অর্ণব আইচ: ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ মামলা প্রত্যাহার ও তাঁকে নিঃশর্তে মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবারই পথে নেমেছিল হিন্দু সমাজ। বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের তরফে যে মিছিলেন আয়োজন করা হয়েছিল তা পৌঁছয় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস পর্যন্ত। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ইউনুস সরকার ভারত সরকারের কাছে আর্জি জানাল হাই কমিশন তথা দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।
এদিকে লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে লালবাজার। একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখবেন। থাকবেন দুজন ইন্সপেক্টরও। পাশাপাশি ৬ জন এএসআই এবং এসআই পদমর্যাদার অফিসারও থাকবেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
ঠিক কী হয়েছিল? চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তারির পর থেকেই উত্তাপের ঢেউয়ের রেশ আছড়ে পড়েছে এপার বাংলাতেও। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার শিয়ালদহে বঙ্গীয় হিন্দু জাগরণ মঞ্চের তরফে প্রতিবাদী মিছিল হয়। শিয়ালদহ থেকে বেকবাগানে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিস পর্যন্ত মিছিলে অংশ নেন বহু সাধারণ মানুষ। হাতে ধরা পোস্টারে গর্জন– ‘এক চিন্ময় কারাগারে, লক্ষ চিন্ময় ঘরে ঘরে’। কোনও পোস্টারে লেখা– ‘হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চাই’। এই ইস্যুতে আবার কেউ কেউ বাংলাদেশি বস্ত্র বর্জনের ডাকও দেন। এর পর হাই কমিশনের অফিসের সামনে পুলিশের বাধায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ধুন্ধুমার বাঁধে পুলিশের।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় তাতে জানানো হয়, এই বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের অফিসের সামনে যেভাবে প্রতিবাদ দেখানো হয়েছে তাতে তারা আতঙ্কিত। এই ধরনের প্রতিবাদের নিন্দা করার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার মোদি সরকারের কাছে আর্জি জানায় ভবিষ্যতে যাতে এমন পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার।
বলে রাখা ভালো, চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারি ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতিবাদ জোরাল হতেই ইসকনকে নিষিদ্ধের আবেদন জানায় ইউনুস সরকার। কিন্তু বৃহস্পতিবার আদালতে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এখনই ইসকনের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করবে না বলে সাফ জানায় হাই কোর্ট। তাতে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ ফিরলেও চরম আতঙ্কিত সেখানকার ভক্তরা। কলকাতা ইসকন কর্তৃপক্ষের তরফে এনিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস।