shono
Advertisement
Shloka and Mantra

ওড়িশা থেকে পাশ, কলকাতায় ধ্বংসস্তূপে লড়ছে ‘মন্ত্র’ আর ‘শ্লোকা’

একটি শিসের শব্দ শুনেই ধ্বংসস্তূপের দিকে সোজা ছুটে যায় দুজনে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 03:28 PM Feb 14, 2025Updated: 03:28 PM Feb 14, 2025

অর্ণব আইচ: পড়ে রয়েছে ইট-কাঠের ধ্বংসস্তূপ। আর তার মধ্যেই রয়ে গিয়েছেন মানুষটি। তাঁর যেন বাইরে বের হওয়ার কোনও রাস্তা নেই। তিনি যে ভিতরে রয়েছেন, তা-ও দেখা যাচ্ছে না বাইরে থেকে। শুধু ইশারার অপেক্ষা। একটি শিসের শব্দ শুনেই সেই ধ্বংসস্তূপের দিকে সোজা ছুটে গেল ‘মন্ত্র’ আর ‘শ্লোকা’। হোক না সেই ধ্বংসস্তূপ নকল। কিন্তু তার মধ্যে থেকে লোকটিকে বের করা বা উদ্ধার করে নিয়ে আসাই তাদের মূল কাজ। 

Advertisement

এভাবে দিনে বেশ কয়েকবার মহড়া দিচ্ছে, তথা অনুশীলন করছে কলকাতা পুলিশের এই দুই গোয়েন্দা কুকুর। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় উদ্ধারকারী দল এনডিআরএফের প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে পূর্ণ ট্রেনিংয়ের পর রীতিমতো ভালো রেজাল্ট করে পাস করেছে ‘মন্ত্র’ ও তার বান্ধবী ‘শ্লোকা’। শহরে আসার পরই তাদের যোগ দিতে হয়েছে কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের চাকরিতে।

গত বছর মার্চেই গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়েছিল বাড়ি। ধ্বংসস্তূপে আটকে থেকে মৃত্যু হয় প্রায় বারো জনের। তখন উদ্ধারকাজে এনডিআরএফ নিয়ে এসেছিল তাদেরই কুকুরবাহিনীকে। যদিও ততদিনে এনডিআরএফের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে মন্ত্র আর শ্লোকার। তারও আগে কলকাতায় একাধিক ঘটনায় পুরনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছেন বাড়ির বাসিন্দা। আবার সেতু ভেঙেও অনেকে চাপা পড়েছেন ধ্বংসস্তূপে। তাঁদের সন্ধান পেতে কখনও এনডিআরএফ, আবার কখনও বা আধাসেনা বাহিনীর ‘রেসকিউ ডগ’ নিয়ে আসতে হয়েছে। তাই কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডে নিজস্ব ‘রেসকিউ ডগ’ নিয়োগের পরিকল্পনা করে লালবাজার।

তারও আগে বিএসএফের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে অন‌্যান‌্য প্রশিক্ষণের সঙ্গে উদ্ধারকাজের প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা হলেও তাতে বিশেষ কোনও লাভ হয়নি। দুই কুকুরপ্রেমী একটি ডোবারম‌্যান ও একটি ককার স্প‌্যানিয়েল প্রজাতির কুকুর কলকাতা পুলিশকে উপহার দেন। তাদের সাহায্যেই প্রাথমিকভাবে গড়ে তোলা হয় কলকাতা পুলিশের ‘রেসকিউ টিম’। এক বছর আগে তাদের দুজনকেই পাঠানো হয় ওড়িশার কটকে, এনডিআরএফের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে। সম্প্রতি তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছে কলকাতায়। ডোবারম‌্যান ‘শ্লোকা’র চেহারা ছিপছিপে হওয়ার ফলে অপরিসর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে সে অনায়াসে প্রবেশ করে। আবার ককার স্প‌্যানিয়েল ‘মন্ত্র’ ছোট চেহারার হওয়ায় যেখানে মানুষের প্রবেশ করার সম্ভাবনা নেই, সেখানেও সে প্রবেশ করে আটকে থাকা মানুষের সন্ধান চালাতে পারে। ওড়িশার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে তাদের সাঁতার থেকে শুরু করে অত‌্যন্ত অপরিসর জায়গায় গিয়ে খোঁজ চালানো, সবরকমেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এবার থেকে তারা কলকাতায় বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ শুরু করবে।

লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতায় এসে পুলিশে যোগদান করার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তাদের অনুশীলন। কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে অন‌্যান‌্য কুকুরেরও প্রশিক্ষণ হয়। কিন্তু ‘শ্লোকা’ ও ‘মন্ত্র’র প্রশিক্ষণের ধরন কিছুটা আলাদা। তাদের জন‌্য ইট-কাঠের নকল ধ্বংসস্তূপ তৈরি করেছে পুলিশ। ওই নকল ধ্বংসস্তূপের ভিতর প্রবেশ করেন কোনও পুলিশকর্মী। ‘মন্ত্র’ ও ‘শ্লোকা’র কাজ গন্ধ শুঁকে তাঁদের খুঁজে বের করা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অনুশীলন করছে কলকাতা পুলিশের এই দুই গোয়েন্দা কুকুর।
  • পূর্ণ ট্রেনিংয়ের পর রীতিমতো ভালো রেজাল্ট করে পাস করেছে ‘মন্ত্র’ ও তার বান্ধবী ‘শ্লোকা’।
  • একটি শিসের শব্দ শুনেই ধ্বংসস্তূপের দিকে সোজা ছুটে যায় ‘মন্ত্র’ আর ‘শ্লোকা’।
Advertisement