রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দিলীপ ঘোষের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু চরিত্রের প্রশংসা! বঙ্গ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি নিয়োগের আগে দিলীপবাবুর (Dilip Ghosh) মমতার (Mamata Banerjee) প্রশস্তি ঘিরে জল্পনা চলছে। কেন না রাজ্যে দল পরিচালনায় রাজ্য সভাপতি হিসাবে কী ধরনের নেতা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে দিলীপবাবু মুখ্যমন্ত্রীর লড়াইয়ের দৃষ্টান্তের উল্লেখ করেছেন। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখুন। উনি আন্দোলন করে সরকার বদলে দিয়েছেন। এত বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও উনি মাঠে নেমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিরোধী নেত্রীর মতো।’’

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি দিলীপবাবু বলতে চাইছেন, বর্তমানে বিজেপিতে জঙ্গি আন্দোলন বা লড়াই করার মতো কেউ নেই! বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পারফরম্যান্স নিয়েই কি প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। দিলীপবাবু বোঝাতে চেয়েছেন, রাজ্য সভাপতি পদের জন্য বিরাট শিক্ষিত, বড় ডিগ্রিধারী নন, মাঠে-ময়দানে লড়াই করতে পারেন, এমন কাউকে চাই। সুকান্তকে নিয়ে দিলীপবাবুর বক্তব্য, উনি একজন শিক্ষিত, মার্জিত ব্যক্তি। শিক্ষিত বাঙালির কথা ভেবে তাঁকে নেতা করা হয়েছিল। তবে আমি মনে করি, নেতা বাছাই করা দরকার পরিবর্তনের কথা ভেবে। তাহলে কি সুকান্তর সভাপতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে? প্রাক্তন সাংসদের বক্তব্য, ‘‘দলীয় সংবিধান অনুযায়ী সুকান্তবাবু আরও একবার রাজ্য সভাপতি থাকতে পারেন। আর একা রাজ্য সভাপতি তো সব করে দিতে পারেন না। আমাদের দলে বহু যোগ্য মানুষ আছেন।’’
প্রসঙ্গত, একজন লড়াকু নেতা বা নেত্রীকে যেভাবে মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে ভোট দেন, সেরকমই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ভোট দিচ্ছেন রাজ্যবাসী। উচ্চশিক্ষিত রাজ্য সভাপতি হওয়াটা কোনও বিষয় নয় বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী, তথাগত রায়েরা উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। কিন্তু বিজেপির ভোট তখন চার শতাংশের বেশি ওঠেনি। এদিকে, রামনবমীতে খড়গপুরে মিছিলে অস্ত্র হাতে থাকবেন বলে জানিয়েছেন দিলীপবাবু। বলেছেন, অস্ত্র নিয়ে বেরব। এটা আমাদের ট্র্যাডিশন। ব্রিটিশ আটকাতে পারেনি, পাঠান আটকাতে পারেনি। এরা চেষ্টা করলে এদের ছুঁড়ে ফেলা হবে। যুবরা লাঠি নিয়ে রাস্তায় বেরবে, মিছিল আটকালে থানা ঘেরাও হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দিলীপবাবুর (Dilip Ghosh) একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপিতে। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি পার্টির সঙ্গে আছি। আমার সাথে কারও ঝগড়া নেই, আমি কারও সাথে ঝগড়া করি না, আমার সবার সাথে বন্ধুত্ব আছে এবং বন্ধুত্ব রাখার চেষ্টা করি।’ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতির দৌড়ে নাম থাকা দিলীপবাবুর এই পোস্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আবার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলকে নিয়ে একটি পোস্টার পড়েছে শহরে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘২০২৬ সালে বাংলার মুখ্য চরিত্রে অগ্নিমিত্রাকে চাই’। কিন্তু আসানসোল দক্ষিণের বিধায়কের নামে কেষ্টপুরে কেন পোস্টার টাঙানো হল, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।