shono
Advertisement

তৃণমূলের সুরেই সরব কানহাইয়া, অধীরের গলায় মমতা বিরোধিতা, ফের প্রকাশ্যে কংগ্রেসের কোন্দল

কংগ্রেসের অনুষ্ঠানে 'জয় বাংলা' স্লোগান কানহাইয়ার।
Posted: 07:47 PM Aug 28, 2023Updated: 07:47 PM Aug 28, 2023

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলায় কংগ্রেসের অবস্থান কী, তৃণমূল বিরোধিতা নাকি জাতীয় স্তরের মতো রাজ্যেও তৃণমূল জোট? পশ্চিমবঙ্গে ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মহাজাতি সদনে দুই নেতার বক্তব্য পর ফের একবার এই প্রশ্নটা উঠে গেল। একদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি এদিন স্পষ্ট করে দেন, দিল্লির লাইন নয়, এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই লড়াই হবে। তো অন্যদিকে তৃণমূল সম্পর্কে একটি শব্দও না বলে কংগ্রেসের দিল্লির লাইন স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার। উলটে এখানে বিজেপি—কংগ্রেস—সিপিএম এখানে যা যা বলে সেগুলির কাউন্টার করে দিয়ে গেলেন।

Advertisement

সোমবার, মহাজাতি সদনে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় সাগরদিঘির উপনির্বাচনের উদাহরণ টেনে অধীর চৌধুরী দাবি করেন, কংগ্রেসের পুনরুত্থান হচ্ছে। তাঁর কথায়, “তৃণমূল এখন কংগ্রেসের পা ধরে বাঁচতে চাইছে। সাগরদিঘি দেখিয়ে দিয়েছে, এই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, শেষ কথা বলতে পারে কংগ্রেসও।” একেবারে শেষে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, “বাংলায় এক দিকে তৃণমূল, অন্য দিকে বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।” কিন্তু একেবারে অন্য সুর ছিল কানহাইয়া কুমারের গলাতে।

[আরও পড়ুন: বিধানসভা থেকে সোজা ভবানীভবন, ‘ভয় পাই না’, CID জিজ্ঞাসাবাদের পর মন্তব্য নওশাদের]

তৃণমূলের ওয়াশিং মেশিন তত্ত্ব থেকে জাতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলার বদনাম, পরিবারতন্ত্র-সহ একাধিক ইস্যুতে মমতা-অভিষেকের সুরেই সুর চড়িয়েছেন প্রাক্তন বাম ছাত্রনেতা। প্রথমে দু’লাইন বাংলা বলে শুরু করে প্রায় ৪৫ মিনিটের আগুন ঝরানো ভাষণে তুলোধনা করেন কেন্দ্রের মোদি সরকারকে। অন‌্যদলে থাকলে দুর্নীতিগ্রস্ত আর বিজেপিতে গেলেই ওয়াশিং মেশিন, সাদা হয়ে বেরবে, এমন অভিযোগ বারবার শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের মুখে। এদিন সেই একই অভিযোগ তুলে কানহাইয়া কুমার বলেন, “যে কোনওভাবে বাংলা, বিহার দখল করতে চাইছে বিজেপি। দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাতেও তাই হচ্ছে। অন‌্য দলে থাকলে সে দুর্নীতিগ্রস্ত, বাড়িতে ইডি—সিবিআই যাচ্ছে। বিজেপিতে গেলেই সৎ। যারাই প্রশ্ন তুলছে তাদেরই মিথ‌্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢোকাচ্ছে বিজেপি সরকার।’’

তৃণমূল বারবার যে দাবি করে আসছে যে বাংলাকে বদনামের চেষ্টা করা হচ্ছে। এদিন কানহাইয়াও বিজেপির দিকে আঙুল তুলে বলেন, “ন‌্যাশনাল মিডিয়ায় বাংলাকে বদনাম করা হচ্ছে।” পরিবারবাদ নিয়ে বিজেপিকে পালটা আক্রমণ করে তাঁর বক্তব‌্য, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁর ছেলে জয় শাহকে বিসিসিআইয়ের পদে বসিয়েছে। এটা কি পরিবারবাদ নয়? ক্রিকেটার হিসেবে সৌরভ গঙ্গোপাধ‌্যায়কে ওই পদে বসানো হলেও ঠিক ছিল।” একথা বলে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের জাতীয় পর্যবেক্ষকের মন্তব‌্য, ‘‘জয় শাহ তো গুলি ডান্ডাও খেলেননি।’’ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের লাইন মেনেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি তিনি। এখানেই শেষ নয়, ভাষণ শেষে ইনক্লাব জিন্দাবাদ—জয় ছাত্র পরিষদ—জয়হিন্দ স্লোগানের পাশাপাশি দিয়েছেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও। যেমনটা করে থাকেন মমতা-অভিষেক।

[আরও পড়ুন: দত্তপুকুর বিস্ফোরণ: ‘IC কি ঘুমোচ্ছিলেন?’, মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রশ্ন ‘ক্ষুব্ধ’ মুখ্যমন্ত্রীর]

সূত্রের খবর, ছাত্র পরিষদের একাংশের দাবি ছিল, কলকাতায় এসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বলতে হবে কানহাইয়াকে। সেসব শুনে বিরক্ত হন কানহাইয়া। আসবেন কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। শেষমেশ রবিবার রাতে তাঁকে কার্যত হাতেপায়ে ধরে রাজি করানো হয়েছিল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement