অর্ণব আইচ: দোল খেলুন। কিন্তু কোনও বেলেল্লাপনা নয়। দোল এবং হোলিতে যে কোনওরকম গন্ডগোল রুখতে এবার যানবাহনে চড়ে নজরদারিতে নামছে কলকাতা পুলিশ৷ টোটো এবং অটোয় ঘুরে কলকাতা ও আশপাশের জেলার অলিগলিতে টহল দেবে পুলিশ। একইসঙ্গে রং মাখানোর নাম করে শ্লীলতাহানি, ইভটিজিং রুখতে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টিম তৈরি হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, বিধাননগর, বারাকপুর ও চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে উৎসবের ওই দু’দিন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পথে নেমেছে পুলিশ। দোল ও হোলিতে একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করে পাড়ায় পাড়ায় লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।
[অনশনের একুশতম দিনে গণ কনভেনশনে এসএসসি প্রার্থীরা, অসুস্থ ২]
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতার রাস্তায় নেমেছে প্রায় পাঁচ হাজার পুলিশ। এই বাহিনী থাকবে শুক্রবারও। থাকছে ৭১৯টি পুলিশ পিকেট। থাকছে কুইক রেসপন্স টিম, রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াডও। বাইকে চেপে শহরের অলিগলিতে টহল দেবে পুলিশ। পাশাপাশি থাকছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাহিনী ‘দ্য উইনার্স’। বহুতলগুলির ছাদ থেকে রং ছোড়ার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। সেই নিষেধাজ্ঞা না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত নগরপাল (সদর) জাভেদ শামিম। মিশ্র এলাকায় থাকছে পুলিশের বিশেষ নজর।
পুলিশের নির্দেশ, যেন মদ্যপ অবস্থায় বাইকে করে কেউ হোলি না খেলে অথবা বেপরোয়া গতিতে বাইক না চালায়। যেন কোনও বাইকে দু’জনের বেশি আরোহী না থাকে। মাথায় হেলমেট না থাকলে সেই বাইক চালক ও আরোহীদের সঙ্গে সঙ্গেই আটক করা হবে। তার জন্য জায়গায় জায়গায় গার্ডরেল দিয়ে রাস্তা আটকানো থাকবে। অনেক সময়ই মালবাহী গাড়ি করে হোলি খেলা ও গাড়ি থেকে রং ছোড়ার প্রবণতা থাকে। তা করলেই সেই গাড়ির আরোহীদের ধরা হবে। গঙ্গার ঘাটের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ থাকবে। এ ছাড়াও শহরের প্রতিটি পুকুরের উপরও পুলিশকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। কারণ, রং খেলার পর মদ্যপ হয়ে সাঁতার না জেনে পুকুরে নামলে দুর্ঘটনা হতে পারে। হোলির দিনও যাতে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে, তার জন্য পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যাতে ছাদ ও উপর থেকে রং বা রংভর্তি বেলুন না ছোড়া হয়, তার জন্য এখন থেকেই বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[‘আটা’ আর ‘তেল’ মিশিয়ে বাড়িতেই হেরোইন তৈরি, গোয়েন্দাদের জালে ৪০ লাখ টাকার মাদক]
বিধাননগর ও হাওড়ায় সরু গলির সংখ্যা অনেক বেশি। ওই সমস্ত গলিতে সবচেয়ে বেশি করে রং খেলা হয়। সেই সমস্ত গলিতেও কড়া পুলিশি নজরদারি থাকছে। দোল ও হোলিতে অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে অলিগলিতে পুলিশি টহলদারি চলবে অটো ও টোটোয়।এদিন কোনও গোলমাল এড়াতে বন্ধ থাকছে মদের দোকান ও পানশালা। ফলে এদিন বেআইনি মদ, এমনকী, চোলাই কারবারিরাও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবগারি দফতর ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও।
বুধবার রাতেই নিউ মার্কেটের একটি গেস্ট হাউসের গুদাম থেকে প্রচুর বেআইনি মদ উদ্ধার করেন আবগারি গোয়েন্দারা। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এদিন সকাল থেকেই শহরের বিশেষ কিছু জায়গার উপর চলবে নজরদারি। তার জন্য শহরের অন্তত দশটি পয়েন্ট বেছে নেওয়া হয়েছে। গার্ডেনরিচ, পশ্চিম বন্দর, খিদিরপুর, তপসিয়া, পার্ক সার্কাস রেল স্টেশন, বালিগঞ্জ স্টেশন, মানিকতলা, উল্টোডাঙা, টালিগঞ্জ, বড়তলা-সহ শহরের অন্তত দশটি জায়গার উপর বিশেষ নজরদারি থাকছে গোয়েন্দাদের। তাঁদের কাছে আসা খবর অনুযায়ী, এই জায়গাগুলিতে থাকা কয়েকটি ঝুপড়িতে লুকিয়ে বিক্রি হতে পারে বেআইনি মদ বা চোলাই। চোলাই ও জাল মদ রুখতেও চলছে আবগারি গোয়েন্দা ও পুলিশের নজরদারি। দোলের দিন গাঁজা বা চরসের মতো মাদকের চাহিদাও বাড়ে। আবার এক্সট্যাসি বা এমডিএমএ-র মতো বিদেশি মারাত্মক মাদক যাতে হোলির রেভ পার্টিতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, সেই বিষয়েও নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post বেলেল্লাপনা রুখতে শহরে টোটোয় টহলদারি পুলিশের, নজর থাকছে সংলগ্ন শহরতলিতেও appeared first on Sangbad Pratidin.