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে আনলেন শ্রেয়সরা। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ২৪ রানে জিতল কলকাতা। সেই সঙ্গে ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফে ওঠার রাস্তা আরও মসৃণ করে ফেলল গম্ভীর বাহিনী।
[আরও পড়ুন: ফাইনালে কেউ ফেভারিট নয়! বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে মোহনবাগানকে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন হাবাস]
ইতিহাস বদলানোর সুযোগ কাছে লাগালেন গৌতম গম্ভীররা। লিগ তালিকায় নাইটরা দাঁড়িয়ে আছে মুম্বইয়ের ঠিক উলটো পিঠে। এই ম্যাচ জিতে প্লে অফে যাওয়ার রাস্তা আরও সহজ করে নিলেন শ্রেয়স আইয়াররা। যদিও শুক্রবার রাতের ওয়াংখেড়েতে তাঁদের ডোবাল টপ অর্ডার ব্যাটিং। ফিল সল্ট (৫) আর সুনীল নারিন (৮) ব্যর্থ হতেই প্রকাশ্যে চলে এল নাইটদের মিডল অর্ডারের দুর্দশার চেহারা। মাঝের সারিতে একমাত্র ভেঙ্কটেশ আইয়ার ছাড়া কেউই শক্ত হাতে হাল ধরতে পারলেন না। অল্প রানে ফিরে গেলেন অঙ্গকৃষ রঘুবংশী (১৩), শ্রেয়স আইয়ার (৬)।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি রিঙ্কু সিং (৯)। যা নিয়ে বিতর্কের আঁচ এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে। আইপিএলে সেভাবে ব্যাটের সুযোগও পাননি নাইট তারকা। এদিন দলের বিপদের সময় তাঁর কাছে সুযোগ ছিল জাতীয় দল নির্বাচনকে প্রশ্নের মুখে ফেলার। কিন্তু ব্যর্থ হলেন রিঙ্কুও। শেষ পর্যন্ত একা কুম্ভের মতো নাইটদের গড় রক্ষা করলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৭০)। সঙ্গ হিসেবে একমাত্র পেলেন নাইটদের বহু যুদ্ধের সৈনিক মণীশ পাণ্ডেকে (৪২)। যাঁকে কিছুটা বাধ্য হয়েই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামায় কেকেআর। ৫৮ রানে ৫ উইকেট থেকে দুজনে মিলে বড় পার্টনারশিপ তৈরি করেন। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে থামল নাইটদের ইনিংস।
এই রান নিয়ে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার কাজটা যথেষ্ট কঠিন ছিল। যত খারাপ ফর্মেই থাকুক না কেন, ঘরের মাঠে তারাও জিততে মরিয়া ছিল। খাতায়-কলমে প্লে অফে ওঠার অঙ্ক হার্দিকদের কাছেও রয়েছে। কিন্তু কেন তারা লিগ টেবিলে নয় নম্বরে স্থানে রয়েছে, তা আবার প্রমাণ করে দিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়ারা। একের পর এক উইকেট পড়ল মুম্বইয়ের। তাদেরও ডোবাল টপ অর্ডার। ঈশান কিশান (১৩), রোহিত শর্মা (১১), নমন ধীর (১১) সকলেই অল্প রানে ফিরে গেলেন। এই নিয়ে দশবার নারিনের স্পিন জাদুতে বন্দি হলেন রোহিত। অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ডিয়ার অবস্থাও আলাদা কিছু নয়। সুনীল নারিন আর বরুন চক্রবর্তীর স্পিন মন্ত্রে রীতিমত দিশেহারা দেখাচ্ছিল মুম্বই ব্যাটিংকে।
[আরও পড়ুন: ভক্তের ডাকে সাড়া, ১০৩ বছরের ‘তরুণ’ সুপারফ্যানকে জার্সি উপহার ধোনির]
একমাত্র সূর্যকুমার যাদব কিছুটা চেষ্টা করলেও সেটা যথেষ্ট ছিল না। বিশ্বকাপের আগে তাঁকে বিধ্বংসী ফর্মে দেখে খুশি হবেন দেশের ক্রিকেটভক্তরা। কিন্তু তাতেও হাসি ফুটল না মুম্বই সমর্থকদের মুখে। তিনি ফিরে গেলেন ৫৭ রান করে। শাপমুক্তি ঘটল আর একজনের। তিনি মিচেল স্টার্ক (৩৩/৪)। এতদিন তাঁর ফর্ম নিয়ে কম কথা হয়নি। এদিন বুঝিয়ে দিলেন কেন তাঁকে এত টাকা দিয়ে কিনেছে নাইটরা। ডেথ ওভারে বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন স্টার্ক। তুলে নিলেন মোট চারটি উইকেট। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা টিম ডেভিডকে (২৪) থামালেন। পীযূষ চাওলা, কোয়েৎজে তাঁর শিকার হলেন। যদিও ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট বলা যেতে পারে সূর্যের আউট হওয়া। আর সূর্যের আলো নেভার সঙ্গেই প্লে অফের মেরিন ড্রাইভে অন্ধকার নেমে এল মুম্বইয়ের জন্য। শেষ পর্যন্ত কলকাতা জিতল ২৪ রানে।