অর্ণব আইচ: দীপাবলি ও ধনতেরাসের আগে সোনার দোকানের সামনে মানুষের ভিড়। আর এই ভিড়টাকেই কাজে লাগিয়ে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টায় থাকে কেপমাররাও। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্য সাধনও করে ফেলে তারা। শুধু পুরুষ নয়, নেহাত কম নয় মহিলা কেপমারদের সংখ্যাও। এবার কেপমারদের রুখতে নয়া পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুলিশ। জানা গিয়েছে, এবার পুলিশের সিসিটিভির সঙ্গে যুক্ত একটি যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করতে পারবে যে, ভিড়ের মধ্যে মিশে থাকা কার কার বিরুদ্ধে পুরনো দুষ্কর্মের রেকর্ড।
গোয়েন্দাকর্তাদের মতে, ‘ফেস রেকগনিশন সিস্টেম’ বা এফআরএস পদ্ধতিতে ধনতেরাসের আগে মধ্য কলকাতার বউবাজার, দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট-সহ শহরের মতো যে জায়গাগুলিতে সোনার দোকান বেশি, সেই জায়গাগুলিতে কেপমার বা অন্য দুষ্কৃতীদের উপর নজর রাখতে সুবিধা হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য অপরাধীদের উপরও চালানো যাবে নজরদারি লালবাজারের সূত্র জানা গিয়েছে, এই ‘এফআরএস’ পদ্ধতিটি আপাতত শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় কলকাতা পুলিশের সিসিটিভির সঙ্গেই যুক্ত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে কলকাতা পুলিশের ১৬০০ সিসিটিভিতেই যুক্ত করা হবে ‘এফআরএস’।
এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, শহরের যে কোনও থানা বা গোয়েন্দা বিভাগের হাতে কোনও দুষ্কৃতী বা অপরাধী গ্রেপ্তার হলে লালবাজারে সেই ব্যক্তি বা মহিলার ‘ক্রাইম রেকর্ড’ করা হয়। বিভিন্ন কোণ থেকে তার ছবি তোলা হয়। তার বিস্তারিত বিবরণও রেকর্ড করা হয়। এবার ‘এফআরএস’এর চিপেও ভরে দেওয়া হচ্ছে সেই অপরাধীদের তথ্যগুলি। ‘এফআরএস’-এর কাজ হচ্ছে, সিসিটিভির ক্যামেরায় তোলা ফুটেজে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কারও সঙ্গে কোনও অপরাধীর মুখের মিল আছে কি না। যদি কোনওরকম মিল পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গেই তা শনাক্ত করে জানিয়ে দেবে ‘এফআরএস’। গোয়েন্দা আধিকারিকদের মোবাইলেও চলে আসতে শুরু করেছে ‘এফআরএস’-এর সতর্কবার্তা। সেই সতর্কবার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নজরদারি করতে শুরু করেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই জ্বর সারানোর উপায় বাতলেছিলেন নোবেলজয়ী]
এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, দীপাবলি বা ধনতেরাসের আগে শহরের দোকানগুলিতে হানা দিতে পারে কেপমাররা। কিছুদিন আগেই দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী মলের একতলায় থাকা একটি সোনার দোকানে ক্রেতা সেজে হানা দিয়েছিল দুই মহিলা কেপমার। তাদের দেখে সম্ভ্রান্ত ঘরের মহিলা বলেই মনে করেছিলেন দোকানের কর্মীরা। সুযোগ বুঝে প্রায় পৌনে দু’লাখ টাকার হীরের আংটি হাতিয়ে নিয়েছিল তারা। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা দুই মহিলা কেপমার। উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া গয়না।
এছাড়াও দীপাবলির আগে সোনার দোকানের উপর নজর পড়ে বিভিন্ন জেলা, এমনকী ভিনরাজ্য থেকে আসা মহিলা কেপমারদের। পুলিশের মতে, তাদের মধ্যে যারা আগেই ধরা পড়েছে, ‘এফআরএস’-এর সাহায্যে তাদের উপর নজর রাখা কিছুটা সহজ। কিন্তু নতুন কেপমারদের দল শহরে এলে তাদের যাতে রোখা যায়, তার জন্য তৈরি হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ টিম। দীপাবলির আগে থেকেই সোনার দোকানের উপর নজরদারি শুরু হয়েছে। দোকানের সিসিটিভি অবশ্যই চালু রাখতে বলা হয়েছে। সোনার দোকানের কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীদেরও সতর্ক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post এবার ভিড়ে লুকিয়ে থাকা পকেটমারদের চিনিয়ে দেবে যন্ত্র, জানেন কীভাবে? appeared first on Sangbad Pratidin.