স্টাফ রিপোর্টার: একদিকে উৎসবের ভিড়। অন্যদিকে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন। এবার পুজোয় বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল কলকাতা পুলিশের নয়া সিপি মনোজ ভার্মাকে। দক্ষতার সঙ্গে সেই চ্যালেঞ্জ জয় করে চ্যাম্পিয়ন হল পুলিশ। পুজোর ভিড় ও আন্দোলন সামলে নায়ক কলকাতা পুলিশ। আর জি কর কাণ্ডে মিছিল, মিটিং বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে রয়েছে শহর। তার উপর পুজোর সময় ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন। পুজোয় শহর অশান্ত করে তুলতে চক্রান্তও করেছিল একটি শ্রেণি। মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। উৎসবের দিনগুলিতে গণ্ডগোল রুখতে পুলিশও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল।
কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, সব চক্রান্ত বিফল করে দিয়ে পুজোয় শহর শান্তিপূর্ণ ছিল। আর জি করের ঘটনার পর থেকেই একটা পক্ষ উৎসব বয়কটের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু মানুষ তাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে উৎসবে ফিরে আসে। এবার কলকাতায় রেকর্ড ভিড় হয়েছিল মানুষের। গ্রামবাংলা থেকে শুরু করে বিদেশের মানুষজন ভিড় করেছিলেন কলকাতার দুর্গাপুজোতে। এমন ভিড় যে হবে তার একটা আন্দাজ করা গেলেও বাস্তবে কেমন পরিণতি নেবে তা ঠাওর করা যায়নি। সেখানে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ পরিকল্পনা করে বিপুল মানুষের ভিড় সামলে দিয়ে কার্যত হিরো বনে গিয়েছে। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা দুর্গাপুজোর ভিড়কে কেন্দ্র করে ঘটেনি। বরং মানুষ সাহায্য চেয়ে পুলিশের কাছ থেকে পেয়েছেন। চতুর্থী থেকে রাস্তায় নেমেছিল পুলিশ। মহাসপ্তমী থেকে মহানবমীর রাত পর্যন্ত শহরে জনপ্লাবন আছড়ে পড়ে। দর্শকদের লম্বা লাইন রাস্তায় চলে আসে।
কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে পুজোর ভিড় ও যানজট সামলায়। জনসমুদ্র সামলাতে বেশ বেগও পেতে হয়েছিল কলকাতা পুলিশকে। কিন্তু যানজট হতে দেয়নি। অন্যদিকে লালবাজার সূত্রে খবর, চতুর্থীতে দশ হাজার পুলিশ রাস্তায় ছিল। সপ্তমী থেকে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়। পুজোয় সময় পার্কিং নিয়ে একটা বড় সমস্যা দেখা যায়। পার্কিং ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দিক নির্দেশ সবটাই ঠান্ডা মাথায় সামলেছে পুলিশ। এই এতকিছুর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছিল নামী দুর্গাপুজোগুলি। বাগবাজার সর্বজনীন থেকে শুরু করে আহিরীটোলা হয়ে টালা বারোয়ারির পর দক্ষিণে মুদিয়ালি, শিবমন্দির, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি, ত্রিধারা সম্মিলনী, দেশপ্রিয় পার্ক, চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ, সমাজসেবী, বালিগঞ্জ কালচারাল এবং শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের দুর্গাপুজোয় মারাত্মক ভিড় হয়েছিল।
তিলধারণের জায়গা ছিল না। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, আগে থেকেই সমস্ত পরিকল্পনা করে রাখা ছিল তাঁদের। তাই সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোথায় পার্কিং জোন করা হবে, কোথায় ব্যারিকেড করা হবে সেসব খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশকর্মীরা অত্যন্ত পরিশ্রম করেছেন দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে। কলকাতা পুরসভার মেয়র বলেছেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ দারুণ কাজ করেছে দুর্গাপুজোয়। তাঁদের সহযোগিতায় এমন সাফল্য এসেছে।’’