অর্ণব আইচ: প্রচণ্ড গরমে ময়দানে ‘মাথা ঘুরে’ পড়ে গিয়েছিল সে। শরীরে ছিল ক্ষতের দাগ। প্রায় অভুক্ত ছিল ময়দানের ঘোড়াটি। ওই অবস্থা থেকে ঘোড়াটির চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে তুলল কলকাতা পুলিশ। শেষ পর্যন্ত অসুস্থ তথা আহত ঘোড়াটির দায়িত্ব নিল কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে ঘোড়াটিকে তুলে দেয় ব্যাঙ্কশাল আদালত।
কয়েকদিন আগে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ময়দানে চরছিল সাদা রঙের ঘোড়াটি। সাধারণভাবে ভিক্টোরিয়ায় শখের ‘ফিটন গাড়ি’ টানে। চড়া রোদে ঘোড়াটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ‘মাথা ঘুরে’ পড়ে যায় মাটিতে। যন্ত্রণায় ছটফট করছিল সে। অফিসে আসার সময় সেই দৃশ্য দেখতে পান রেজিস্ট্রার জেনারেল। তিনি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ঘোড়াটিকে দেখেন। তিনি কলকাতা পুলিশের কর্তাদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে সেখানে যায় হেস্টিংস ও ময়দান থানার পুলিশ। ঘোড়াটির অবস্থা দেখে পুলিশ আধিকারিকরা কলকাতা মাউন্টেড পুলিশকে খবর দেয়। মাউন্টেড পুলিশের আধিকারিকরা ঘোড়াটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: জঙ্গিদের টার্গেট! নিরাপত্তা বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেকের]
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, মাদি ঘোড়াটি ‘ডিহাইড্রেশনে’র শিকার হয়। স্যালাইন দেওয়া হয় তাকে। এছাড়াও, চিকিৎসকরা তাকে প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন ও ওষুধ দেন। প্রাণীটির পিঠ ও পায়ের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক ক্ষত ছিল। তা ওষুধ দিয়ে সারানো হয়। ক্রমে ঘোড়াটি সুস্থ হতে শুরু করে। মাউন্টেড পুলিশের চিকিৎসকদের মতে, প্রায় অভুক্ত অবস্থায় ছিল ঘোড়াটি। তাই প্রয়োজনমতো তাকে খেতে দেওয়া হয়। ফলে ক্রমে সে সুস্থ হতে থাকে। টানা তিনদিন ধরে কলকাতা পুলিশ চিকিৎসা করে ঘোড়াটিকে অনেকটা সুস্থ করে তোলে।
এরমধ্যেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা ঘোড়াটিকে দেখতে এসে বুঝতে পারে যে, সেটি অত্যাচারের শিকার হতে পারে। ওই সংস্থার পক্ষ থেকেই ময়দান থানায় তার মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ মামলা শুরু করে। সংস্থাটিও তার মালিকের কাছে ঘোড়াটিকে ফেরত দিতে চায়নি। তাই পুলিশের মাধ্যমে এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে ঘোড়াটির দায়িত্ব নিতে চেয়ে আবেদন জানানো হয়। আদালতের নির্দেশে ঘোড়াটির দায়িত্ব নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। ঘোড়াটির মালিকের সন্ধানেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।