অর্ণব আইচ: লগ্নি অ্যাপ জালিয়াতি কাণ্ডে গুজরাটের দুই ব্যবসায়ীকে খুঁজছে লালবাজার (Lalbazar)। গোয়েন্দাদের ধারণা, গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে দুবাইয়ে পালিয়েছে তারা। এদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। কলকাতায় লগ্নি অ্যাপের মূল অভিযুক্ত শৈলেশ পাণ্ডে, তার দুই ভাই ও সঙ্গী প্রসেনজিৎ দাসের সঙ্গে এই দুই ব্যবসায়ীর প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল বলে অভিযোগ লালবাজারের গোয়েন্দাদের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই ব্যবসায়ীর নাম তুষার প্যাটেল ও মনীশ প্যাটেল। প্রায় দেড় মাস আগে কলকাতা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে শৈলেশ পাণ্ডে। গ্রেপ্তার হয় শৈলেশের দুই ভাই অরবিন্দ ও রোহিত। এছাড়াও শৈলেশের সঙ্গী তথা কর্মচারী প্রসেনজিৎ দাসকেও গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা। দুবাইয়ের যে সংস্থাটির মাধ্যমে লগ্নি অ্যাপ (App) চালানো হত, তারই এক কর্তা ছিল প্রসেনজিৎ। ওই অ্যাপের মাধ্যমে ডলার লগ্নি করতে বলা হত। আমানতকারীরা প্রথমে লগ্নি করার পর তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হত। কিন্তু বেশি টাকা লগ্নি করার পরই বন্ধ করে দেওয়া হত অ্যাকাউন্ট। ফের টাকা তুলে অন্য অ্যাকাউন্টে রাখত জালিয়াতরা।
[আরও পড়ুন: SSC Scam: হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে নবম-দশমের ১৮৩ ‘অযোগ্য’ শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ কমিশনের]
তদন্ত চলাকালীন গোয়েন্দারা প্রায় ২২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন। লগ্নি অ্যাপ জালিয়াতির প্রায় দেড়শো কোটি টাকা যে অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে, তার সন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারেন, এর একটি অংশ পরিচালনা করত পাণ্ডেদের তিন ভাই ও প্রসেনজিৎ। কিন্তু বাকি যে অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, সেগুলি গুজরাট থেকেই পরিচালনা করা হত বলে গোয়েন্দারা জানতে পারেন। এই ব্যাপারে শৈলেশ ও প্রসেনজিৎকে জেরা করে গোয়েন্দা পুলিশ জানতে পেরেছে, এর পিছনে রয়েছে আহমেদাবাদের দুই ব্যবসায়ী তুষার প্যাটেল ও তারই আত্মীয় মনীশ প্যাটেল।
[আরও পড়ুন: মিঠুনের পালটা সভায় হাতিয়ার গান, পুরুলিয়ায় সুরে সুরে রাজনৈতিক মঞ্চ মাতালেন বাবুল]
যে সংস্থাটির মাধ্যমে লগ্নি অ্যাপের টাকা জালিয়াতি করা হত, তারই দুই মালিক তুষার ও মনীশ। তাদের সঙ্গে শৈলেশ, প্রসেনজিতদের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্র ধরে তাদের যোগ মেলে দুবাইয়ে। গুজরাট থেকেই গ্রেপ্তার হয়েছিল প্রসেনজিৎ। প্যাটেলরাই তাকে আহমেদাবাদের (Ahmedabad) একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। তদন্তে লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি টিম আহমেদাবাদে প্যাটেলদের সন্ধানে তল্লাশি চালাতে যায়। কিন্তু দেখা যায়, পাণ্ডে ব্রাদার্স ও প্রসেনজিৎ গ্রেপ্তার হওয়ার পরই উধাও হয়ে গিয়েছে তুষার ও মনীশ।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, দুবাইয়ে (Dubai) পালিয়েছে তারা। সেই কারণেই লুক আউট নোটিস (Lookout Notice) পাঠিয়ে দেশের প্রত্যেকটি বিমানবন্দরকে সতর্ক করা হয়েছে। আবার দেশের অন্য কোথাও তারা লুকিয়ে রয়েছে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। গুজরাটের প্যাটেলদের সন্ধান পেলে এই জালিয়াতির ব্যাপারে আরও তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ।