সুব্রত বিশ্বাস: হইচই শুনে ছুটে গিয়েছিলেন ১৩ তলায়। আর সেই ছুটে যাওয়াই কাল হল পূর্ব রেলের পদস্থ কর্তা পার্থ মণ্ডলের। লিফট খুলতেই কালো ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে প্রাণ গেল তাঁর। উল্লেখ্য, পূর্ব রেলের ডেপুটি সিসিএম (ডিবি) পদে কর্মরত ছিলেন পার্থবাবু।
আটের দশকে রেলের ক্লার্ক পদে যোগ দিয়েছিলেন বরাহনগরের বাসিন্দা পার্থবাবু। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক কঠিন পরীক্ষায় পাশ করে হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশনের ডিরেক্টর পদে উন্নীত হয়েছিলেন তিনি। দুই স্টেশনের উন্নয়ন ও পরিচ্ছন্নতার কাজে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমানে ডেপুটি সিসিএম (ডিবি) পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। স্ট্র্যান্ড রোডের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের তিনতলায় বসতেন তিনি।
[আরও পড়ুন : ‘অগ্নিকাণ্ড নিয়েও রাজনীতি করছেন’, স্ট্র্যান্ড রোডে দুর্ঘটনাস্থল থেকে মমতাকে খোঁচা বিজেপির]
সোমবার সন্ধে ছ’টা নাগাদ হইচই শুনে তেরো তলায় ছুটে যান পার্থবাবু। তার পর আর ফিরে আসেননি। লিফটে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। অফিস সূত্রে খবর, আর কয়েক বছর পরই অবসর নিতেন তিনি। পরিবারে শুধুমাত্র এক মেয়ে রয়েছেন। তাঁরও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড মেয়ের কাছ থেকে তাঁর বাবাকে কেড়ে নিল। তিন দশকের পুরনো কর্মীর মৃত্যুতে শোকার্ত পার্থবাবুর সহকর্মীরা।
এদিকে এই অগ্নিকাণ্ডে হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই অমিত ভাওয়ালের মৃত্যু হয়েছে। এদিন তাঁর দেহ লালবাজারে নিয়ে আসা হয়। তাঁর উদ্দেশে গান স্যালুট দেয় কলকাতা পুলিশ। বাকি ৮ জনের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে কলকাতা পুলিশ। এই অগ্নিকাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
সোমবার সন্ধে ৬টার পর পূর্ব রেলের সদর দপ্তরের এই বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে। ১৩ তলার আগুন হাওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় গোটা ভবনটিই চলে যায় আগুনের গ্রাসে। এখানে রেলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পাশাপাশি রয়েছে রিজার্ভেশনের মূল অফিসও। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব রেলের সমস্ত বুকিং বন্ধ হয়ে যায়।