স্টাফ রিপোর্টার: মেট্রো শহরগুলির মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দীপাবলি (Diwali) উপহার দিয়েছে কলকাতা। রাজ্যের নিজস্ব পরিকাঠামো ও আইআইটি দিল্লির গবেষকদের সহায়তায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে শব্দ ও বায়ুদূষণের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই মিলেছে। রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জনিয়েছেন, দীপাবলির সময় মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাইয়ের মতো মেট্রো শহরে যেখানে বাতাসের মান ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’ (একিউআই) (AQI) ‘খারাপ’ এবং ‘খুব খারাপ’ ছিল সেখানে কলকাতায় তা ‘ভালই’ থেকেছে। শুধু কলকাতাই নয়, রাজ্যের অন্যত্রও ২২-২৪ অক্টোবর দূষণের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেক কম ছিল।
জানা গিয়েছে, দীপাবলির দিন রাত একটা থেকে পরের দিন বিকেল তিনটে পর্যন্ত তিন ঘণ্টা অন্তর বাতাসের মান মাপা হয়েছে। সবক্ষেত্রেই একিউআই ৪৩-৪৭-এর মধ্যে ছিল। অর্থাৎ সর্বনিম্ন ৪৩, সর্বোচ্চ ৪৭। যেখানে দিল্লির একিউআই ছিল ৩০৮-৩৩০, মুম্বই ১০৬-১৩০, বেঙ্গালুরু ১২৬-১৫৮, চেন্নাই ১৬৯-২৬১। তবে মন্ত্রী এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন, দূষণ কমাতে সাহায্য করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তৈরি করা পরিবেশ।
[আরও পড়ুন: খাদের কিনারা থেকে ফিরে এল পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভেসে রইল বিশ্বকাপে]
বৃহস্পতিবার পরিবেশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন পরিবেশ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. কল্যাণ রুদ্র-সহ বহু উচ্চপদস্থ আধিকারিক। কল্যাণ রুদ্র জানান, গোটা রাজ্যে দেড়শোটি নজরদারি কেন্দ্র, কুড়িটি ভ্রাম্যমাণ দল শব্দদূষণের মাত্রা খতিয়ে দেখেছে, মেপেছে। পর্ষদের একটি সুসংহত কমান্ড সেন্টার থেকে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, দিনের তুলনায় রাতে শব্দের তীব্রতা কম ছিল। এটি রাজ্যের সাফল্য বলে দাবি করা হয়। বলা হয়, প্রশাসনের তৎপরতাতেই বাজি নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। সাহায্য করেছে সিত্রাং। তাই এমন স্বচ্ছ দীপাবলি দেখা গেল মহানগরে।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরে দীপাবলির মরশুমে গোটা রাজ্যে মোট ১৪ হাজার ৮৯২ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হয়েছে। কলকাতা থেকেই ৯৬০০ কেজির বেশি শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গোটা রাজ্যে মোট ২৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯২ জন। মানসবাবু জানিয়েছেন, আগামী বছর উৎসবের মরশুমকে সম্পূর্ণ দূষণহীন করতে আগামী সপ্তাহ থেকেই প্রস্তুতি শুরু হবে। মানসবাবু মনে করিয়ে দেন, শীতকালে বৃষ্টি কম হয়। তাই ধূলিকণাকে নিয়ন্ত্রণ করতে আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন রাস্তা ধোয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কলকাতার পাশাপাশি হাওড়া, বারাকপুর, আসানসোল, হলদিয়া, দুর্গাপুর, শিলিগুড়িতেও একই পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ভিন রাজ্যের বাজির ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে রাজ্য সরকার সবুজ বাজির উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। মানস ভঁুইয়া বলেন, ‘‘বাংলার বাজি নির্মাতাদের বলছি, আপনারা সবুজ বাজি তৈরি করুন। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করুন।’’