অর্ণব আইচ: দেশজুড়ে দাঙ্গা বাঁধানোর জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল মধ্যপ্রদেশের আইএস নেতা আব্দুল রাকিব কুরেশি। একই সঙ্গে নাশকতার জন্যও তহবিল জোগাড় করতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যেত সে। ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা টাকা সে কয়েকটি ই ওয়ালেটে রেখেছে বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আইএস জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল তৈরির কাজ শুরু করেছিল কুরেশি। এই কাজেই তাকে সাহায্য করতে শুরু করেছিল এই রাজ্যের আইএস নেতা হাওড়ার মহম্মদ সাদ্দাম ও তার সঙ্গী সায়েদ আহমেদ।
মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া থেকে গ্রেপ্তার হওয়া আইএস নেতা আব্দুল রাকিব কুরেশিকে বুধবার কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। তাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে সপক্ষে দাঁড়াননি কোনও আইনজীবী। ওই জঙ্গি নেতাকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। কুরেশির নেটওয়ার্কে সিঙ্গাপুরের এক মহিলারও সন্ধান মিলেছে। আইএস সংগঠনে ওই মহিলা যুক্ত কি না, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
[আরও পড়ুন: বিবেকানন্দের জন্মতিথিতেই কলকাতায় শুরু গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা থেকে ধৃত আইএস সাদ্দাম ও সায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন নাশকতার পরিকল্পনা করত প্রাক্তন সিমি নেতা কুরেশি। তার জন্য সংগ্রহ করত ‘টেরর ফান্ড’। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে মোবাইল, পেন ড্রাইভ। একটি মানিব্যাগ থেকে কয়েক হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। কুরেশির কাছ থেকে একটি নোটবই উদ্ধার হয়েছে। তাতে বেশ কিছু জেহাদি চ্যানেলের সন্ধান মিলেছে। ওই চ্যানেলে যারা যুক্ত, তাদের নাম পাওয়া গিয়েছে। বেশ কিছু রাজ্যে রয়েছে আইএস-এর সদস্যরা। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, হায়দরাবাদে তাদের সন্ধান মিলেছে। জানা গিয়েছে, জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করত সিক্রেট চ্যাট অ্যাপ। ওই অ্যাপের মাধ্যমে সাংকেতিক ভাষায় তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলত।
কুরেশি জেরায় জানিয়েছে যে, আইএস হিসাবে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাশকতার প্রথম ধাপ হিসাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দাঙ্গা বাধিয়ে সম্প্রীতি নষ্ট করা। ফলে মোমিনপুরের সংঘর্ষেও তাদের কোনও যোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ধরনের সংঘর্ষ বাধাতে প্রয়োজন টাকার। তার জন্যই মধ্যপ্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্যে ঘুরে পুরনো সিমি সদস্যদের কাছ থেকে ‘টেরর ফান্ড’ বা তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল তারা। এমনকী, সহানুভূতি দেখিয়ে কয়েকজন পপুলার ফ্রন্টের সদস্যের কাছ থেকে টাকা তোলে কুরেশি।
এই কাজে সে কলকাতায় এসেছিল কি না, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। বিদেশ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের জন্যও ‘টেরর ফান্ড’ জোগাড়ের চেষ্টা চালাত সে। প্রত্যেকটি রাজ্য থেকেই যুবকদের মগজধোলাই করে তাদের মাধ্যমে স্লিপার সেল তৈরির চেষ্টা করে কুরেশি। সাদ্দাম য়াদের মগজধোলাই করেছিল, তাদের মধ্যে একজনের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।