shono
Advertisement

Breaking News

Bangladesh Violence

বাঙালিয়ানাকেই হত্যার চেষ্টা বাংলাদেশে! ইসলামিক স্টেটের কায়দায় ছায়ানট ধ্বংসে কী বলছেন বিশিষ্টজনেরা

এই হামলা রবীন্দ্র-বিরোধিতারই প্রতিফলন।
Published By: Saurav NandiPosted: 05:19 PM Dec 19, 2025Updated: 06:47 PM Dec 19, 2025

রমেন দাস: ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুতে যে ভাবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানটে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হল, তা নিয়ে সরব বিশিষ্টজনেরা। তাঁদের মত, ভারত-বিদ্বেষের পালে হাওয়া দিতেই হামলা চালানো হয়েছে ছায়ানটে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, আসলে বাংলাদেশে বাঙালিয়ানাকেই শেষ করে দিতে চাইছেন হামলাকারীরা। এই হামলা রবীন্দ্র-বিরোধিতারই প্রতিফলন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই বাংলাদেশের নানা জায়গায় বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের আগ্রাসন থেকে রেহাই পায়নি সে দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট। রাতভর সেখানে তাণ্ডব ও লুটপাট চলেছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি-বই। ভেঙে ফেলা হয়েছে অসংখ্য বাদ্যযন্ত্রও। বিক্ষোভকারীরা ছিঁড়ে দিয়েছেন ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত সন্‌জীদা খাতুনের ছবিও। লালনের ছবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, " ছায়ানট বাংলাদেশের গৌরবের প্রতিষ্ঠান। সেখানকার নববর্ষ উৎসব আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতিও পেয়েছে। ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে। তাছাড়া রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মেলনও চালু হয়েছিল ছায়ানটে। সেখান থেকেও প্রচুর শিল্পী উঠে এসেছিলেন বাংলাদেশে। ফলে এই হামলার নেপথ্যে প্রচ্ছন্ন রবীন্দ্র বিরোধ থাকতেই পারে। এখন বাংলাদেশে মৌলবাদীদের যে মেজাজ দেখা যাচ্ছে, তাতে তো এটাই হবে। কারণ রবীন্দ্রনাথ তো ওদের শত্রু।"

লেখক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, আসলে বাংলাদেশে বাঙালিয়ানাকেই হত্যার চেষ্টা চলছে। যদিও তা সম্ভব নয় বলেই মনে করেন তিনি। শীর্ষেন্দুবাবু বলেন, "বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই তো বাঙালি। পাকিস্তানপ্রেমীরা এই চেষ্টা করতেই পারে। কিন্তু সেটা সফল হবে না। আসলে কারা এটা করছে, বলা মুশকিল। এখন তো অরাজকতা চলছে। নির্বাচিত কোনও সরকার নেই। ওখানে অনেক ধরনের মতবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। তার মধ্যে উগ্রবাদও আছে। সব মিলিয়ে একটা আত্মনাশের আয়োজন চলছে। এতে বাংলাদেশেরই ক্ষতি হবে। সংস্কৃতিকে ধ্বংস করলে একটা জাতির থাকে কী? দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।"

পবিত্রবাবুর মত, যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক। হাদির খুনে যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁদের শাস্তির দাবিটুকুই জানাতে পারতেন বাংলাদেশের জনতা। কিন্তু তা না করে যে ভাবে অবাধে লুটপাট, ভাঙচুর চলছে, তা ধিক্কারযোগ্য। শান্তিযোগ্য অপরাধ। তাঁর কথায়, "ওসমান হাদি নিশ্চয়ই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। তাঁকে খুনে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিই করা উচিত জনতার। পরিবর্তে জনতা হিংস্রতার বশবর্তী হয়ে ছায়ানটের মতো প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করছে। এটায় বাংলাদেশের ক্ষতিই হচ্ছে। আর সংবাদমাধ্যমের কী দোষ? সাংবাদিকদের উপর হামলা হচ্ছে। হামলা হচ্ছে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের উপরেও। এতে মুসলিম ধর্ম সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সৌদি আরবের মতো জায়গাতেও গান শেখানোর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানে সঙ্গীত-বিরোধী, সংস্কৃতি-বিরোধী অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশের এই জনতা।" বর্তমান পরিস্থিতিকে সিরিয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন পবিত্রবাবু। তাঁর মত, ইসলামিক স্টেট বা আইএস যে ভাবে সিরিয়ার সংস্কৃতির গণহত্যা করেছিল, বাংলাদেশেও ঠিক তা-ই হচ্ছে। তিনি বলেন, "শিক্ষাক্ষেত্রটাকেও লন্ডভন্ড করে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকেরা ভয় পাচ্ছেন। এর পিছনে কারা আছে, আমি জানি না। তবে রাষ্ট্রের যে উদাসীনতা রয়েছে, তা দেখতে পাচ্ছি। এটা মর্মান্তিক।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির মৃত্যুতে যে ভাবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানটে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হল, তা নিয়ে সরব বিশিষ্টজনেরা।
  • তাঁদের মত, ভারত-বিদ্বেষের পালে হাওয়া দিতেই হামলা চালানো হয়েছে ছায়ানটে।
  • আরও নির্দিষ্ট করে বললে, আসলে বাংলাদেশে বাঙালিয়ানাকেই শেষ করে দিতে চাইছেন হামলাকারীরা।
Advertisement