ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: জনস্বার্থে বঙ্গে সুষ্ঠুভাবে এসআইআর সম্পন্ন করতে অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে ভূমিকা পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা প্রক্রিয়াকে কেন্দ্রের শাসকদলের 'রাজনৈতিক চক্রান্ত' বলে অভিযোগ তুললেও ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজে জনতার যাতে বিন্দুমাত্র সমস্যা না হয়, তার জন্য দলকে মাঠে নামানো হয়েছে। সোমবার সেই কাজের পর্যালোচনায় ভারচুয়াল বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। শেষ ধাপের কাজ যাতে সময়ের মধ্যে নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়, তার জন্য মন্ত্রী, বিধায়কদের একেবারে কড়া টাস্ক বেঁধে দিলেন তিনি। স্পষ্ট নির্দেশ, ''একটা টিম তৈরি করে দিচ্ছি। ২৬ তারিখ থেকে ৩০ আর ১ থেকে ৪ - ব্যাগবস্তা বেঁধে সেই জেলায় চলে যান। ফিরবেন না।ওয়াররুম ভিজিট করবেন।'' সব নিয়ে ৬ ডিসেম্বর দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রিপোর্ট দেবেন অভিষেক।
তৃণমূলের প্রায় ৩৫ শতাংশ বিএলএ-২'র নাম নথিভুক্ত হয়নি কমিশনে। এই সংক্রান্ত এক রিপোর্ট হাতে পেয়ে আরও সতর্ক শাসক শিবির। সোমবার অভিষেক ভারচুয়াল বৈঠকে এনিয়ে আলোকপাত করেন। দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, ''ওয়ারুম থেকে ফোন করিয়ে BLA-2 কে অ্যাক্টিভ করতে হবে। ১০০% ফর্ম যাতে জমা পড়ে তা খতিয়ে দেখা এবং BLA-2দের রেজিস্ট্রেশন - এই দুটো কাজ। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় প্রত্যেক বিধায়ক ১৫ টা করে BLA-2 কে ফোন করবেন। এই সময় কেউ কাজে গাফিলতি করলে দল ক্ষমা করবে না, মানুষ ক্ষমা করবে না।'' কোথায় কেমন কাজ হচ্ছে, সে বিষয়ে বলতে গিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, ''কোচবিহারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খারাপ। কারও সঙ্গে ব্যক্তিগত ফারাক থাকতে পারে। কিন্তু দলের কাজে এই লড়াইয়ের সময় একসঙ্গে থাকতে হবে। অনেক জায়গায় ঠিকমতো ভোট রক্ষা শিবির করতে হবে। ক্যাম্পে নজরদারি বাড়াতে হবে। এসব জায়গায় জনসভাও চলবে। একটা বুথে দু'টি করে মিটিং করতে হবে।''
আগেই পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দায়িত্ব নীতির কথা জানিয়েছিল তৃণমূল। ভালো পারফরম্যান্স হলে তবেই দায়িত্ব পাওয়া যাবে, নচেৎ দায়িত্ব থেকে ছাঁটাই হতে হবে। সম্প্রতি এই নীতিকে মান্যতা দিয়ে দলে সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। এবার পঞ্চায়েত থেকে ব্লক, টাউন স্তরের নেতাদের এসআইআরের কাজে কার কেমন পারফরম্যান্স, তা নজরে রেখেছেন অভিষেক। দেখা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুর ময়নায় সব ব্লকে ভোট সুরক্ষা ক্যাম্প হয়নি। নেতাদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া তমলুক, তমলুক টাউন, হলদিয়া, নন্দকুমার, সুতাহাটায় একই অবস্থা। পঞ্চায়েত স্তরে সুপারভাইজারের কাজ শূন্য! এদিনের বৈঠকে অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যেসব জায়গায় কাজের গতি ধীর সেখানে দু'দিনের মধ্যে ফর্ম নিয়ে টার্গেট পূরণ না হলে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। দায়িত্ব বদল হতে পারে।
