shono
Advertisement

১০৭ বছরেও নেতাজির সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি অম্লান শান্তিলতার

মঞ্চে নেতাজিকে সম্বর্ধনা জানিয়ে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন এই বঙ্গতনয়া। The post ১০৭ বছরেও নেতাজির সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি অম্লান শান্তিলতার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:14 AM Jan 23, 2020Updated: 09:14 AM Jan 23, 2020

অর্ণব আইচ: “আমি পিকেটিং করেছি। দেশীয় পদ্ধতিতে নুন তৈরি করেছি। প্রত্যেকদিন ভলান্টিয়ারের কাজ করেছি।” ১৯ বছরের তরুণীর মুখে সলজ্জ হাসি। মেয়েটির মুখে এই কথা শুনে হাসলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর গলায় একটি মোটা ফুলের মালা। মিনিট কয়েক আগে ওই তরুণীই নেতাজির গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন মালাটি। মেয়েটির কথা শুনে হেসে নেতাজি বলেছিলেন, “বাঃ, এইটুকু মেয়ে হয়ে তুমি যে অনেক কাজ করেছ।”

Advertisement

সেই তরুণী এখন ১০৭ বছরের বৃদ্ধা। ৮৮ বছর আগেকার স্মৃতি আজও একেবারে অম্লান শান্তিলতা রায়চৌধুরির কাছে। ২৩ জানুয়ারির সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই মেয়ে ঝর্ণা অথবা লীনা বৃদ্ধাকে মনে করিয়ে দেন, “মা, আজ যে নেতাজির জন্মদিন।” বৃদ্ধা শান্তিলতা তাঁর হাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম জানান। বললেন, “মহাপুরুষের জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করতে ভাল লাগে। কিছুক্ষণের জন্য তাঁর মুখোমুখি হয়েছিলাম। কিন্তু সেই স্মৃতি যে ভোলার নয়।”

[আরও পড়ুন: গোরস্থানে সাবধান! রাতের অন্ধকারে সনিকার কবরে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা ]

দক্ষিণ কলকাতার শরৎ বোস রোডের বাড়িতে বসে বৃদ্ধা শোনালেন তাঁর বিয়ের আগের কথা। তাঁর বাপের বাড়ি আদতে বারাণসীতে। লবণ আইন রোধে আন্দোলন শুরু করেছেন গান্ধীজি। সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল বারাণসীতেও। এই লবণ আন্দোলনেরই শরিক হয়েছিলেন তরুণী শান্তিলতা। স্বেচ্ছাসেবিকা হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন সেই আন্দোলনে। বারাণসীতে রোদের মধ্যে কষ্ট করেও পিকেটিং করেছিলেন তাঁরা। পাটনায় ছিলেন নেতাজি। হঠাৎই সিদ্ধান্ত নিয়ে চলে যান বারাণসীতে। স্বেচ্ছাসেবকরা জানতে পেরেছিলেন যে, বারাণসীতে এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন নেতাজি। নেতাজিকে দেখার জন্য ভিড়। স্বেচ্ছাসেবকরা তৈরি তাঁকে সম্বর্ধনা দিতে। তাঁর বক্তব্য শুনতে। নেতাজি এলেন। আন্দোলনে শামিল অন্য নেতারা মোটা ফুলের মালা তুলে দিলেন বাঙালি তরুণী শান্তিলতার হাতে। মঞ্চে নেতাজিকে সম্বর্ধনা জানিয়ে তাঁর গলায় মালা পরিয়ে দেন শান্তিলতা চৌধুরি। তার পরই নেতাজির প্রশ্ন, “তুমি দেশের জন্য কী কী করেছ?” তার উত্তরে শান্তিলতা জানালেন, তিনি কীভাবে পিকেটিং করেছেন, ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করেছেন।

[আরও পড়ুন: চিনা ভাইরাসের মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা, বেলেঘাটা আইডিতে খুলল বিশেষ ওয়ার্ড]

বৃদ্ধার চোখের দৃষ্টি ভাল নয়। কিন্তু স্মৃতি অম্লান। তিনি এখনও বিশ্বাস করেন যে, কোনও বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়নি। এও বিশ্বাস করেন যে, নেতাজি যদি দেশের হাল ধরতেন, তবে দেশের অবস্থা অন্যরকমের হত। শান্তিলতা রায়চৌধুরি বলেন, “নেতাজি যে এই দেশে ঢুকতেই পারলেন না। তাঁকে বাইরে বাইরে কাটিয়ে যেতে হল। তিনি থাকলে দেশের উন্নতি যে অন্যরকমের হত।” নেতাজির সঙ্গে দেখা হওয়ার কয়েক মাস বাদেই তরুণী শান্তিলতার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী ছিলেন নামকরা আইনজীবী। চলে আসেন কলকাতায়। সাংসারিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আজাদ হিন্দ ফৌজে তাঁর যোগ দেওয়া হয়নি, কিন্তু মহাপুরুষের জন্মদিনে তাঁকে প্রণাম জানাতে ভোলেন না শান্তিলতা রায়চৌধুরি।

The post ১০৭ বছরেও নেতাজির সঙ্গে সাক্ষাতের স্মৃতি অম্লান শান্তিলতার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement