সুব্রত বিশ্বাস ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কয়লা পাচার (Coal smuggling) কাণ্ডে আগেও একাধিকবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে পড়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। প্রতিবারই তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। এবারও করলেন। ইডির (ED) তলব পেয়ে শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে নথিপত্র নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির হলেন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে, ইডি দপ্তরে। বেলা ১১টার খানিক আগেই পৌঁছে যান তিনি।
তৃণমূল সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দিল্লি থেকে এসেছেন ৫ সদস্যের তদন্তকারী দল। তাঁরাই এবার কয়লা পাচার মামলার খুঁটিনাটি জানতে চাইবেন অভিষেকের কাছে। তবে অভিষেককে তলব নিয়ে এদিন সকালেই টুইট করে ইডি, সিবিআইকে খোঁচা দিয়েছে তৃণমূল (TMC)।
শুক্রবার সকাল থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) হাজিরা ঘিরে সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) নিরাপত্তার কড়াকড়ি শুরু হয়। প্রচুর নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হয় গেটের সামনে। প্রশ্নপত্র নিয়ে প্রস্তুত ছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের টিমও। নিজের নথিপত্র নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক বাড়ি থেকে বেরোন সাড়ে ১০ টা নাগাদ। ইডি দপ্তরে তিনি পৌঁছে যান ১০টা ৪৫ নাগাদ। তাঁকে ৭ তলার এ ব্লকে বসানো হয়। কয়লা পাচার তদন্তের মূল তদন্তকারী অফিসার-সহ ৫ জনের আধিকারিক এসেছেন দিল্লি থেকে। তাঁরা মূলত ৫টি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইবেন অভিষেকের কাছে, সূত্রের খবর এমনই।
কয়লা পাচারের যে ‘মানি ট্রেল’ বা আর্থিক লেনদেনের হদিশ ইডি পেয়েছে, তা নিয়েই অভিষেককে সিজিও কমপ্লেক্সে জেরা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এর আগে অভিষেক এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেসব বয়ানের সত্যতা যাচাই এবং রুজিরা-অভিষেকের বয়ান মিলিয়ে দেখা হতে পারে।
[আরও পড়ুন: সাড়ে তিন বছর ধরে দুই কিশোরীকে ধর্ষণ, অবশেষে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত লিঙ্গায়েত ধর্মগুরু]
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশের দিনই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে অভিষেককে নিশানা করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। সভাস্থলে মমতা বলেছিলেন, “বাংলায় সরকার ফেলার জন্যই একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ববিকে গ্রেপ্তার করো। অরূপকে গ্রেপ্তার করো, অভিষেককে গ্রেপ্তার করো। ভেবেছো, তাহলেই আর নির্বাচনে তৃণমূল জিততে পারবে না।এই তো আজ অভিষেক এত ভাল বক্তৃতা দিয়েছে। কাল ওকে না আবার নোটিস ধরায়। আগেও ওকে, ওর স্ত্রীকে (রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়) নোটিস ধরিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিত্বহীন’, ‘দো-আঁশলা’, বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে সরাসরি তোপ অনুপম হাজরার!]
সেই আশঙ্কা সত্যি করে পরদিনই অভিষেককে তলব করা হয়। তদন্তে সহযোগিতা করতে তিনি শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই হাজির হন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। যদিও এই তলব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ষড়যন্ত্রমূলক বলে এদিন সকালে টুইটে তোপ দেগেছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।